Advertisement
০৫ মে ২০২৪

দাঁড়াবেন না ভোটে, দাবি কৃষ্ণেন্দুর

রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু বৃহস্পতিবার জানান, তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা দলের পর্যবেক্ষক মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে এবং গোলাম রব্বানিকে মাসখানেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন।

কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। — ফাইল চিত্র

কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। — ফাইল চিত্র

সোমনাথ চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:২১
Share: Save:

দলের টিকিটে আর কোনও নির্বাচনেই প্রার্থী হতে চান না মালদহের তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, দলের জন্য তিনি অনেক স্বার্থত্যাগ করলেও প্রাপ্য সম্মান পাচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেইসঙ্গে দলের কাজকর্ম নিয়েও নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। তবে বিজেপিতে যাওয়ার জল্পনাও উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানান, তৃণমূলে থেকেই কাজ করবেন তিনি।

রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু বৃহস্পতিবার জানান, তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা দলের পর্যবেক্ষক মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে এবং গোলাম রব্বানিকে মাসখানেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘‘জেলায় দলের কোনও দিশা নেই। নেতৃত্বের অভাব। দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে দলের একাংশের মধ্যে। টাকা নিয়ে চাকরিতে নিয়োগের অভিযোগ উঠছে। এতে দলের মর্যাদাহানি হচ্ছে। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’ তাহলে কি কৃষ্ণেন্দু বিজেপির পথে পা বাড়াচ্ছেন? জবাবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘না না কোথাও যাব না। মমতাদি আমার নেত্রী। তিনি আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। আমরাও তাঁর জন্য প্রাণপণ খেটেছি। কিন্তু দলে কোনও সম্মান পাচ্ছি না। অন্য দল থেকে এসে অনেকে আমাদের দলের নেতা হয়ে যাচ্ছেন। সরকারি পদেও বসছেন। তাঁরা পুরনো কর্মীদের অসম্মান করছেন। তাই বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন? কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীকে জানিয়েছিলাম। তিনি কোনও গুরুত্ব দেননি।’’

রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মালদহের দুই নেতা কৃষ্ণেন্দু এবং সাবিত্রী মিত্রকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় তৃণমূলের ভরাডুবি হয়। ১২টি আসনের মধ্যে একটি আসনেও জিততে পারেনি তৃণমূল। তার পর থেকেই জেলা রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন দুই নেতাই। তারই প্রতিবাদে তৃণমূলের একাধিক নেতা বসে গিয়েছেন। জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা জানান, জেলা পরিষদের এক নেতাকে জেতাতে যে ভাবে প্রশাসনকে ব্যবহার করা হয়েছিল তা মানুষ দেখেছেন। বিধানসভা এবং লোকসভায় পর পর তিনবার পরাজিত হয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীকেই টিকিট দেওয়া হচ্ছে। নতুন প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে না। এতে দলের নিচুতলায় ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে। রাজ্য নেতৃত্ব সব জেনেও নির্বিকার। ইংরেজবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা জেলায় দলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকারও জেলায় দলের কাজকর্মে ক্ষুব্ধ। তিনিও এ দিন বলেন, ‘‘আমি আর নির্বাচনে দাঁড়াব না। দলের কাজ করব। জেলায় একসঙ্গে কাজ হচ্ছে না। ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে। মানুষ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। রাজ্য নেতৃত্ব চেষ্টা করছে।’’

জেলার আইএনটিটিইউসি সভাপতি মানব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘দলের একাংশ অন্য অংশের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনছে। জেলা নেতৃত্ব অসহায়। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল মালদহে। কয়েকটি ব্লক প্লাবিত হল। দলের নেতাদের নিয়ে কোনও আলোচনা করা হল না। সব কাজ হচ্ছে চুপচাপ। ত্রাণ কোথায় কী ভাবে দেওয়া হবে, তাও জানানো হচ্ছে না। দল দ্বিধাবিভক্ত। এই ভাবে চললে আগামী পুরসভা নির্বাচনে দল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।’’

মালদহে দলের পর্যবেক্ষক গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘দলের হয়ে কে নির্বাচনে দাঁড়াবেন কে দাঁড়াবেন না, তা ঠিক করবে দল। ২০ অক্টোবর জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে মালদহে। সেখানে সকলের কথা শোনা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Krishnendu Narayan Choudhury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE