Advertisement
E-Paper

ভোটের ভেট, বিশ হাজার ভ্যানরিকশাকে পুর-লাইসেন্স

ভোটের মুখে শহরে ২০ হাজার পণ্যবাহী ভ্যানরিকশার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। এর পিছনে ভোটের রাজনীতি দেখছেন বিরোধীরা। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে শহরের গতি বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে, সেখানে এই সিদ্ধান্ত কি রাস্তার গতিকে আরও শ্লথ করে দেবে না? বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, এটা ঘটবেই, অনিবার্য। পুরসভা সূত্রে খবর, ২০০৮-এর পর থেকে এই ভ্যানরিকশার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৬

ভোটের মুখে শহরে ২০ হাজার পণ্যবাহী ভ্যানরিকশার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। এর পিছনে ভোটের রাজনীতি দেখছেন বিরোধীরা। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে শহরের গতি বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে, সেখানে এই সিদ্ধান্ত কি রাস্তার গতিকে আরও শ্লথ করে দেবে না? বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, এটা ঘটবেই, অনিবার্য।

পুরসভা সূত্রে খবর, ২০০৮-এর পর থেকে এই ভ্যানরিকশার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হয়নি। বেশ কিছু দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়রকে এই লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের ব্যাপারে নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী, শুক্রবার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও পুলিশ কমিশনার সুরজিত্‌ করপুরকায়স্থের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী সাত দিনের মধ্যে শহরের ২০ হাজার ভ্যানরিকশার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হবে। তাদের হাই-সিকিউরিটি নম্বর প্লেট দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। মেয়র বলেন, “যাঁদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হবে, তাঁদের কাছেই হাই-সিকিউরিটি নম্বর প্লেট থাকবে। কেউ এই নম্বর জাল করলে পুলিশ সহজেই ধরে ফেলতে পারবে।” মেয়রের দাবি, এই হাই-সিকিউরিটি নম্বর প্লেট জাল করা কঠিন। সাধারণ গাড়িতে যেমন নম্বর প্লেট থাকে, সে রকমই প্লেট থাকবে। কিন্তু এই নম্বর প্লেটে বিশেষ এক ধরনের রং থাকবে ও খোদাই করে নম্বর লেখা থাকবে।

কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল (টাউন প্ল্যানিং) দীপঙ্কর সিংহ বলেন, “শহরে ভ্যানরিকশা বাড়লে এক দিকে যেমন যানবাহনের গতি শ্লথ হবে, তেমনই রাস্তা আরও বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ হবে। এ শহরে রাস্তা সরু হওয়ায় অনেক সময়ই ভ্যানরিকশার পাশ দিয়ে দ্রুত গতির গাড়ি যাওয়ার জায়গা থাকে না। ফলে দ্রুত গতির গাড়িকেও ধীরে চলতে হয়।” তিনি আরও বলেন, “এ শহরে শ্লথ গতির যানের জন্য আলাদা লেন নেই। কিন্তু একই রাস্তায় শ্লথ ও দ্রুত গতির গাড়ি চলা বিপজ্জনক। এটা দুর্ঘটনার কারণও হয়ে ওঠে।” তাঁর মতে, কালের নিয়মে যে সব গাড়ি বড় শহর থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে, তা ফের ফিরিয়ে আনলে বিভ্রাট হবে।

যদিও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পরে শহর আরও গতিশীল হবে। মেয়র বলেন, “প্রচুর বেআইনি রিকশা ধরা পড়লে শহর থেকে লাইসেন্সবিহীন রিকশার সংখ্যা কমবে। ফলে শহরের গতি বাড়বে। এ ছাড়া শহরের প্রধান রাস্তায় ভ্যানরিকশা চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে না। কোন কোন রাস্তা দিয়ে এই পণ্যবাহী রিকশা চলবে, তা-ও ঠিক করে দেওয়া হবে।”

তবে পুরভোটের আগে এই সিদ্ধান্তে ভোটের রাজনীতির রং-ই দেখতে পাচ্ছেন বিরোধীরা। বিরোধী দলনেত্রী, সিপিএমের রূপা বাগচী বলেন, “ভোট-ব্যাঙ্কের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভ্যানরিকশার চালকদের স্বার্থের কথা মাথায় থাকলে এটা আগেই ভাবা উচিত ছিল। হঠাত্‌ ভোটের আগে দরদ উথলে উঠল কেন?”

লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সিদ্ধান্তকে ভোটের রাজনীতি বলে মানতে নারাজ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যে গাড়িগুলি এত দিন লাইসেন্স ছাড়া চলত, এর ফলে সেই গাড়িগুলি ধরা হবে। বিনা লাইসেন্সের গাড়ি বা যে গাড়ির হাই-সিকিউরিটি নম্বর প্লেট থাকবে না, সেগুলিকে পুলিশ ধরবে। ফলে বহু অবৈধ গাড়ি ধরা পড়বে।”

তবে মেয়র বা বিরোধী দলনেত্রী কেউই কিন্তু পুরভোটের আগে লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের বিরোধী নন। রূপাদেবীর কথায়, “শুধু লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করলেই হবে না, দেখতে হবে কোন রাস্তা দিয়ে এই গাড়িগুলো যাবে, কখন যাবে। এর ফলে সাধারণ মানুষের হেনস্থা হবে কি না। শহরের গতি যেন শ্লথ না হয়, সেই বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।”

election van rickshaw license
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy