এখানেই তৈরি হওয়ার কথা আবাসন। (পাশে) শিলান্যাসের ফলক। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
দু’বছর আগেই চেতলার রাখালদাস আঢ্য রোডে জেএনএনইউআরএম-এ দরিদ্রদের জন্য বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেছিল কলকাতা পুরসভা। প্রকল্পের শিলান্যাসও হয়েছিল। তার পর আর কাজ এগয়নি। এই ওয়ার্ডটি রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের।
কলকাতা পুরসভার বস্তি দফতরের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, “শহরে দরিদ্র মানুষদের থাকার জন্য পুরসভা অনেক জায়গায় জেএনএনইউআরএম-এর অর্থে আবাসন নির্মাণ করেছে। চেতলাতেও একই পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আইনগত কিছু জটিলতা থাকায় এই প্রকল্প রূপায়ণে দেরি হচ্ছে।” মেয়র পারিষদ জানান, জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের অন্তর্গত ‘বেসিক সার্ভিসেস ফর আর্বান পুওর’ প্রকল্পে এই অর্থ পাওয়া সম্ভব হবে না। তার পরিবর্তে রাজীব আবাসন যোজনায় কেন্দ্রীয় সরকার এই অর্থ বরাদ্দ করবে।
মেয়র পারিষদ জানান, কলকাতা পুরসভার নথিতে এই প্রকল্পের জন্য যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে তা ‘ঠিকা’র জমি। পুরসভাকে সংশ্লিষ্ট দফতরের থেকে অনুমতি নেওয়া ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দাদের এই জমিতে কোনও দাবি আছে কি না তা নিষ্পত্তি করতে সময় লেগেছে। আমি বিষয়টি পুরমন্ত্রীকে জানিয়েছি। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, এই প্রকল্পের জন্য যে ঠিকাদারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল সেই সংস্থা এই প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যায় পড়ে। এলাকায় যে জায়গায় এই আবাসন হবে তার আশপাশের কয়েকটি বাড়ি ভেঙে ফেলার কথা হয়েছিল। এই নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়। স্বপনবাবু জানান, এখানে অনেকগুলি আবাসন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম আবাসনটি নির্মাণ করার পর যে অংশটি খালি হবে সেখানেই ফের নতুন আবাসন নির্মাণ করা হবে।
রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এই প্রকল্প রূপায়ণে যে সমস্ত জটিলতা ছিল তার নিষ্পত্তি হয়েছে। যত দ্রুত কাজ শুরু করা যায় সে ব্যাপারে কলকাতা পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি কাজের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না।”
এই প্রকল্পে দরিদ্র মানুষদের আবাসনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার মোট প্রকল্পের ৫০ শতাংশ, রাজ্য সরকার ৩০ শতাংশ এবং বাকি ২০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করবে কলকাতা পুরসভা। এই প্রকল্পে যাঁরা ফ্ল্যাট পাবেন তাঁরা পুরসভাকে পরিবার পিছু ৩০,০০০ টাকা দেবেন। এই প্রকল্পের মোট খরচ হবে এক কোটি ৭১ লক্ষ টাকা। ২৭০ বর্গ ফুটের ১৬টি ফ্ল্যাট হবে। তবে আরও কয়েকটি ফ্ল্যাট হবে বলেও পুরসভা জানাচ্ছে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, পুরসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে চেতলার ৬০ নম্বর রাখালদাস আঢ্য রোডের একটি বস্তির একাংশে একটি ফাঁকা মাঠে আবাসন প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়। এর জন্য এই এলাকার মাটি পরীক্ষাও করা হয়। এর পরেই, ২০১২-এ প্রকল্পের শিলান্যাস করে।
স্থানীয় বস্তিবাসীদের বক্তব্য, বস্তি উন্নয়নের এই প্রকল্প এখানে যাতে হয় সেই ব্যাপারে তাঁরা আগ্রহী। কিন্তু তাঁরা কী ভাবে ফ্ল্যাট পাবেন সে ব্যাপারে এখনও অন্ধকারে আছেন। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এই প্রকল্পে মাত্র ১৬ টি ফ্ল্যাট তৈরির কথা রয়েছে। কিন্তু এখানে ৫০০-র বেশি পরিবার রয়েছে। তাঁদের কোনও আবাসন দেওয়া হবে কি না সে ব্যাপারে কোনও আশ্বাস পুরসভা থেকে লিখিত ভাবে এখনও পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy