হাওড়া স্টেশন চত্বর যেমন হতে পারে। শিল্পীর নকশা।
হাওড়ার দিকে গঙ্গার তীর বরাবর তৈরি হবে রোপওয়ে। নদীর পাড় থেকে সমস্ত দখলদার সরিয়ে গড়ে উঠবে সবুজে ভরা উদ্যান। সেখানে থাকবে বিনোদনের জন্য মঞ্চ। স্টেশন সংলগ্ন দুর্গন্ধে ভরা মাছ বাজার ও সব্জি বাজার তুলে নিয়ে যাওয়া হবে অন্যত্র। সেখানে গড়ে উঠবে বহুতল বাণিজ্য ও বিনোদন কেন্দ্র ‘টুইন টাওয়ার’। এর মধ্যে থাকবে আধুনিক মানের মল, হোটেল, রেস্তোরাঁ, মাল্টিপ্লেক্স। এ ছাড়া বাস, ট্যাক্সি, প্রাইভেট গাড়ির পার্কিং সমস্যা দূর করতে তৈরি হবে আধুনিক মানের বহুতল পার্কিং প্লাজা। সেখানে থাকবে যাত্রী-বিশ্রামাগার।
কল্পনা নয়। হাওড়া শহরে প্রবেশের মুখের ছবিটা পাল্টাতে এমনই পরিকল্পনা করেছে হাওড়া পুরসভা। এ জন্য তৈরি হয়েছে নকশাও। পুরসভা সূত্রে খবর, গঙ্গার পূর্ব পাড়ের সৌন্দর্যায়ন হলেও এত দিন বঞ্চিত থেকেছে পশ্চিম পাড়। এখন রাজ্যের মুখ্য সচিবালয় চলে এসেছে হাওড়ায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান হাওড়ার মুখ বদলাতে। তাই হাওড়ার দিকে গঙ্গার পাড়-সহ হাওড়া স্টেশন চত্বরের ভোল পাল্টে দিতে এই প্রকল্প তৈরি করেছে তৃণমূল পরিচালিত হাওড়া পুরর্বোড। এ জন্য ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারীর নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে হাওড়া স্টেশন এলাকা উন্নয়ন কমিটি। এই কমিটিতে রেল, কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ, হাওড়া কমিশনারেট, হাওড়া উন্নয়ন সংস্থা, কেএমডিএ এবং বেসু থেকে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। সম্প্রতি হাওড়া শরৎ সদনে ওই কমিটির প্রথম বৈঠকও হয়ে গিয়েছে।
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, “এই পরিকল্পনা রূপায়ণে সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আশা করা যায় রাজ্য সরকারের সাহায্যে আমরা খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করে দিতে পারব।”
কী হবে হাওড়া স্টেশন ও আশপাশ চত্বর জুড়ে? হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌন্দর্যায়নের জন্য হাওড়া স্টেশন চত্বরকে ৬টি জোন বা অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অঞ্চল হিসাবে ধরা হয়েছে স্টেশনের সামনে গঙ্গাতীর। পুর কর্তৃপক্ষের কথায়, যাত্রীরা স্টেশন থেকে বেরিয়ে নদী তীরের সৌন্দর্য দেখতে পান না। তাঁদের চোখ আটকে যায় খাবারের হোটেল, কয়েকটি বেআইনি নির্মাণ ও আবর্জনায়। তাই পরিকল্পনা হয়েছে, গঙ্গাপাড়ের অধিকাংশ নির্মাণ ভেঙে পাড় রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। সেখানে তৈরি হবে সবুজ ঘাসে ঢাকা বিনোদন পার্ক। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পার্কে পায়ে চলার পথের পাশাপাশি থাকবে বসার ব্যবস্থা, ফুড পার্ক, বুটিকের স্টল-সহ সাংস্কৃতিক মঞ্চ। থাকবে গঙ্গায় লঞ্চে ঘোরার ব্যবস্থাও।
দ্বিতীয় অঞ্চল হিসেবে স্থির হয়েছে স্টেশন থেকে বেরিয়ে আগে যেখানে বাসস্ট্যান্ড ছিল সেই জায়গাটি। সেখানে তৈরি হবে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। বর্তমানে যেখানে কলকাতা বাসস্ট্যান্ড রয়েছে সেই জায়গাটি তৃতীয় অঞ্চল। হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, ওখানে একটি বহুতল তৈরি হবে। যার তিনতলা জুড়ে থাকবে সরকারি ও বেসরকারি বাসস্ট্যান্ড, সরকারি অফিস এবং কর্মচারীদের থাকার ব্যবস্থা।
বর্তমানে যেখানে দিঘা-সহ দুরপাল্লার বাস দাঁড়ায়, সেই জায়গাটি চতুর্থ অঞ্চল। ওখানেও বহুতল পার্কিং প্লাজা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ অঞ্চল সব্জি বাজার ও মাছ বাজার। পুরসভা চাইছে, দু’টি বাজার সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বরে পাঠিয়ে দিতে। এ জন্য ওই অঞ্চলে পর্যাপ্ত জায়গাও দেখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই জায়গায় তৈরি হবে কমপক্ষে ১৪তলার ‘টুইন টাওয়ার’। যেখানে সব্জি বাজার রয়েছে, সেখানে একটি টাওয়ারে থাকবে শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স-সহ হোটেল, রেস্তোরা।ঁ আর মাছ বাজারের জায়গায় তৈরি হবে আর একটি বহুতল। বঙ্কিম সেতুর দু’পাশে তৈরি হওয়া দু’টি ভবন দশতলা উপর থেকে পরস্পরের সঙ্গে সেতুর সাহায্যে যুক্ত থাকবে। যার মাধ্যমে একটি বহুতল থেকে অন্য বহুতলে সহজেই যাওয়া যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy