Advertisement
২৩ মে ২০২৪

‘ফণী’ রোধে প্রতুলের ভরসা ঈশ্বরে, আমন্ত্রণ অপরূপার

হুগলিতে ভোট আগামী সোমবার। তার আগে সব দলেরই প্রচার তুঙ্গে। সকাল-সন্ধ্যা চলছে জনসংযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০১:২৮
Share: Save:

গরমে নাজেহাল বঙ্গবাসীর নজর ‘ফণী’র দিকে। তার প্রভাবে ঝড়বৃষ্টি হলে দহন‌ থেকে মুক্তি মিলবে। স্বস্তির এই বার্তাই অবশ্য চিন্তায় ফেলছে ওঁদের!

ওঁরা হুগলির তিন লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন দলের প্রার্থী এবং কর্মী। তাঁদের চিন্তা, ঝড়বৃষ্টি অন্তিম পর্বের প্রচার ভেস্তে না দেয়।

হুগলিতে ভোট আগামী সোমবার। তার আগে সব দলেরই প্রচার তুঙ্গে। সকাল-সন্ধ্যা চলছে জনসংযোগ। ভোট-ভিক্ষা করতে কেউ ভরদুপুরেও কড়া রোদে মানুষের দোরে হত্যে দিচ্ছেন। এই সুযোগ আর মাত্র সাড়ে তিন দিন (শনিবার বিকেলে প্রচার শেষ)। এমন সন্ধিক্ষণে ‘ফণী’র আগমনের পূর্বাভাস জেলাবাসীকে স্বস্তি দিলেও তাঁদের দিচ্ছে কই!

বড় নেতারা প্রচারে আসছেন না বলে ক্ষোভ রয়েছে কংগ্রেসের নিচুতলায়। তাঁদের আক্ষেপ দূর করতে পারে হুগলি কেন্দ্রে শুক্রবার দলের প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র এবং কেন্দ্রীয় নেতা গৌরব গগৈয়ের সভা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সে দিন যদি দুর্যোগ ঘনায়?

কংগ্রেস-প্রার্থী প্রতুলচন্দ্র সাহা কপালে হাত ঠেকান। ব‌লেন, ‘‘চিন্তার ব্যাপার। তবে আমি ঈশ্বর বিশ্বাসী। ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা, ঝড়জল যেন না হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ঠাসা প্রচার রয়েছে। ঝড় হলে মাঠে মারা যাবে।’’

এখানকার তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগের বিশ্বস্ত অনুগামী, মগরার তৃণমূল নেতা রঘুনাথ ভৌমিক বলেন, ‘‘ঝড়জল হলে প্রচার-সূচিতে সমস্যা হবে। ফণীর গতিবিধির দিকে লক্ষ্য রাখছি।’’ শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট দিলীপ যাদবের বক্তব্য, ‘‘কল্যাণদা সবার আগে মাঠে নেমেছেন। সর্বত্র মানুষের কাছে গিয়েছেন। ঝড়বৃষ্টি হলেও শেষ পর্বের প্রস্তুতিও যেন মসৃণ হয়, দেখতে হবে।’’

হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় রাজনীতির মাঠে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনাকে ঘুরপথে দেখাতে চেয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ফণী নয়, মোদী ঝড় বইবে। সাধারণ মানুষ শান্তি পাবেন। শাসক দলের দাদা-দিদিদের মাথাও ঠান্ডা হবে।’’

অনেকে মুখে বলছেন, ‘ফণী’ নিয়ে ভাবছেন না। হুগলির সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহার দাবি, ‘‘এখন যখন-তখন বৃষ্টি হতে পারে, জানা কথাই। তাই সকাল-সকাল প্রচার সারছি। এক-একটা বিধানসভায় তিন-চার বার ঘুরেছি। কিছু বুথস্লিপ বিলি বাকি আছে। সে—ও হয়ে যাবে।’’ শ্রীরামপুরে বিজেপির যুবনেতা জ্যোতির্ময় চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘ঝড়ঝঞ্ঝা যাই আসুক, দেবজিৎদাকে (দলীয় প্রার্থী দেবজিৎ সরকার) জেতাতে নিজেদের কাজ করে যাব।’’

সোমবার খানাকুলের শাবলসিংহপুরে চড়া রোদে প্রচারে বেরিয়ে এক তৃণমূল নেতা অসুস্থ হয়ে মারা যান‌। সে কথা মনে করিয়ে ওই দলের প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার বলছেন, ঝড়বৃষ্টি হোক। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কর্মীরা স্বস্তি পাবেন। ভিজতে ভয় পাই না। বন্যার সময় ভেজার পাশাপাশি হাঁটুজলেও দাঁড়াতে হয়।’’ এর পরেই যোগ করেন, ‘‘বৃহস্পতিবার যেন দুর্যোগ না হয়। সে দিন দলনেত্রী এবং যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে।’’

‘ফণী’ নিয়ে কথার মাঝে বিজেপির এক যুবকর্মী বলে ওঠেন, ‘‘আমার বক্তৃতার মাঝেই ঝোড়ো হাওয়ায় তৃণমূলের ফ্লেক্স ছিড়ে পড়ল। পাছে ঝড়ের দোষ আমাদের ঘাড়ে চাপায়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE