মাটি পরীক্ষা পরিদর্শকদের। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
দৃশ্য ১: বাঁশের সাঁকো রয়েছে। আবার তার চারপাশে মাটি দিয়ে সমতলও করা রয়েছে।
দৃশ্য ২: পূর্ত দফতরের জায়গা। অথচ তাতে সদ্য ঘাসের চাদর বসিয়ে চার দিকে দড়ি দিয়ে কে বা কারা ঘিরে রেখেছে। ঘাস তুলতেই নজরে এল ভেজা মাটি।
ভিআইপি রোডের ধারে জলাশয় ভরাটের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালে (ইস্ট জোন) মামলা চলছে। ওই সব জায়গায় সত্যিই জলাশয় ভরাট হয়েছে কি না, বৃহস্পতিবার তা দেখতে যান ট্রাইব্যুনাল নিযুক্ত কমিশনার-আইনজীবী অনির্বাণ দে।
উল্টোডাঙার দিক থেকে বিমানবন্দর যাওয়ার পথে গোলাঘাটা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত সার্ভিস রোডের পাশ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণের কাজ চলছে। জলাশয়ের আকারে কাটা ‘বিগ পিট’ (পূর্ত দফতরের ভাষায়)-এর ভিতরে কোথাও জমে রয়েছে মাটির স্তূপ। গোলাঘাটার সামনেই ওই দৃশ্য চোখে পড়েছে। কিছু দূর এগোতেই একটি প্লটের উপরে তিনটি নদীর নামে তিনটি পুরনো বহুতল। সব চেয়ে পুরনো বহুতলটি দেখে অনির্বাণবাবু সন্দেহ প্রকাশ করেন মামলাকারী দ্বৈপায়ন সেনগুপ্তের আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ীর কাছে। তাঁদের অনুমান, সংশ্লিষ্ট বহুতলটির পিছনের দিকেই জলাশয় ছিল। সেটি ভরাট করে পিছনের অংশেই ভিআইপি রোড-মুখী প্রবেশপথ তৈরি করা হয়েছে।
এ দিন অনির্বাণবাবুর সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণ দমদম পুরসভা, পূর্ত দফতরের বারাসত হাইওয়ে ডিভিশন (২)-এর প্রতিনিধিরা ও লেকটাউন থানার পুলিশ। কী কী দেখে এলেন তাঁরা?
গোলাঘাটা ফুটব্রিজের কাছে পৌঁছে দেখা গেল, সার্ভিস রোডের ধারে মাটি, বালি, পাথর আর সিমেন্ট ফেলা। নির্মাণের কাজ চলছে। তবে কর্মরত শ্রমিকেরা মুখ খোলেননি। সেখানেই একটি আবাসনের সঙ্গে সার্ভিস রোডের সংযোগকারী রাস্তার নীচে দেখা গেল, উঁকি মারছে সেই বাঁশের সাঁকো। উপস্থিত স্থানীয় মানুষ জানান, এক সময়ে সেখানে নয়ানজুলি ছিল। সেই জায়গাটি থেকে সোজাসুজি তাকালে যত দূর চোখ যায়, তত দূর পর্যন্তই নজরে এল ভেজা মাটি। কোথাও কোথাও আবার সেগুলির উপরে সদ্য বসানো ঘাসের চার দিকে দড়ি দিয়ে ঘেরা। লাগোয়া শপিং মল, একটি বহুতল এবং একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের প্রবেশপথ ঘাসের চাদর তুলতেই চোখে পড়ে তলায় একেবারে ভেজা মাটি। এক জায়গায় ঘাসের চাদর ডাঁই হয়ে পড়ে থাকতেও দেখা যায়।
ওই সব জায়গায় যে জলা ছিল, এ দিন অনির্বাণবাবুকে ঘিরে ধরে তা জানিয়েছেন শ্রীভূমি এলাকার লোকজনই। চিৎকার করে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁরা বলেছেন, ‘‘আমাদের এই জায়গা জলা ছিল। সেখানে মশা হতো। ডেঙ্গি রোগের প্রকোপ ছিল। যাতায়াতের জন্য সোজা পথে রাস্তা ছিল না। সৌন্দর্যায়নের কাজে আমাদের মঙ্গল হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, বুধবার বিধানসভায় পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, ওই এলাকায় জলাভূমি ভরাট হয়নি। সৌন্দর্যায়নের কাজ হচ্ছে। এ দিন শ্রীভূমির বাসিন্দাদের কথা শোনার পরে মামলাকারীদের তরফে অনিন্দ্যবাবুর প্রশ্ন, ‘‘শ্রীভূমির বাসিন্দারাই বললেন জলা জায়গা ছিল। পূর্ত দফতর সৌন্দর্যায়ন করুক। কিন্তু তা জলাশয় বুজিয়ে কেন? আর যদি তা-ও হয়, তবে পূর্ত দফতর বিকল্প জলাশয় কোথায় তৈরি করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy