Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ছাত্র-মৃত্যুর তদন্তে ভিসেরা পরীক্ষা

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া রাজন্যের বংশগত কোনও রোগ ছিল কি না, তা জানতে এ বার ‘হিস্টো প্যাথোলজি’-র সাহায্য নিচ্ছে পুলিশ। কারণ, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মৃত্যুর কারণ জানতে পারেননি তদন্তকরীরা। কোনও প্রতক্ষ্যদর্শীরও খোঁজ পাননি তাঁরা। তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল তা জানতে রাজন্যের কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গেও তাঁরা এ বার কথা বলতে পারেন।

স্কুলের সামনে এক শিক্ষিকার সঙ্গে রাজন্যের মা রুচিরাদেবী। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলের সামনে এক শিক্ষিকার সঙ্গে রাজন্যের মা রুচিরাদেবী। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০১:৫১
Share: Save:

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া রাজন্যের বংশগত কোনও রোগ ছিল কি না, তা জানতে এ বার ‘হিস্টো প্যাথোলজি’-র সাহায্য নিচ্ছে পুলিশ। কারণ, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মৃত্যুর কারণ জানতে পারেননি তদন্তকরীরা। কোনও প্রতক্ষ্যদর্শীরও খোঁজ পাননি তাঁরা। তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল তা জানতে রাজন্যের কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গেও তাঁরা এ বার কথা বলতে পারেন।

বিশেষজ্ঞেরা জানান, মৃতদেহের ময়না-তদন্তের সময়ে ভিসেরা সংগ্রহ করে রাখা হয়। সেই ভিসেরার অংশ নিয়েই হিস্টো প্যাথোলজি পরীক্ষা করা হয়। এর ফলে মৃত ব্যক্তির কোনও বংশগত রোগ ছিল কি না, তা ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃতদেহের ময়না-তদন্ত হলে এই পরীক্ষা করতে কোনও অসুবিধা নেই।

মঙ্গলবার দুপুরে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের পক্ষ থেকে রাজন্যের স্মৃতিতে একটি স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মী, কর্তৃপক্ষ এবং কয়েক জন প্রাক্তনী। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল রাজন্যের বাবা, মাকেও। তবে আমন্ত্রণ পেয়ে স্কুলের সামনে গেলেও ভিতরে ঢোকেননি তাঁরা। রাজন্যের বাবা রাজা সরকার বলেন, “কোনও স্মরণসভার দরকার নেই। আমার ছেলেকে যাঁরা খুন করেছে, আগে তাঁদের শাস্তি দিন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমি এখনও কোনও পারলৌকিক কাজ করিনি। দোষীদের শাস্তি হলেই আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে।”

স্কুলে রাজন্যের স্মরণসভা।

রাজাবাবুর অভিযোগ, স্কুলের তরফ থেকে বিনয় সুরেকা নামে এক ব্যক্তি রাজন্যের মৃত্যুর ব্যাপারটি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁকে ডেকেছিলেন। রাজন্যের মৃত্যুর দিনেও শ্মশানে গিয়ে এই ধরনের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ দিন স্কুলের গেটের সামনে এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান তিনি। সঙ্গে ছিলেন রাজন্যের মা রুচিরাদেবী এবং পারিবারিক বন্ধুরা। তাঁরা দাবি তোলেন, বিনয় সুরেকাকে বাইরে এসে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির সামনে কথা বলতে হবে। আলাদা করে তিনি কোনও কথা বলতে পারবেন না।

স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে জানিয়েছিলেন, বিনয় সুরেকা স্কুলেরই এক জন কর্মী। পরে অবশ্য স্কুল সূত্রে জানা যায়, বিনয়বাবু স্কুলের চিফ ফিনান্স অফিসার। তবে আগের মতো এ দিনও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ট্রাস্টি কৃষ্ণ দামানি বলেন, “কোনও প্রভাব খাটানোর চেষ্টা হয়নি। একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা পুলিশকে সব কিছু লিখিত ভাবে জানিয়েছি।”

স্মরণসভার শেষে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেরিয়ে আসার সময়ে রাজন্যের মা রুচিরাদেবী তাঁদের জিজ্ঞাসা করেন, “ম্যাডাম, কী ঘটেছিল এক বার বলুন। ভয় পাচ্ছেন কেন?” এই প্রশ্ন শুনে বিব্রত হয়ে পড়েন শিক্ষিকারা। তাঁরা বলেন, “আমরা কিছু বলতে পারব না।”

রাজন্যের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা এখনও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাননি। রিপোর্ট পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। রুচিরাদেবী বলেন, “এক সময়ে আইন নিয়ে পড়েছি। প্র্যাকটিসও করতাম। ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তির জন্য আবার আদালতে দাঁড়াব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rajanya south point
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE