চলছে কর্মিসভা।— নিজস্ব চিত্র।
মইনুলের বুধবারের কর্মিসভা কার্যত জনসভার চেহারা নিল। সেখান থেকে মইনুলের বার্তা তৃণমূল নয়, কংগ্রেসেই থাকছেন তিনি।
রবিবার সুতিতে দলীয় সভায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন দাবি করেন ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন। এরপরেই মইনুলের তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়। মইনুল নিজে সে দিন দলবদলের খবর উড়িয়ে দিলেও তিনি যে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট দোটানায় রয়েছেন, তা বুঝতে দেরি হয়নি ওই মহলের। মইনুল কী করেন, তা নিয়ে কৌতূহলী ছিলেন সিপিএম নেতারাও।
দ্বন্দ্ব কাটাতে বুধবার মইনুল তাঁর অনুগামীদের নিয়ে ফরাক্কায় কর্মিসভা ডাকেন। জেলার রাজনৈতিক মহলের নজর ছিল বুধবারের কর্মিসভার দিকে। মইনুল রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সম্পাদক। জম্মু কাশ্মীরের দলীয় পর্যবেক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও আছেন তিনি। ফরাক্কায় বরাবরই প্রভাব রয়েছে তাঁর। ১৯৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত চার বার বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন তিনি। এ হেন মইনুল দলবদলে তৃণমূলে যোগ দিলে তা কংগ্রেসের কাছে বড় ধাক্কা ছিল। শেষমেষ তেমনটা না হওয়ায় স্বস্তি কংগ্রেসে। তবে জেলা রাজনীতিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কোনও কালেই তেমন ভাল নয়।
‘‘গোটাটাই আসলে রটনা ছিল’’— দাবি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আবু হেনার। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে নানা ধরণের রটনা হয়। মইনুলকে নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে সে জাতীয় রটনা বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ বুধবারের কর্মিসভায় মইনুল কেমন সাড়া পাবেন তা নিয়ে কৌতূহলী ছিলেন জেলা কংগ্রেস নেতাদের অনেকে। কিন্তু দেখা গেল ফরাক্কায় মইনুল দুর্গ এখনও মজবুত।
এ দিন বিকেল চারটে থেকে ফরাক্কার কলেজ অডিটরিয়ামে সভা শুরু হবে, এমনটাই সিদ্ধান্ত ছিল। চারটে বাজতে দেখা যায় কলেজ চত্বরের কর্মিসভা কার্যত জনসভার রূপ নিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে কলেজ লাগোয়া মাঠে মাইক লাগিয়ে শুরু হয় জনসভা। মইনুল এ দিন কার্যত শ্রোতার ভূমিকায় ছিলেন। একে কর্মীরা বক্তব্য রাখেন। কারও প্রশ্ন, ‘ফরাক্কার লাল দুর্গকে ভেঙে লড়াই করে কংগ্রেসকে দাঁড় করিয়েছে কর্মীরা। তার জোরেই ২০ বছরের বিধায়ক পদ নিশ্চিত হয়েছে ফরাক্কায়। সেই সংগঠনকে অন্যের হাতে তুলে দেব কেন?’ কেউ বলেছেন, ‘যদি শাসক দলেই যদি থাকতে হয় তা হলে বিজেপি নয় কেন?’ কারও জবাব, ‘কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক হিসেবে জম্মু কাশ্মীরের পর্যবেক্ষক হওয়ার সম্মান দিয়েছে কংগ্রেস।
সেই দল ছেড়ে যাওয়া মানে আত্মাহুতির সামিল।’
একে একে ২৪ জন নেতা ও কর্মী জানিয়েছেন তাঁদের মতামত। পৌনে দু’ঘণ্টা মইনুল এক টানা শুনে গেছেন সকলের কথা। সবশেষে মইনুল জবাব দিয়েছেন ১৬ মিনিট ধরে। সকলের কথা শুনে আপ্লুত মইনুল জানান তিনি কংগ্রেসে আছেন, কংগ্রেসেই থাকতে চান। তিনি বলেন, ‘‘সব কিছু ভুলে ফরাক্কায় দলটাকে আবার নতুন করে গড়ে তুলি। কাল থেকেই সবাই মাঠে নামুন। সব কিছুর মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy