মঞ্চ ভরে রয়েছে আবর্জনায়। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।
শেষ কাজ হয়েছে ১৫ বছর আগে। তার পরে এক ইঞ্চিও এগোয়নি কলকাতা পুরসভার সিআইটি রোডের প্রস্তাবিত মঞ্চ নির্মাণের কাজ।
নির্মিত বাড়ির ভিতরে ঢুকলে চোখে পড়বে চামড়ার স্তূপ। চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে আবর্জনা। তার মধ্যেই একতলা জুড়ে চলছে জুতো তৈরির কাজ। দোতলা, তিনতলায় রয়েছে দোকান ঘর। একতলার একাংশে কয়েক জন ব্যবসায়ীকে দোকান ভাড়া দিয়েছে পুরসভা। বাকিটা বেদখল হয়েছে বলে অভিযোগ পুর-কর্তৃপক্ষের।
এর মধ্যে চামড়ার স্তূপ দু’একবার আগুনও লেগেছে। জুতো ব্যবসায়ীদের একাংশের ‘জবরদখল’ এবং অর্থের অভাবে প্রকল্প আটকে গিয়েছে বলে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি।
পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, অনেক বারই দখলদারি সরাতে উদ্যোগী হয়েছিল পুরসভা। সাময়িক ভাবে সমস্যা মিটলেও কয়েক দিন পরে যে-কে-সেই। অন্য দিকে, হকারদের একাংশের দাবি, এই বাড়ির একটি অংশ সংস্কার করে বাণিজ্যিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হোক। তাঁরা সেখানে দোকান কিনে নেবেন।
প্রায় বছর কুড়ি আগে পুরসভার জমিতেই বিদ্যাসাগরের নামে একটি মঞ্চ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পুরসভা এবং বেসরকারি সংস্থা যৌথ ভাবে কাজ করবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই মতো পাঁচ তলার ভবন তৈরির কাজও শুরু হয়েছিল। ২০০০ সালের মধ্যে মঞ্চ এবং ভবনের অনেকটা কাজ হয়ে গিয়েছে। তার পরে ভবনটি পড়ে থাকায় পুরসভারই ক্ষতি হচ্ছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়িটি পুরসভার। এখানে একটি জুতোর বাজার বসে। বর্তমানে, ওই বাজারটির কী অবস্থা তা আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’
স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের অরুণকুমার দাস বলেন, ‘‘বাড়িটি পড়ে রয়েছে। গত পুরবোর্ডের আমলে পুরসভার বাজার দফতর এই বাড়ি কলকাতা পুলিশকে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছিল। পুর-নির্বাচন এসে যাওয়ায় কাজ এগোয়নি।’’
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভার প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট দফতর প্রায় দু’কোটি টাকা খরচ করে সিআইটি রোডে বিরসুলহাট জুতো বাজারে পুরসভার জমিতেই এই মঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ওই জমিতে তখন প্রায় ৯০০ জন জুতো ব্যবসায়ী ব্যবসা করতেন। তাঁদের স্থানান্তরিত করার জন্য সি আই টি রোড এবং উল্টোডাঙার কাছে দু’টি জমিও দেখানো হয়েছিল। কিন্তু ওই জায়গা ছেড়ে তাঁরা যেতে চাননি বলে পুরসভার দাবি। এর পরে পুরসভা ওই ব্যবসায়ীদের ২০ জনকে দোকান ভাড়া দেয়। বাকিরা ওই বাড়ির সামনে রাস্তা এবং ফুটপাথেই জুতোর ব্যবসা শুরু করেন। পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, এই বাড়ির পেছনের অংশে দু’টি তল পুরসভার কাছ থেকে এক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা কিনেছিল।
বিরসুলহাট লেদার্স হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি দিবাকর ভট্টাচার্য বলেন, “যাঁরা ব্যবসা করছেন তাঁদের পুনর্বাসন প্রয়োজন। বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত মঞ্চ সংস্কারের পক্ষে আমরা। এছাড়া ওই বাড়ির একাংশে বাণিজ্য কেন্দ্র করার দাবি জানিয়েছি। স্থানীয় হকাররা অর্থ দিয়ে স্টল কিনবেন। মেয়রকে বিষয়টি জানিয়েছি। কাজ না হলে বড় মাপের আন্দোলনে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy