বামফ্রন্টের শত আহ্বানেও বাংলায় সমঝোতা বাঁচানোর আর কোনও চেষ্টাই করছে না কংগ্রেস। দলকে ‘নিজের পায়ে’ দাঁড় করানোর লক্ষ্য নিয়ে ৪২টি লোকসভা আসনেই লড়তে চাইছেন সোমেন মিত্রেরা। তাতে ফল যা-ই হোক!
দোলপূর্ণিমার সন্ধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেস নির্বাচন কমিটি বৈঠক করে আরও ২৬ আসনের জন্য প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা তৈরি করে ফেলল। রাজ্যের ১১টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থীদের নাম ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে এআইসিসি। বামেদের প্রতি ‘সৌজন্য’ দেখিয়ে বুধবার কংগ্রেস পাঁচটি আসন ছেড়ে রাখার কথা বলেছিল। যদিও বামেদের জেতা দুই আসন না ছেড়ে ‘হারা’ পাঁচ খালি রেখে কী লাভ হবে, সেই প্রশ্ন উঠেছিল এবং বামফ্রন্টও জানিয়েছিল, জেতা আসন ছাড়া হলে তারা গোটা বিষয়টিই পুনর্বিবেচনা করতে প্রস্তুত। কংগ্রেসের জেতা দুই আসনে প্রার্থীও ঘোষণা করে দিয়েছিল সিপিএম। এই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার প্রদেশ কংগ্রেসও আসানসোল, ডায়মন্ড হারবার-সহ ‘ছেড়ে রাখা’ পাঁচ আসনে প্রার্থী ভেবে রেখেছে। পরিস্থিতি বিচার করে ওই নামগুলি চূড়ান্ত হবে।
বামেদের সঙ্গে জোট নিয়ে কংগ্রেসের প্রবল টানাপড়েন এবং সমঝোতা বানচালের আবহের মধ্যেই কাল, শনিবার মালদহের চাঁচলে সভা করতে আসার কথা রাহুল গাঁধীর। কংগ্রেস সভাপতির বঙ্গ সফরের আগে দলের আরও কোনও প্রার্থীর নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণার সম্ভাবনা কম। কারণ, দিল্লিতে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা ২৫-২৬ মার্চ। রাজ্যে রাহুল এসে বিজেপি এবং সেই সঙ্গে তৃণমূলের সুবিধা হয়ে যাওয়া আটকাতে প্রদেশ কংগ্রেসের একা চলার ইচ্ছায় কোনও হস্তক্ষেপ করেন কি না, সে দিকেই নজর রাখছে রাজনৈতিক শিবির।
নিজেদের কেন্দ্রে ভোটের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকায় অধীর চৌধুরী, আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সি, শঙ্কর মালাকারেরা এ দিনের বৈঠকে আসেননি। অসুস্থতার জন্য আসেননি বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবু ও প্রদেশ সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যেরা অবশ্য বৈঠকে ছিলেন। তবে তার মধ্যেও প্রার্থী বাছাই নিয়ে প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে বিতণ্ডা বাধে ছাত্র পরিষদের সভাপতি সৌরভ প্রসাদের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পরে প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘আমাদের পাঁচ আসন ছাড়ার প্রস্তাব বামেরা তো গ্রহণ করছে না। তারা আমাদের জেতা দুই আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আমরা ২৬ আসনের পাশাপাশি ছেড়ে রাখা পাঁচ আসনের জন্যও প্রার্থীদের নাম ঠিক করে রাখছি। দিল্লিই তার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’ কিন্তু বামেরা তো বারবার বলছে তাদের জেতা দুই আসন থেকে কংগ্রেস সরে এলে সমঝোতার আলোচনা আবার শুরু করা যাবে। তাঁরাই বা পুনর্বিবেচনা করছেন না কেন? প্রদীপবাবুর মতে, ‘‘আমাদের আর পুনর্বিবেচনা করার জায়গা আছে বলে মনে হয় না।’’
বাম শরিকদের সঙ্গে পুরুলিয়া ও বসিরহাট আসন নিয়ে টানাটানি চলছিল কংগ্রেসের। দলীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেসের তালিকায় পুরুলিয়ার জন্য নেপাল মাহাতো ও বসিরহাটে প্রয়াত নেতা কাজী আব্দুল গফ্ফরের ছেলে তথা আর এক বিধায়ক কাজী আব্দুর রহিমের (দিলু) নাম আছে। দিল্লির বৈঠকের জন্য তালিকা ঠিক করে আজ, শুক্রবার শতাব্দী এক্সপ্রেস চেপে রাহুলের সভার জন্য মালদহ রওনা দিচ্ছেন সোমেনবাবুরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy