তিনি চলে গেলেন। আবার রয়েও গেলেন! এবং সেই সঙ্গে শহরে থেকে গেল উৎসবের আলো।
পাঁজি মেনে পুজো শেষ। দশমীর সন্ধ্যায় নিয়ম মেনে সপরিবার কৈলাস পাড়ি দেওয়ার কথা দুর্গার। কিন্ত এ বছর শনিবার মহরম পড়ে যাওয়ায় শুক্র ও শনিবার বিসর্জন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কোনও কোনও পঞ্জিকা মতে, এ বার বৃহস্পতিবার নবমী ও দশমী তিথি পড়ায় বহু বাড়ি, আবাসনের পুজো বৃহস্পতিবার রাতেই বিসর্জন দিয়ে দিয়েছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্তও গঙ্গার ঘাটে কিছু বিসর্জন হয়েছে। বেলুড় মঠের প্রতিমারও এ দিনও বিসর্জন হয়।
তবে শহরের বড় মাপের পুজোগুলি সরকারের নির্দেশ মেনেই প্রতিমা রেখে দিয়েছে। দশমীর সন্ধ্যাতেও রাস্তা ঝলমল করেছে উৎসবের আলোতে। ফলে পাঁজির থেকেও দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে উৎসব। বড় বড় পুজোর প্রতিমা বিসর্জন না হওয়ায় এ দিনও সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন মণ্ডপে ভিড় জমিয়েছেন লোকজন।
লালবাজার জানিয়েছে, শুক্রবার বিসর্জন বন্ধ রাখার কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। কয়েকটি বাড়ি ও ছোট মাপের পুজো অবশ্য প্রতিমা নিয়ে গঙ্গার ঘাটে হাজির হওয়ায় পুলিশি প্রহরায় বিসর্জন করানো হয়েছে। তবে বিকেলের পরে আর কোনও প্রতিমা বিসর্জন দিতে দেওয়া হয়নি। আজ, শনিবার সকাল থেকেই কোনও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে না বলে লালবাজার জানিয়েছে। গঙ্গার পাশাপাশি এ দিন সকালে ভিআইপি রোডের ধারে দেবীঘাটেও বেশ কিছু প্রতিমা বিসর্জন হয়।
এ বছর গঙ্গার মোট ২৪টি ঘাটে বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ঘাটেই নজর-মিনার থাকছে। গঙ্গায় টহল দেবে রিভার ট্রাফিকের লঞ্চও। তাতে পুলিশের পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরাও থাকবেন। ঘাটে থাকবেন এক হাজারের বেশি পুলিশকর্মী। থাকবেন যুগ্ম কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারেরাও। প্রতিমা বিসর্জনের সময় সাধারণ মানুষ গঙ্গার কাছে যেতে পারবেন না বলে লালবাজার জানিয়েছে। থাকবেন পুরকর্মীরাও। প্রতিমা জলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তুলে নেওয়ার জন্য ক্রেনের ব্যবস্থা রাখছে পুরসভা। বৃহস্পতিবারই প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বাজে কদমতলা ঘাটে গিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ এবং মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার।
দশমী পেরোলেও এ দিনও বিকেল থেকে রাস্তায় নামতে হয় পুলিশকে। লালবাজার সূত্রে খবর, এক দিকে মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা থেকে যাওয়ায় ভিড় সামলাতে বাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছে। পাশাপাশি যানজটও সামলাতে হয়েছে। রাতে শহরের কিছু জায়গা থেকে মহরমের মিছিলও বেরিয়েছিল। তা সামলাতেও বাহিনী মোতায়েন করা হয় বলে লালবাজার সূত্রে খবর।