Advertisement
১০ অক্টোবর ২০২৪
হুগলিতে প্রশাসনিক বৈঠক

সমন্বয়ের অভাব, দলকে সতর্ক করলেন মমতা

রাজ্যের বন্ধ হয়ে যাওয়া চটকলগুলির দরজা খুলতে ইতিমধ্যেই আসানসোলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর একপ্রস্থ কথা হয়েছে। মঙ্গলবার চুঁচুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সে কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চটকলগুলির হাল ফেরাতে ওদের আরও বেশি বরাত জরুরি। কেন্দ্রের বরাতের উপর বিষয়টি নির্ভরশীল।

জলপথে। মঙ্গলবার হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

জলপথে। মঙ্গলবার হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৫ ০৩:৩৭
Share: Save:

রাজ্যের বন্ধ হয়ে যাওয়া চটকলগুলির দরজা খুলতে ইতিমধ্যেই আসানসোলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর একপ্রস্থ কথা হয়েছে।

মঙ্গলবার চুঁচুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সে কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চটকলগুলির হাল ফেরাতে ওদের আরও বেশি বরাত জরুরি। কেন্দ্রের বরাতের উপর বিষয়টি নির্ভরশীল। চটের ব্যবহার বাড়াতে হবে। খাদ্যশস্য অনেক বেশি বেশি করে বস্তায় মজুত করতে হবে। না হলে চটকলগুলি বাঁচবে না।”

বস্তুত রাজ্যের ৫৯টি চটকলই বর্তমানে বেহাল। হুগলি শিল্পাঞ্চলেই অন্তত ১৪টি রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি বন্ধ। অন্যগুলি ধুঁকছে। এই অবস্থায় হুগলি শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি যে আদৌ সুখকর নয়, তা বুঝতে পেরেই এদিন বিষয়টি পুরোপুরি কেন্দ্রের কোর্টে ঠেলে দিয়ে অস্বস্তি এড়াতে চেয়েছেন তিনি।

হুগলি জেলা পরিষদে এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রশাসনের কর্মযজ্ঞের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। মোট ৪৫টি প্রকল্পের এদিন শিলান্যাস করেন। কেন আরও কাজ করা যায়নি, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বছর বছর নির্বাচনকেই দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘পাঁচ বছর মেয়াদের মধ্যে চার বছর কাজ করার সময় পাওয়া যায়। তার মধ্যে আবার প্রতি বছর নির্বাচন পড়ে যাচ্ছে। আর সে জন্যই ইচ্ছা থাকলেও দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা যাচ্ছে না।”


বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গকে যোগ করতে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা খরচে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। হাওড়া, আরামবাগ, বধর্মান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ হয়ে যা বিভিন্ন জেলাকে যুক্ত করবে। কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।” চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের মধ্যে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার কথা জানানোর পাশাপাশি শ্রীরামপুরে একটি বন্ধ সরকারি সুতো কল ফের চালু করার ব্যাপারে এদিন সিদ্ধান্ত হয়। তিনি বলেন, ‘‘৪০ কোটি টাকা খরচ করে মিলটি চাঙ্গা করা হবে।”

বলাগড়ে গঙ্গার উপর একটি চর (সবুজদ্বীপ) রয়েছে। সেখানে এক সময় জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে একটি পার্ক গড়ে তোলা হয়েছিল। যদিও পরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা নষ্ট হয়ে যায়। এদিন ফের সবুজদ্বীপকে ঘিরে নতুন পর্যটন কেন্দ্রের কথা ঘোষণা করে মমতা জানান, এর জন্য ডিপিআর (প্রকল্প) তৈরি হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে।

তবে যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি এদিন কাজের তালিকা মেলে ধরলেন সেই জেলা পরিষদেই সভাধিপতির ভূমিকা নিয়ে দলের অন্দরেই যে অসন্তোষ রয়েছে তা মমতা জানেন। আর সেজন্যই এদিনের বৈঠকে তাঁর সতর্কবার্তা, “আমরা কলকাতা থেকে এখানে বৈঠকে এসেছি। সবার মধ্যেই সমন্বয় রয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদের কাজ নিয়ে নানা সময়ে সমন্বয়ের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।” সভাধিপতি মেহেবুব রহমানকে সবার সঙ্গে ঐক্যের ভিত্তিতে কাজ করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “সভাধিপতি যেমন সমন্বয় রেখে কাজ করবেন। অন্যদেরও উচিত তাঁর সঙ্গে কাজের ক্ষেত্রে তা মেনে চলা।”

এখন দেখার, জেলাপরিষদে চলতে থাকা ঠান্ডা লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ দাঁড়ি টানতে পারে কি না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE