ফাইল চিত্র।
যে কোনও সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় একই কাজের জন্য কর্মী-শ্রমিকদের সমবেতন দিতে হবে বলে গত বছরের অক্টোবরে নির্দেশ জারি করেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এ ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারল না রাজ্য সরকার। এমনকী, ওই নির্দেশের প্রতিলিপি চার মাস পরে সরকারকে জোগাড় করতে হয়েছে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের কাছ থেকে।
রাজ্য শ্রম দফতরেই অন্তত ৩০০ চুক্তিভিক্তিক কর্মী একই কাজ করেও সমান হারে বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। কেউ সাড়ে ১১ হাজার, কেউবা ১২ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। তাঁদের অন্তত ১৮ হাজার টাকা পাওয়া উচিত বলে মানছেন শ্রম দফতরের কর্তারা। কেউই প্রভিডেন্ড ফান্ড, গ্র্যাচুইটি পান না।
শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের দাবি, পঞ্জাবের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে নানা রাজ্য থেকে ৫৪টি আবেদন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও ছিল। সেই আবেদনগুলি পর্যালোচনা করে সুপ্রিম কোর্টই বলেছিল, সমকাজে সমবেতন ওই আবেদনগুলির ক্ষেত্রে তখনই কার্যকর করতে হবে, এমনটা নয়। একই সঙ্গে শ্রমমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ কথা আমি বিধানসভাতেও জানিয়েছি।’’
শ্রমমন্ত্রীর এই দাবি মানতে চাননি শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা চন্দননগরের ‘আইনি সহায়তা কেন্দ্র’-এর কর্তা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তাঁর পাল্টা দাবি, সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশিকা সব রাজ্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু এখানে তা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘বেতন বৈষম্যের কথা জানিয়ে আমাদের কাছে বহু শ্রমিক আসছেন। শ্রমিকদের আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে? আবেদনে কাজ না হলে আমরা আইনি পথেই শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।’’
গত ২৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট ওই নির্দেশিকা জারি করেছিল। তাতে স্থায়ী-অস্থায়ী শ্রমিকদের মধ্যে বেতনে কোনও বিভাজন চলবে না বলে স্পষ্ট নির্দেশ ছিল। তার পরেই ‘আইনি সহায়তা কেন্দ্র’-এর পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিব, শ্রমসচিব এবং শ্রম কমিশনারকে চিঠি দিয়ে ওই নির্দেশ কার্যকর করার জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু শ্রম দফতর ওই নির্দেশের প্রতিলিপি কাছে না-থাকার কথা জানিয়ে তা চেয়ে পাঠায় বলে দাবি বিশ্বজিৎবাবুর। তাঁর কথায়, ‘’চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ওই প্রতিলিপি চেয়ে পাঠানোর দু’তিন দিনের মধ্যেই আমরা তা পাঠিয়ে দিই। কিন্তু তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’
শ্রম দফতরেই অন্তত ৩০০ জন শিক্ষিত চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছেন, যাঁরা ৬-৭ বছর ধরে সমবেতনের দাবি জানিয়ে আসছেন। শ্রম কমিশনার এবং শ্রমমন্ত্রীকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা। এ নিয়ে শ্রমমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিভিন্ন স্কুল-কলেজেও একই কাজে বেতন বৈষম্যের নজির রয়েছে বলে বিশ্বজিৎবাবুরা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy