তৈরি হচ্ছে মাঠ। ছবি:স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
ছিল ভাগাড়। হচ্ছে স্টেডিয়াম। তাই খুশি এলাকাবাসী। উত্তর দমদম পুর এলাকায় প্রায় সাড়ে চার বিঘা পতিত জমির উপরে গড়ে উঠছে ৫০০ আসনবিশিষ্ট এই স্টেডিয়াম। আগে এখানে ময়লা ফেলা হত। যদিও পুরো কাজ শেষ করার মতো অর্থ এখনও পুরসভার হাতে নেই।
কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের কাছে শৈলডুবি রোডের ধারে গোলবাগান ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ড এক সময়ে এলাকাবাসীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। পুরসভা সূত্রের খবর, এখানে একটি বহু পুরনো ভাগাড় ছিল। পরিকল্পনাহীন ভাবে এই ভাগাড় ঘিরে জনবসতি গড়ে ওঠে। ভাগাড় থেকে বেরনো দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী আন্দোলনের পথে যান। অবশেষে ভাগাড় বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় পাঁচ-ছয় বছর ধরে জমিটি পতিত পড়ে থাকে। অভিযোগ, সমাজবিরোধী কাজকর্মের আখড়া হয়ে উঠছিল। তাই উত্তর দমদম পুর-কর্তৃপক্ষ ওখানে স্টেডিয়াম ও স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।
স্থানীয় এক যুবকের কথায়, উত্তর দমদম পুর এলাকায় খেলার মাঠ বলতে রয়েছে মিতালী সঙ্ঘের মাঠ ও সুভাষ উদ্যানের মাঠ। কাছের বারাসত স্টেডিয়ামে বেশির ভাগ সময়ে খেলা চলায় স্থানীয় ক্লাবস্তরের খেলার আয়োজনে সমস্যা হয়। গোলবাগান স্টেডিয়াম তৈরি হলে এলাকার যুবক এবং উঠতি খেলোয়াড়েরা লাভবান হবেন। আকারে ছোট হলেও স্টেডিয়াম তৈরির খবরে খুশি ছোটরাও। এক দল খুদে খেলোয়াড়ের অভিযোগ, শারীরশিক্ষার জন্য এলাকায় উন্নতমানের জিম নেই। বড় কোনও খেলার আগে অনুশীলনের জন্য ছুটতে হয় বারাসতে। খুশি বাসিন্দারাও। তাঁরা জানান, এত দিনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে খবর, জায়গার অভাব থাকায় এখানে চার দিক ঘিরে স্টেডিয়াম করা যাবে না। দু’দিক ঘেরা হবে। ৫০০ আসনের গ্যালারি হবে। গ্যালারির নীচে থাকবে টেনিস, ক্যারাম প্রভৃতি ইন্ডোর গেমসের অনুশীলনের জায়গা। থাকবে জিমন্যাসিয়াম, প্লেয়ার্স চেঞ্জিং রুম। যদিও উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল চক্রবর্তী বলছেন, “স্টেডিয়াম তৈরিতে প্রায় চার কোটি টাকার প্রয়োজন। রাজ্যসভার চার জন সাংসদের থেকে কিছু টাকা এসেছে। এর পরেও অনেক টাকা দরকার। এর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করেও মেলেনি। এ বার কেন্দ্রের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইব।”
ওখানে ভাগাড় থাকায় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, মিথেন গ্যাস থেকে সমস্যা হতে পারে। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ সূত্রে খবর, ছ’ফুট থেকে দশ ফুট গভীর পর্যন্ত বর্জ্য তোলা হয়েছে। তারপর মাটি, সাদাবালি ফেলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাঠ করা হয়েছে। ফলে মিথেন গ্যাস বেরনোর কোনও আশঙ্কা নেই। প্রাথমিক পর্যায়ে মাঠ ও তার নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস রোডের পাশেই রয়েছে কেএমডিএ-এর তৈরি পাঁচ ফুট গভীর হাইড্রেন। যা মাঠের জল বেরোতে সাহায্য করবে। তবে পুরপ্রধান জানাচ্ছেন, খেলার জন্য জানুয়ারিতেই মাঠটির উদ্বোধন করে দেওয়া হবে। টাকা পেলেই স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy