সেই ১৯৪৫ সালে সঙ্গীত জগতে আমার পথচলা শুরু। এর বছর দু’য়েকের মধ্যেই আইপিটিএ-তে যোগ দিই। সেই সময় কয়েকটি অনুষ্ঠানে সুচিত্রার সঙ্গে আমার দেখা হয়। গণনাট্য সঙ্ঘে সলিল চৌধুরীর স্কোয়াডে প্রথম জীবনে আমি গান গাইতাম। সুচিত্রাও গাইত। তখন থেকেই দেখছি ওঁকে। গান গাইলেই তো আর কেউ বড় মানুষ হয়ে ওঠেন না। চলাফেরা, কথাবার্তা, ব্যবহার— এ সব দিয়েই এক জন মানুষকে চেনা যায়। সেই বড় বিষয়টা কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুচিত্রা মিত্র ছাড়া আর কারও মধ্যেই দেখিনি। এর আগে সুচিত্রার একটা রেকর্ড শুনেছি। শোনার পর বুঝেছি, ওঁর ভেতরে কী আগুন আছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়া ওঁর গাওয়া একটি গান আমার অসাধারণ লেগেছিল, সলিলের সুর করা ‘সেই মেয়ে’ (হয়তো তারে কৃষ্ণকলি বলে)। ওই রকম প্রাণশক্তিতে ভরপুর একটা মানুষকে দেখে আমি বিস্মিত হতাম। তখন থেকেই আমার সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব। অটুট ছিল আমৃত্যু। ওঁর জীবনে নানা ঘটনা ঘটেছে। অনেক দুঃখজনক ঘটনাও ছিল। তবে আমার এক জন ভাল বন্ধু চলে গিয়েছে। উনি আমার থেকে বছর দু’য়েকের বড় ছিলেন। কিন্তু বয়সের তারতম্য তো আর বন্ধুত্বের নিয়ন্ত্রক হতে পারে না। ও রকম স্পষ্টবাক্ শিল্পী আমি আর দেখিনি। রবীন্দ্রসঙ্গীতে শান্তিনিকেতনী ধারা বজায় রেখেও তার মধ্যে একটা নিজস্বতার গুণ যুক্ত করতে পেরেছিলেন সুচিত্রা। ওঁর গায়কীতে ছিল এক আশ্চর্য ওজস্বিতা। স্পষ্ট এবং ঋজু উচ্চারণ তৈরি করে দিয়েছিল ওঁর স্বতন্ত্র গায়কী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy