লাইনে হাঁসফাঁস। সোমবার, দক্ষিণ কলকাতায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
নির্বাচনী উত্তাপকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে গেল।
ফের কলকাতা শহরে শুরু হয়ে গেল তাপপ্রবাহ।
চলতি গরমের মরসুমে এটাই কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। শুধু তা-ই নয়, গত ১০ বছরের এপ্রিল এবং মে মাসের রেকর্ড অনুযায়ী, কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এতটা কখনও হয়নি। ২০০৯ সালের ১৯ মে মহানগরীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহেও দু’দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৪১.২ ডিগ্রিতে।
দেশের পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড হয়ে সেই গরম হাওয়া যে কলকাতায় ঢুকবে, তার পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতর দিয়েছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি যে তা কলকাতায় পৌঁছে যাবে, সেই ধারণা আবহবিদদেরও ছিল না। হঠাৎ করে সেই গরম বাতাস পরিমণ্ডলে ঢুকে পড়ায় মহানগরের তাপমাত্রা সোমবার এক ধাক্কায় ৫ ডিগ্রিরও বেশি বেড়ে গিয়েছে। রবিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.১ ডিগ্রি। এক দিনের মধ্যে তাপমাত্রার এতটা উর্দ্ধলম্ফন আবহবিদদের কাছে কিছুটা অস্বাভাবিকই ঠেকেছে।
এপ্রিলের প্রথম তিন সপ্তাহ মানুষকে ভুগিয়ে কলকাতায় মরসুমের প্রথম কালবৈশাখী আছড়ে পড়েছিল গত ২৬ এপ্রিল। তার পরে আরও একটি কালবৈশাখী পেয়েছে শহর। এর পর থেকেই পরিমণ্ডলে স্থায়ী ছিল একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা, যা বঙ্গোপসাগর থেকে টেনে আনছিল জলীয় বাষ্প। তাপপ্রবাহের পরে মানুষকে তা স্বস্তি দিয়েছিল। গত দুই সপ্তাহ ধরে সেই অক্ষরেখা দাঁড়িয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। তাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫-৩৬ ডিগ্রির মধ্যেই ওঠানামা করছিল। পশ্চিম ভারতের তাপপ্রবাহ এ রাজ্যে চলে আসায় আগামী কয়েকটা দিন কলকাতাবাসীকে যথেষ্ট ভুগতে হবে বলেই মনে করছেন আবহবিদদের একাংশ।
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিন ধরেই অক্ষরেখাটি একটু একটু করে সরে যাচ্ছিল বাংলাদেশের দিকে। রবিবার রাত থেকে হঠাৎ সেটি নিজের গতি বাড়িয়ে দেয়। সোমবার ভোর থেকে সেই অক্ষরেখার কোনও প্রভাবই ছিল না পশ্চিমবঙ্গের উপরে। ফলে জলীয় বাষ্প ঢোকার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এ দিন সকাল থেকেই সূর্যের তাপ ছিল সহনশক্তির বাইরে। প্রতিটি বুথের সামনে বিশাল লাইনে কষ্ট পেয়েছেন মানুষ । তাপমাত্রা যে হঠাৎ করে এতটা বেড়ে যাবে, তা বুঝতে পারেননি কেউই। তাই তাপ ঠেকাতে ছাতা নিয়ে বাড়ি থেকে বোরেননি অনেকেই। অভিযোগ, বহু ভোট কেন্দ্রে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থাও ছিল না।
এক আবহবিদের কথায়, “আবহাওয়ার যে এত দ্রুত পরিবর্তন হবে, তার আঁচ পাওয়া যায়নি।
তার জন্যই কষ্ট পেতে হল ভোটারদের।” আগামী কয়েক দিন এই তাপপ্রবাহ জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহবিদেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy