— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর বিএলও-দের উপর চাপ কমাতে প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ একাধিক নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যকে। সুপ্রিম কোর্টে বিএলও প্রসঙ্গ উঠেছিল তামিল অভিনেতা বিজয়ের দল টিভিকের আবেদনে। তামিলনাডুর ওই দলের দাবি ছিল, এ পর্যন্ত ৩৫–৪০ জন বিএলও-র মৃত্যু হয়েছে। টিভিকের আইনজীবী শীর্ষ আদালতে দাবি করেন, এই মৃত্যুর দায় নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। নির্বাচন কমিশনও পাল্টা দাবি করে, টিভিকের দাবি, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
এর পরেই দুই বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, এসআইআরের কাজে যেখানে ১০ হাজার জন বিএলও-কে নিয়োগ করা হয়েছে, সেখানে আরও ৩০ হাজার জনকে নিয়োগ করা যেতেই পারে। তাতে চাপ কমতে পারে বিএলও-দের। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে বলে, কোনও বিএলও কাজ থেকে অব্যাহতি চাইলে, বিশেষত কেউ অসুস্থ হলে, তাঁকে ছুটি দেওয়া হোক। সেই বিএলও-র বদলে নতুন বিএলও নিয়োগ করা হোক। এই নির্দেশ শুধু তামিলনাড়ু নয়, সব রাজ্যের জন্যই প্রযোজ্য বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘অবশ্যই কমিশনকে পদক্ষেপ করতে হবে। না হলে অরাজকতা তৈরি হতে পারে। এর আগে আমরা বিএলও নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিলাম, তা সব রাজ্যের জন্যই প্রযোজ্য।’’ দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যায় পড়লে বিএলও-রা মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) এবং জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে অভিযোগ জানাতে পারবেন। তাঁদেরকে নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ওই বিষয়ে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত পদক্ষেপ করেন।
দুই বিচারপতির বেঞ্চের কথায়, নির্বাচন ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ কমিশনের অধীনে আসে না। এর পরেই বিচারপতি বাগচী জানতে চান, অন্য রাজ্যগুলিতে কী পরিস্থিতি? শুধু কি পশ্চিমবঙ্গেই বিএলও-রা হুমকির মুখে পড়ছেন? না কি অন্য রাজ্যেও একই সমস্যা হচ্ছে?
বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, কোনও রাজ্যের সরকার যদি বিএলও-দের নিরাপত্তা দিতে সহযোগিতা না করে, তা হলে তা সুপ্রিম কোর্টকে জানাতে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেই মতো রাজ্যকে নির্দেশ দেবে শীর্ষ আদালত। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।
কমিশনের তরফে জানানো হয়, তারা শীঘ্রই রাজ্যকে চিঠি দেবে বিএলও-দের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যে যাচ্ছি না। যে সব বিএলও-র কাজ করতে সমস্যা রয়েছে, তাঁদের সরিয়ে নতুন নিয়োগ করুন। বিএলও-দের হুমকি দেওয়ার বিষয়টিও দেখুন।’’
বিচারপতি বাগচী বলেন, এমনও অভিযোগ উঠছে যে বিএলও-দের উপর প্রচুর চাপ দিচ্ছে কমিশন। তাতে নির্বাচন কমিশন জানায়, একজন বিএলও গড়ে প্রতি দিন ৩৭ জন ভোটারের দায়িত্ব নেন। প্রতি দিন ৭-৮টি বাড়ি ঘুরলেই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। উত্তরে বিচারপতি বাগচী বলেন, ‘‘আমরা কোনও রাজনৈতিক বক্তৃতা নিয়ে আলোচনা করছি না। আমরা বলছি, বিএলও-দের উপর অতিরিক্ত চাপ যেন না আসে। তাঁরাই মূল কাজটি করছেন। বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, তথ্য আপলোড করছেন। এটা বসে থাকার মতো কাজ নয়। সেই কারণে আমরা আগেই বলেছিলাম, প্রয়োজনে বিএলও-র সংখ্যা বৃদ্ধি করা হোক। কমিশনকে দেখতে হবে কোনও অসুবিধা ছাড়া বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ চলছে।’’
প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, কমিশন এবং কেন্দ্রীয় সরকারেরও কাজ বিএলও-দের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার। কমিশন জানায়, বিএলও-দের নিরাপত্তা দিতে রাজ্যকে সহযোগিতা করতে হবে। তারা সহযোগিতা না করলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হবে।
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী প্রশ্ন করেন, কমিশনের কাছে বিএলও-দের হুমকি দেওয়ার মাত্র একটি অভিযোগ এসেছে। এখনও পর্যন্ত একটিই এফআইআর হয়েছে। এর বাইরে কি আর কোনও ঘটনা নেই? জবাবে কমিশন যুক্তি দেয়, বিএলও-দের নিরাপত্তা দেওয়ার দায় রাজ্যের। কারণ, পুলিশ রাজ্যের অধীনে রয়েছে।
আইনজীবীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে বিএলও-দের ভয় দেখানো হচ্ছে। এসআইআরের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গের এসআইআর মামলার শুনানি শুরু হল। দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে মামলার শুনানি চলছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে ওই মামলার শুনানি হয়। গত শুনানির শুরুতে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এজলাসে জানান, যে সময়সীমার মধ্যে এসআইআর করা হচ্ছে, তাতে বিএলও-দের উপর প্রচুর চাপ তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক বিএলও কাজের চাপ সামলাতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বলেও জানান তিনি। এর পরেই নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাব তলব করে শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার ফের ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এর আগে গত ২৬ নভেম্বর ওই মামলার শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাব তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। শুনানির শুরুতেই উঠে এসেছিল পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির কথা। বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)-দের উপর কাজের চাপ বাড়ছে বলে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তা আদালতের নজরে আনা হয়। উঠে এসেছিল পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক বিএলও-র আত্মহত্যার অভিযোগের কথাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy