সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ রূপায়ণের জন্য পড়ুয়াদের দিয়ে ফর্ম ভর্তি করার গুজবকে কেন্দ্র করে তাণ্ডব চলল হাওড়ার একটি হাইমাদ্রাসায়। কয়েক হাজার মানুষের মারমুখী বিক্ষোভের জেরে স্কুলের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রইল পড়ুয়ারা। স্কুলের টিচার ইনচার্জকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে স্কুলের দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করল জনতা। বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ এসে টিচার ইনচার্জকে স্কুল থেকে বার করতে গেলে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। ইটের আঘাতে রক্তাক্ত হন ওই শিক্ষক এবং কিছু পুলিশ অফিসার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত তিন সপ্তাহ আগে। হাওড়ার নাজিরগঞ্জ পাঁচপাড়ার হাইমাদ্রাসায় একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বাংলা হরফে লেখা একটি ফর্ম পড়ুয়াদের দেওয়ার জন্য মাদ্রাসার টিচার-ইনচার্জ বুদ্ধদেব দাসের হাতে দেয়। ওই ফর্মে পড়ুয়াদের সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য লিখে দিতে বলা হয়। পুলিশ জানায়, ওই ফর্ম নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের হাতে বুদ্ধদেববাবুই দেন বিলি করার জন্য। সোমবার এক অভিভাবক মেয়ের কাছে ফর্মটি দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁর বক্তব্য, ওই ফর্মের ভাষা দেখে মনে হচ্ছে, এটি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংক্রান্ত ফর্ম।
ওই ব্যক্তির এই ধারণা পরের দিন এলাকায় আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার মাদ্রাসা খুলতেই বেলা ১১টা থেকে বাসিন্দারা দলে দলে এসে হাজির হন মাদ্রাসার সামনে। কয়েক হাজার মানুষ মাদ্রাসা ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, মাদ্রাসার টিচার ইনচার্জ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পড়ুয়াদের দিয়ে সিএএ-র ওই ফর্ম পূরণ করে কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে চাইছেন। জনতা টিচার ইনচার্জকে সামনে পেয়ে গালিগালাজ দিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দিতে থাকে। অন্য শিক্ষকদের ঘরে বন্ধ করে রাখা হয়।