বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
সামনের বছরই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই এ বার পাড়ায় পাড়ায় সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামের ছোট ছোট সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারি আধিকারিকেরা পৌঁছে যাবেন সাধারণ মানুষের কাছে। বুথকেন্দ্রিক ক্যাম্প করে মানুষের সমস্যা শুনবেন সরকারি আধিকারিকেরা। তার পরে সেই সমস্যা বিচার করে সমাধানের চেষ্টা হবে। এর জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে সরকার। মোট আট হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে মমতার সরকার। এর জন্য তৈরি করা হবে টাস্ক ফোর্সও। তৃণমূলের দাবি, গোটা দেশে এই ধরনের কর্মসূচি এই প্রথম।
মমতা জানান, হরিয়ানা সরকারের তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপার এবং ডিএম-কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে কিছু নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই নামগুলি যাচাই করে জানাতে হবে। এই কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওরা কী চাইছে, বাংলা দখল করতে? এখানে কি ভাষা সন্ত্রাস চলছে? এ বার জেলা বেছে বেছে মানুষদের সঙ্কটে ফেলার চেষ্টা চলছে। তবে আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরা আমাদের কাজ আমাদের মতো ঠিক করব। কেউ ভয় পাবেন না। এই সব করে ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ দিয়ে মহারাষ্ট্র ও দিল্লির মতো বাংলাও জিতব, এ সব ভেবে বিজেপি ভুল করছে।’’
মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, বাংলার ব্যাপারে কী ভাবে অসম হস্তক্ষেপ করে? এটা অসাংবিধানিক এবং অনৈতিক। মমতা বলেন, ‘‘আমরা ডবল ইঞ্জিন বিজেপি সরকারকে বলব, নিজের চরকায় তেল দিন। আপনারা যদি মনে করেন এ ভাবে দেশ চালাবেন, তবে দেশ বিভক্ত হয়ে যাবে।’’
মমতা জানান, ছোট ছোট কাজের জন্য সরকার কিছু টাকা দেবে। ১০ লক্ষ করে টাকা দেবে সরকার। মঙ্গলবার থেকেই পরিকল্পনার কাজ শুরু হবে।
মমতা জানান, মানুষের ছোট ছোট সমস্যা সমাধানের জন্য এ বার থেকে সরকার পথে নামবে। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে প্রধানমন্ত্রীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর কথাও শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বার বার ‘আত্মনির্ভরতা’র কথা বলেছেন, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কিছু হয়নি।’’ তার পরেই নতুন কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘এই রকম উদ্যোগ এই প্রথম। গ্রামের ছোট ছোট সমস্যার কথা শুনবেন আমাদের আধিকারিকেরা। তিনটে করে বুথ নিয়ে একটা সেন্টার হবে। প্রত্যেকটা বুথে একটা জায়গা থাকবে, যেখানে সাধারণ মানুষ নিজেদের ছোট ছোট সমস্যার কথা জানাবেন। সেই ক্ষেত্রে সরকারি অফিসারের আলোচনা করে ঠিক করবেন, কতটা কী করতে পারি। সব কাজ হবে অনলাইন মাধ্যমে, স্বচ্ছতা মেনে। মানুষ নিজের সমস্যা নিজে জানাতে পারবেন।’’ মমতা জানান, তিনটে বুথ নিয়ে একদিন করে ক্যাম্প হবে পাড়ায় পাড়ায়। সমস্যা শোনার পর সেই কাজ করা হবে।
মঙ্গলবার নবান্ন থেকে নতুন কর্মসূচি বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা সত্ত্বেও আমরা চেষ্টা করছি মানুষের মুখের হাসি যাতে কেউ কেড়ে নিতে না পারেন।’’ নতুন কর্মসূচির কথা বলতে গিয়ে ‘দুয়ারে সরকারের’ প্রসঙ্গও টানেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনেক সময়ে দেখি ছোট ছোট পাড়ায় একটা কলের দরকার, বা অল্প রাস্তার প্রয়োজন— এই সব ছোট ছোট কাজের জন্যই নতুন কর্মসূচি চালু করছে সরকার।’’
মমতা মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘সরকারের সব দফতর মিলিয়ে যে কাজগুলি চলছে, সেগুলি চলবে। আমরা যতটা টাকা জোগাড় করতে পারব, তেমন ভাবে হবে। এখন তো কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের টাকাও বন্ধ করে দিয়েছে। গ্রামীণ আবাস যোজনার টাকাও বন্ধ।’’
মমতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কর্মসূচি হলে আমি কালই বলে দিতাম মঞ্চ থেকে। তবে এ বার সরকারি কর্মসূচির কথা বলব।’’ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নাম ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’।
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একুশে জুলাইয়ের পরের দিনই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর। এই সাংবাদিক বৈঠক ঘিরে কৌতূহল নানা মহলে।
সোমবার একুশে জুলাই তৃণমূলের সমাবেশ থেকেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের সুর বেঁধে দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বময়নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বিহারের মতো পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিলে তাঁরা ঘেরাও কর্মসূচি করবেন। ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দেওয়াকে সরাসরি ‘যড়যন্ত্র’ হিসাবে অভিহিত করেছিলেন। ‘বাংলাভাষী’ বলে বাংলা ভাষার উপর ‘সন্ত্রাস’-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেছিলেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy