Advertisement
E-Paper

পথে রাখা যাবে না নির্মাণদ্রব্য, দুর্ঘটনার পরে হুঁশ পুরমন্ত্রীর

চৈতন্য হল প্রাণের বিনিময়ে। সৌন্দর্যায়নের কাজের জন্য রাস্তা জুড়ে রাখা বালিতে চাকা পিছলে পড়ে গিয়ে বাসে পিষ্ট হয়ে এক মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যুর পরে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন, রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য মজুত করে রাখা যাবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৪ ০০:২৫

চৈতন্য হল প্রাণের বিনিময়ে।

সৌন্দর্যায়নের কাজের জন্য রাস্তা জুড়ে রাখা বালিতে চাকা পিছলে পড়ে গিয়ে বাসে পিষ্ট হয়ে এক মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যুর পরে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন, রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য মজুত করে রাখা যাবে না।

রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়েতে নিকো পার্ক মোড় থেকে ডান দিকে সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের এসডিএফ বিল্ডিংমুখী রাস্তার মাঝখানে বুলেভার্ড সংস্কারের কাজ চলছে। সে কারণে রাস্তার অনেকটা জুড়েই মজুত করা হয়েছে বালি। পুলিশ জানায়, বুধবার দুপুরে সেই পথে ছড়িয়ে থাকা বালি এড়াতে গিয়ে মোটরবাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। ছিটকে পড়ে পিছন থেকে তীব্র গতিতে আসা একটি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মোটরবাইকের পিছনের আসনে বসা এক তরুণীকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত প্রদীপ মাইতির বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে। আহত তরুণীর নাম রিম্পা বাগল। তিনি কলকাতার বাসিন্দা। বাসটির এখনও সন্ধান মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বালিতে পিছলে পড়েই ওই দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, সেক্টর ফাইভের ওই ব্যস্ত রাস্তার উপরে এ ভাবে বালি ছড়িয়ে থাকা বিপজ্জনক জেনেও কেন এ ভাবে তা মজুত করা হল? যার জেরে প্রাণ গেল ওই তরুণের। দুর্ঘটনার পরে বালি মজুত রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই টনক নড়ে প্রশাসনের। নবদিগন্তের আধিকারিকদের একটি দল এ দিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তবে নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ অবশ্য বালির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটার কথা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, সংস্কারের কাজ চলছিল ঘটনাস্থলের কাছে। এবং তাঁদের কর্মীরা জানিয়েছেন, মজুত করা বালির কাছে পৌঁছনোর অনেক আগেই বাসটি ওই মোটরবাইকে ধাক্কা মেরেছে। এর পাশাপাশি অবশ্য ভবিষ্যতে আর রাস্তার ধারে বালি বা ইমারতি দ্রব্য মজুত করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ।

নবদিগন্তের এক কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা পাঁচ নম্বর সেক্টরে রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য মজুত করতে দেন না। যে দিন প্রয়োজন, সে দিন গাড়ি থেকে বালি নামিয়ে সরিয়ে ফেলা হয়। এ দিনও বালি এক জায়গায় জড়ো করে পর্যায়ক্রমে সরানোর কাজ চলছিল। যদিও স্থানীয় দোকানদার থেকে নিত্যযাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, গত বেশ কয়েক দিন ধরেই দুর্ঘটনাস্থলে বালি মজুত করা ছিল।

এ দিন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মোটরবাইকটি মোটামুটি জোরেই যাচ্ছিল। প্রদীপের মাথায় হেলমেটও ছিল। তবে বাইকের পিছনে বসে থাকা রিম্পার মাথায় অবশ্য হেলমেট ছিল না। স্বাস্থ্য ভবনের পরে একটি বাস স্টপের কাছে রাস্তা জুড়ে বালি মজুত করা ছিল। সেই বালি কাটাতে গিয়ে মোটরবাইকের গতি কমান প্রদীপ। তখনই পিছলে গিয়ে মোটরবাইক থেকে পড়ে যান দু’জনেই। সে সময়ে পিছন থেকে তীব্র গতিতে আসছিল বাসটি। প্রদীপের উপর দিয়ে চলে যায় বাসের চাকা। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর দেহ। বাসের চাকার ধাক্কায় গুরুতর জখম হন রিম্পাও। ডান পায়ে আঘাত-সহ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে।

তবে স্রেফ পাঁচ নম্বর সেক্টরই নয়, সল্টলেক রাজারহাট-নিউটাউন, লেকটাউন-সহ পূর্ব কলকাতার বিভিন্ন রাস্তার ধারে বালি, পাথরকুচির মতো রকমারি ইমারতি দ্রব্য মজুত করা থাকে। এর আগে নিকো পার্কের কাছেও রাস্তায় পড়ে থাকা পাথরকুচির কারণে দুর্ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছিলেন।

এ প্রসঙ্গে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রাস্তার ধারে কোনও ভাবেই ইমারতি দ্রব্য মজুত রাখা যাবে না। এই কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। যে সব জায়গায় এখনও ইমারতি দ্রব্য মজুত রয়েছে, অবিলম্বে তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিচ্ছি।”

sand rajarhat expressway accident death pradip maity firhad hakim kolkata news latest news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy