ভোগান্তি: হাওড়া স্টেশন চত্বরে বাসের অপেক্ষা। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশের দিনে কলকাতা এবং শহরতলির বিভিন্ন রুট কার্যত বাসশূন্য রইল। দেখা মিলল না হলুদ ট্যাক্সির। এমনকি, অটো কিংবা অ্যাপ-ক্যাবের পরিষেবাও হতাশ করল শহরবাসীকে।
বেসরকারি বাস, মিনিবাস না চলার পাশাপাশি সরকারি বাসের সংখ্যাও এ দিন ছিল হাতে গোনা। রাজ্য পরিবহণ নিগমের কম-বেশি আড়াইশো বাস এ দিন সমাবেশের কাজে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।
ব্রিগেডের কারণে বাসের অভাবে যাত্রীদের হেনস্থার ভয়াবহ ছবি দেখা যায় হাওড়া স্টেশনে। কার্যত সকাল থেকেই হাওড়া স্টেশন চত্বরে এ দিন বাসের দেখা মেলেনি। তার জেরে ট্রেনে করে হাওড়ায় এসে নামা কলকাতামুখী লোকজনের ভিড় জমে যায় হাওড়া স্টেশন এবং স্টেশন চত্বরে। শনিবার হওয়ায় অনেক জায়গাতেই এ দিন অফিস খোলা ছিল। যাত্রীদের অভিযোগ, তাঁদের কারও হাসপাতাল যাওয়ার ছিল। কারও সময়ে অফিস পৌঁছনোর তাড়া ছিল। কিন্তু বাসের অভাবে তাঁরা বাধ্য হন স্টেশন চত্বরে থমকে যেতে। বাস না পেয়ে হাওড়া থেকে কলকাতায় পৌঁছতে শেষে লঞ্চে গঙ্গা পারাপার শুরু করেন যাত্রীরা। বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের ভিড় এক সময় লঞ্চের উপরে গিয়ে পড়ে। জলপথে নিরাপত্তার কারণে তখন পুলিশ বাধ্য হয় ফেরি পরিষেবাও বন্ধ রাখতে।
বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজায় বাসে বাদুড়ঝোলা ভিড়। ছবি: রণজিৎ নন্দী
বাসকর্মীদের দাবি, সকালের দিকে হাওড়া থেকে কিছু এসি বাস চলেছিল। তবে তাঁরা স্বীকার করেন, শুধু হাওড়াই নয়, বেলা ১১টার পর থেকে তৃণমূল সমর্থকদের মিছিলে রাস্তা প্রায় সর্বত্রই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে বহু রুটেই আর বাস চালানো সম্ভব হয়নি। তবে ই এম বাইপাস, বিমানবন্দর এবং সেক্টর ফাইভ কেন্দ্রিক কয়েকটি বাস রুটে এ দিন অল্প সংখ্যক সরকারি বাস চলেছে।
বেসরকারি বাসমালিক সংগঠন সূত্রের খবর কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি মিলিয়ে হাজার চারেক বাস-মিনিবাস বিভিন্ন রুট থেকে তুলে নেওয়া হয়। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস্-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাস তুলে নেওয়ার বাসকর্মীর অভাবে আর বাকি বাস নামানো যায়নি।’’
সন্ধ্যার পরে দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি রুটে মিনিবাস চলাচল শুরু হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির সহ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘হাজারখানেক মিনিবাস নেওয়া হয়েছিল।’’
বাসের অভাবে এ দিন যাত্রীদের বড় অংশকেই অ্যাপ-ক্যাব এবং অটোর উপরে নির্ভর করতে হয়। তবে তাতে বিশেষ সুবিধা হয়নি। অন্যান্য দিনের তুলনায় এ দিন অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়া ছিল প্রায় তিনগুণ বেশি। তা ছাড়া অনেক জায়গাতেই রাস্তায় আটকে যাওয়ার ভয়ে ক্যাব চালকেরা অ্যাপ বন্ধ করে দেন। তাতে সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। পাটুলির বাসিন্দা সুরভি চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘অন্যান্য দিন পাটুলি থেকে সেক্টর ফাইভ ভাড়া লাগে ৩০০ টাকা। এ দিন ৪৮০ টাকা ভাড়া দিয়েছি।’’ অ্যাপ-ক্যাব চালকদের একাংশ জানান, রাস্তা বন্ধ থাকায় অনেকটা ঘুরে যাত্রী তুলতে গিয়ে এ দিন তাঁদেরও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্যাব চালকদের অনেকে সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। তবে, সমাবেশের জেরে যানজট থাকায় অনেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে অ্যাপ বন্ধ রেখেছিলেন। তাতে পরিস্থিতি খানিকটা জটিল হয়েছে।’’
অটোর ক্ষেত্রেও কার্যত তেমনই পরিস্থিতি ছিল। রুটে অটোর সংখ্যাও ছিল যথেষ্ট কম। কারণ অটো রেখে চালকদের সিংহভাগই সমাবেশে যান।
আইএনটিটিইউসি-র অটো ইউনিয়নের দক্ষিণ কলকাতার সাধারণ সম্পাদক গোপাল সুতার বলেন, ‘‘অটো চালকেরা সব রুট থেকেই সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তবে কোথাও রুট বন্ধ হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy