Advertisement
E-Paper

চড় মারুন, কিন্তু দুঃখ দেবেন না: মমতা

রবিবার বেলপাহাড়িতে নির্বাচনী সভা করেন মমতা। সেখানেই দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের দুর্নীতির কথা স্বীকার করে শুদ্ধকরণের আশ্বাস দেন।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০৩:১৯
 ‘ভুল স্বীকারে’র মধ্য দিয়ে মানুষের আবেগকে ছোঁয়ার চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

‘ভুল স্বীকারে’র মধ্য দিয়ে মানুষের আবেগকে ছোঁয়ার চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

ক্ষোভের উৎস সন্ধান হয়েছিল আগেই। এ বার পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বয়ং নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক দিকে ‘ভুল স্বীকারে’র মধ্য দিয়ে মানুষের আবেগকে ছোঁয়ার চেষ্টা করলেন, পাশাপাশি ‘অন্য দলে’র ভোট পাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে পৌঁছে দিলেন রাজনৈতিক বার্তা।

রবিবার বেলপাহাড়িতে নির্বাচনী সভা করেন মমতা। সেখানেই দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের দুর্নীতির কথা স্বীকার করে শুদ্ধকরণের আশ্বাস দেন। মানুষের আবেগকে ‘সম্মান’ জানিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘তৃণমূল ভাল হোক বা খারাপ হোক, দু’টো চড় মারবেন। আপনাদের পায়ের কাছে পড়ে থাকবে। তৃণমূল না থাকলে উন্নয়নের কাজটা কে করবে?’’ এর পরেই সামান্য সুর চড়িয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এত বার আসার পরেও যখন দেখলাম অন্য দল মাথা তুলেছে (পঞ্চায়েত ভোটে), দুঃখ পেয়েছিলাম। আর দুঃখ দেবেন না। তা হলে আমার অভিমান হতে পারে।’’

‘পরিবর্তনে’র শাসনে অন্যতম বিজ্ঞাপন ছিল ‘জঙ্গলমহল হাসছে’। এই জোড়া শব্দেই গত আট বছরে জঙ্গলমহলে দলের সাফল্য দাবি করেছে তৃণমূল। তবে পঞ্চায়েত ভোটে এই ঝাড়গ্রামের একটা বড় অংশ হাত ছাড়া হয়েছে শাসকদলের। সে কথা মাথায় রেখেই এ দিন মমতা বলেন, ‘‘কখনও কখনও স্থানীয় দু’একজন নেতার উপর রাগ করে মানুষ ভাবে তৃণমূলকে না দিয়ে ভোটটা বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসকে দিই।’’ এর পরেই স্থানীয় ওই নেতাদের ‘কাজে’র দায় ঝেড়ে ফেলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তৃণমূল কাউকে মানুষের থেকে পয়সা নিতে বলে না। মানুষের কাজ করতে কাউকে নিষেধ করে না।’’ দল যে এ সব বরদাস্ত করে না তার প্রমাণ দিতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘যাঁরা এ সব করেন, আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করি। তাড়িয়ে দিই।’’

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘সব জায়গায় সবাই ভাল হয় না। রাজনীতিতে ২ শতাংশ খারাপ লোকও থাকে। তবে ৯৮ শতাংশ লোকই ভাল। আমি চোর? পার্থদা (চট্টোপাধ্যায়) চোর? সবাই চোর নয়।’’ এই প্রসঙ্গেই বেলপাহাড়ির এক নেতার কথাও উল্লেখ করেন তৃণমূলনেত্রী। স্থানীয় স্তরের ওই নেতার দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ক্ষোভ থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু আপনারা তো তাঁদের হারিয়ে দিয়েছেন!’’ বস্তুত, এ দিন দাঁতন ও গোয়ালতোড়ের দুটি সভাতেও এ ভাবেই কোনও কোনও স্থানীয় নেতার ‘কাজে’র উল্লেখ করে সমালোচনা করেছেন মমতা।

এ দিনের বক্তৃতার প্রথম পর্বে মানুষের আবেগকে ‘মর্যাদা’ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর দ্বিতীয় পর্বে ঢুকেছেন রাজনৈতিক প্রসঙ্গে। সরাসরি আবেদন করেছেন, ‘‘বিজেপি আপনাদের (আদিবাসী সমাজের) নেতাদের দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে ভোট দিতে বলে। কিন্তু আপনাদের প্রয়োজনের কথা বলে না।’’ এ সময়েই দর্শকাসন থেকে এক যুবক চিৎকার করে বলেন, ‘‘দিদি, আমরা চাকরি পাব না?’’ সে কথা শুনেই নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থানে রাজ্য সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে তা বলতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে জানিয়ে দেন, তৃণমূল গত আট বছরে ওই এলাকার উন্নয়নে কী কী করেছে।

আজ, সোমবার এই ঝাড়গ্রামেই দলের নির্বাচনী সভায় যোগ দেবেন নরেন্দ্র মোদী। সে দিকে ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রীর এ দিন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘মোদী সরকার তো পাঁচ বছর পেরিয়েছে। এই পাঁচ বছরে কখনও তিনি খোঁজ নিয়েছেন জঙ্গলমহলের?’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ‘‘ওঁরা বসন্তের কোকিল। ভোটের সময় কুহু কুহু করে। আমরা ৩৬৫ দিনের দাঁড় কাক।’’

Lok Sabha Election 2019 Election Phase 5 Mamata Banerjee TMC BJP Belpahari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy