পঞ্চায়েত অফিসে ‘কৃষকবন্ধু’র চেক বিলি করছিলেন প্রধান। বারে বারেই তার মুখে শোনা যাচ্ছিল হুমকি। লোকসভা নির্বাচনে শাসকদল তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট না দিলে সরকারি কোনও সুযোগ সুবিধা আর মিলবে না। ভোটটা তৃণমূলকেই দিতে হবে। না হলে কেড়ে নেওয়া হবে কৃষকদের পরিচয়পত্র। ভবিষ্যতে মিলবে না কৃষকবন্ধুর চেক। মৃত্যুর পর পরিবার পাবে না ক্ষতিপূরণও। গোটা ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোগালী-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মোদাস্সর হোসেনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাবে বলে জানিয়েছে বিরোধীরা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর সাধারণত সরকারি প্রকল্পের কোনও চেকই বিলি করা যায় না। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে কমিশন। এ দিন রাজ্যের অতিরিক্ত নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘আমাদের মিডিয়া ওয়াচের মাধ্যমে বিষয়টি নজরে এসেছে। জেলার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।’’
রাজ্য সরকার কয়েক মাস আগেই কৃষকদের জন্য একটি প্রকল্প ঘোষণা করে। রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, এক একর জমি চাষের জন্য বছরে চাষিদের দেওয়া হবে ৫ হাজার টাকা। জমির পরিমাণ অনুযায়ী বছরে সর্বনিম্ন দু’হাজার টাকা মিলবে। ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে কোনও কৃষক মারা গেলে এককালীন দু’লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। গত ১ জানুয়ারি থেকে এই প্রকল্প কার্যকর হয়েছে। সোমবার সেই প্রকল্পেরই প্রথম দফার চেক বিলি করছিলেন মোদাস্সর। প্রায় ৬০০ চেক বিলি করার কথা ছিল। সেখানে মোদাস্সর উপস্থিত কৃষকদের বলেন, ‘‘আগামী যে লোকসভা নির্বাচন আসছে, প্রত্যেকের যেন মাথায় থাকে, চেকটা দিচ্ছি আমরা। ভোটটাও আমাদের দিতে হবে।’’