Advertisement
০৩ মে ২০২৪

বহু উড়ালপুলের নীচে এখনও রয়ে গিয়েছে দোকান

উড়ালপুল বা সেতুর তলায় কোনও দোকান বা বসতি থাকবে না, এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও সেই নির্দেশ এখনও অনেক জায়গায় কার্যকর হয়নি।

বিপজ্জনক: বারাসত উড়ালপুলের নীচে দোকানের সারি। ছবি: সুদীপ ঘোষ

বিপজ্জনক: বারাসত উড়ালপুলের নীচে দোকানের সারি। ছবি: সুদীপ ঘোষ

সোমনাথ চক্রবর্তী ও অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০২:০১
Share: Save:

উড়ালপুল বা সেতুর তলায় কোনও দোকান বা বসতি থাকবে না, এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও সেই নির্দেশ এখনও অনেক জায়গায় কার্যকর হয়নি।

পোস্তা উড়ালপুল এবং মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় বহু প্রাণহানি হয়েছিল। এর পরে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে প্রশাসনিক সভায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেতুর তলা ফাঁকা রাখতে হবে, দখলদারি চলবে না। কিন্তু টনক নড়েনি প্রশাসনের। শিয়ালদহ, মধ্যমগ্রাম, বারাসত, চিংড়িঘাটা উড়ালপুল-সহ একাধিক উড়ালপুলের তলায় অবাধে রয়েছে দোকান কিংবা বসবাসের ঝুপড়ি। এর জেরে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করতে ইঞ্জিনিয়ারদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। সেতুর স্বাস্থ্য কেমন রয়েছে, সেই নজরদারিও করা যাচ্ছে না।

শিয়ালদহে গিয়ে দেখা গেল, আগের অবস্থাতেই রয়েছে উড়ালপুলটি। দু’পাশে সার দিয়ে দোকান, তার সামনে বসে থাকা হকারদের ঠেলে কার্যত যাতায়াতের উপায়ই নেই। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও হকার সরানো হয়নি। উড়ালপুলের মেরামতি তো দূরের কথা। একই অবস্থা উল্টোডাঙার কাছে অরবিন্দ সেতুর কিংবা মধ্যমগ্রাম সেতুর।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

হকার সরিয়ে সেতু সারাইয়ের ব্যাপারে পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, হকার সরানো নীতিগত ব্যাপার। সেখানে ইঞ্জিনিয়ারদের কার্যত কিছু করার নেই। সরকার চাইলে তবেই হকার সরিয়ে মেরামতি সম্ভব। বারাসত পুরসভা কিছু হকার সরিয়েছিল, তাই সেখানে আংশিক মেরামতির কাজ করা গিয়েছিল।

এখন কী অবস্থা বারাসতে?

১২ নম্বর রেলগেটের উপর দিয়ে যাওয়া বারাসত উড়ালপুলটি ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের (যশোর রোড) চাঁপাডালি মোড়ের সঙ্গে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের (কৃষ্ণনগর রোড) কলোনি মোড়কে যুক্ত করেছে। মাঝেরহাট-কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো পূর্ত দফতরের কর্তাদের নিয়ে ওই উড়ালপুলের হাল দেখতে যান বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়। দেখা যায়, হকারদের ছাউনি আর মালপত্রে ঢাকা পড়ে গিয়েছে সেতুর দেওয়াল, গার্ডার। তখন উড়ালপুলের নীচ থেকে হকারদের দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

তখন কিছুটা কাজ হলেও ফের আগের চেহারায় ফিরে গিয়েছে উড়ালপুলের নীচের অংশ। চাঁপাডালি মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত এখন প্রায় ২২০টি এবং রেলগেটের অপর প্রান্ত থেকে কলোনি মোড় পর্যন্ত প্রায় ২০০টি দোকান রয়েছে। গোটা রাস্তা জুড়েই বসেন হকারেরা। ঠাসাঠাসির জন্য যাতায়াত করাই দুষ্কর।

কেন হকার সরানো হয়নি, প্রশ্ন করলে সুনীলবাবু সোমবার বলেন, ‘‘হকারদের পুনর্বাসনের জন্য সেতুর নীচে যে দোকান তৈরি হয়েছিল, সেগুলি বিলি করা হয়নি। পূর্ত দফতর বললেই সব দোকান ভেঙে সেতুর তলা সাফ করে দেওয়া হবে।’’ এ ব্যাপারে উত্তর ২৪ পরগনার পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক স্তরে নিতে হবে। পুনর্বাসন না দিয়ে হকার তুলতে গেলেই গোলমাল হবে।’’ পুনর্বাসনের প্রশ্নে পুরসভার অবশ্য বক্তব্য, বারাসত শহরের মধ্যে হকার বসানোর কোনও জায়গা নেই। পুনর্বাসনের ব্যাপারে পরে

ভাবনাচিন্তা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flyovers Kolkata Police Hawkers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE