হেঁইয়ো: জমা জল ঠেলেই এগোচ্ছে গাড়ি। মঙ্গলবার, যতীন দাস রোডে। ছবি: সুমন বল্লভ
ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টি, তাতেই বেহাল শহর। কোথাও গাছ পড়ে, কোথাও বা রাস্তায় জল জমে অবরুদ্ধ পথ। ফলে অফিসফেরত জনতার ভোগান্তিও অব্যাহত। শহরে সবে ঢুকেছে বর্ষা। তাতেই এমন ছবিতে আতঙ্কিত মানুষ। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে বছর কয়েক ধরে তৈরি হওয়া নিকাশির প্রকল্পগুলো কি তবে নামেই? প্রশ্ন শহরবাসীর। যদিও মেয়র পারিষদের দাবি, শহরের কোথাও জল জমেনি।
জলমগ্ন বেহালায় দাঁড়িয়ে এক পুরকর্তাও মানছেন, পরিস্থিতি ভাল নয়। মঙ্গলবার বিকেলে তখন বৃষ্টি কিছুটা ধরেছে। তত ক্ষণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-সহ একাধিক এলাকা জলমগ্ন। বেহালার শীলপাড়ায় দাঁড়িয়ে ওই পুরকর্তা বলছিলেন, ‘‘প্রতি বছরই জল জমে বেহালায়। এ বারও জমেছে। তবে এ বছর ভোগান্তিটা বেশিই হচ্ছে। কারণ নিকাশির কাজে রাস্তা কাটা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (কেইআইআইপি) অধীনে বেহালা, জোকা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় নিকাশির পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। যদিও এ কাজের ফলাফল চলতি বর্ষায় পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই বেহালায় এ দিনের ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ফিরে এসেছে চেনা ছবি। শনিবার উত্তর কলকাতায় আধ ঘণ্টায় ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিতে একাধিক রাস্তা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছিল। এ দিন উল্টোডাঙা এলাকায় এক ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৪৪.২০ মিমি। যার জেরে উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছিতে জল দাঁড়িয়ে যায়। পুরসভার তথ্য বলছে, এ দিন বেশি বৃষ্টি হয়েছে বালিগঞ্জে, ৮৪ মিমি। পামারবাজারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬২ মিমি, পাটুলিতে ৪৬.২৩ মিমি, জোকায় ৫৮.১৭ মিমি, ইএম বাইপাসে ৫২.৩২ মিমি, ধাপায় ৭৪ মিমি।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিনের বৃষ্টিতে বেশি সমস্যা হয় শিয়ালদহ কোর্ট সংলগ্ন বেলেঘাটা মেন রোডে। ওই রাস্তায় একের পর এক গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পথে নামে ট্র্যাফিক পুলিশ। প্রবল বৃষ্টিতে একাধিক জায়গায় গাছ পড়ে। এর জেরে বন্ধ হয় ডাফরিন রোড। একটি লেন বন্ধ করে গাড়ি চলাচল করানো হয়। পরে সন্ধ্যায় খুলে দেওয়া হয় দু’দিক। যানজট হয়েছে আমহার্স্ট স্ট্রিট, মহাত্মা গাঁধী রোড, শরৎ বসু রোড, ইএম বাইপাস, মৌলালি সংলগ্ন এজেসি বসু রোডেও। এজেসি বসু উড়ালপুল ও মা উড়ালপুলে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এ দিন নাজেহাল হতে হয় ট্র্যাফিক পুলিশকে।
যদিও মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহের দাবি, ‘‘দু-একটি জায়গা ছাড়া শহরের কোথাও জল জমেনি। এমনকি, যে সব জায়গায় আগে জল জমত, সেখানেও জমেনি।’’ মুখে এই দাবি করলেও পুরসভার কন্ট্রোল রুমে পুর কমিশনার খলিল আহমেদ, পুর আধিকারিকদের সঙ্গে এ দিন তিনিও হাজির ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy