Advertisement
E-Paper

নির্যাতিতার কাছে যেতে বাধা, মমতা-সূর্য কথা

সিউড়ি জেলা সংশোধনাগারে সাত্তোরের নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হল না বাম প্রতিনিধিদের। ঘটনাস্থলে তাঁরা ঘণ্টাদুয়েক অবস্থান করার পরে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইতে হল বিরোধী দলনেতাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৫ ০৪:১৯

সিউড়ি জেলা সংশোধনাগারে সাত্তোরের নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হল না বাম প্রতিনিধিদের। ঘটনাস্থলে তাঁরা ঘণ্টাদুয়েক অবস্থান করার পরে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইতে হল বিরোধী দলনেতাকে। তার পরেই বামফ্রন্টের বীরভূম জেলার বিধায়কদের ওই নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেইমতোই আজ, শুক্রবার জেলার তিন বাম বিধায়ক ফের যাবেন জেলবন্দি ওই গৃহবধূর সঙ্গে দেখা করতে। আবার এই ঘটনার জেরেই সামনে চলে এসেছে বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে ওই নির্যাতিতার সঙ্গে জেলে দেখা করতে দেওয়া ঘিরে বিতর্ক। জেল সুপারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ নবান্ন।

বামফ্রন্টের ৮ জন বিধায়ক-সহ ১০ সদস্যের বাম প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার সিউড়ি জেলা সংশোধনাগারে গেলে জেলের ভিতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি তাঁদের নেই। ছিলেন না জেল সুপারিনটেন্ডেন্ট সরোজ ঘোষ। প্রায় আধ ঘণ্টা বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় জেলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন সুভাষ নস্কর, আনিসুর রহমান, অপর্ণা সাহা, গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, বিজয় বাগদী প্রমুখ বাম নেতা-নেত্রী। সেই খবর পেয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। কারাবিধিতে জনপ্রতিনিধিদের জেলে ঢোকার সংস্থান আছে
বলে তিনি জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। শেষ বেলায় রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বামফ্রন্টের বীরভূম জেলার প্রতিনিধিরা জেলে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। তত ক্ষণে অবশ্য সিউড়ি থেকে ফেরার পথ ধরে ফেলেছিলেন বাম প্রতিনিধিরা।

সিউড়ি থেকেই এ দিন অবশ্য কারামন্ত্রী হায়দার আজিজ সফিকে ফোন করে বাম প্রতিনিধিরা জানতে চান, প্রধান বিরোধী দলের বলেই কি তাঁদের এ ভাবে আটকানো হল? যখন অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা বা বিধায়কদের নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়েছে, তখন তাঁদের বেলায় অন্যথা কেন? অনুমতি অবশ্য মেলেনি। ঘণ্টাদুয়েক অবস্থান করার পরে বাম দলটি ক্ষুদ্ধ হয়ে চলে যায়। সুভাষবাবু ও আনিসুরের ক্ষোভ, ‘‘বিরোধী দলনেতার প্যাডে চিঠি দিয়ে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনুমতি পেলাম না। শুধু জেলা প্রশাসন নয়, খোদ মুখ্যমন্ত্রী ও কারামন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের আটকানো হল। আমরা এ নিয়ে বিধানসভায় সরব হব।’’ বস্তুত, পুলিশকে লক্ষ করে বোমা ছোড়া-সহ একাধিক অভিযোগে পুলিশ বিজেপি সমর্থক ওই বধূ ও তাঁর পরিবারকে গ্রেফতার করেছে। আগে পুলিশ এবং তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলা ওই বধূকেই পুলিশ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে ‘ঝাল মিটিয়েছে’ বলে অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা।

বাম প্রতিনিধিরা জেলে ঢোকার অনুমতি পাচ্ছেন না খবর পেয়ে বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু এ দিন প্রথমে কথা বলেন কারামন্ত্রী সফির সঙ্গে। মন্ত্রী জানান, তাঁর কিছু করার নেই। এর পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় বিরোধী দলনেতার। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি, কারাবিধির ৩১-ক ধারা অনুযায়ী, জনপ্রতিনিধিরা ১২ ঘণ্টা আগে নোটিস দিয়ে জেলে বন্দি কারও সঙ্গে দেখা করতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আইনে যদি সংস্থান থাকে, তা হলে তাঁর কিছু বলার নেই।’’ পরে মুখ্যসচিব বিরোধী দলনেতাকে ফোন করে জানান, কারাবিধিতে যা সংস্থান আছে, তা মেনেই বামফ্রন্টের বীরভূম জেলার জনপ্রতিনিধিরা জেলে ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করতে পারেন।

কারাবিধি অনুযায়ী, জেলে বন্দি কারও সঙ্গে দেখা করতে পারেন তাঁর আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু এবং জনপ্রতিনিধিরা। বিজেপি-র রূপা এর মধ্যে কোনও তালিকাতেই পড়েন না বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন। তা সত্ত্বেও তিনি কী ভাবে সোমবার জেলে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেলেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের অন্দরে। তবে কারা দফতর সূত্রে খবর, এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে সিউড়ির জেল সুপারকে শো-কজ করা হয়নি। বিজেপি-র আরও দুই নেতা-নেত্রী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও লকেট চট্টোপাধ্যায়কে অবশ্য বুধবার ওই বধূর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তবে কংগ্রেস বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন দেখা করতে পেরেছিলেন।

Suri Left front BJP sattor suryakanta Misra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy