Advertisement
E-Paper

আবার নবীন-প্রবীণ প্রসঙ্গ মমতার মুখে, হুঁশিয়ারি দলে গোষ্ঠীলড়াই নিয়েও, ভোটের আগেই ‘কড়া বার্তা’ দিদির

বয়সবিধি নিয়ে মমতা এবং অভিষেকের মতামত তৃণমূলের মধ্যে মন্থন তৈরি করেছে। সেই আবহেই মমতা বৃহস্পতিবার বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রবীণ নেতাদের যথাযথ মর্যাদা দিতেই হবে। পাশাপাশি রাখতে হবে নবীনদেরও।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:০৪
Mamata Banerjee gave a strong message to TMC to prevent Group conflicts dgtl

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

গত ২৪ নভেম্বর নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে দলে নবীন-প্রবীণ ‘দ্বন্দ্ব’ নিয়ে সমন্বয়ের বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকে শাসকদলে কী তোলপাড় চলেছে, তা সর্বজনবিদিত। নেতাজি ইন্ডোরের সভার ৩৪ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার প্রকাশ্য কর্মসূচি থেকে ফের এক বার নবীন-প্রবীণ ‘বিবাদ’ মেটানোর বার্তা দিলেন মমতা। পাশাপাশিই উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ রুখতেও কড়া বার্তা দিয়েছেন দিদি।

বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় তৃণমূলের কর্মিসভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘সিনিয়র লিডারদের মর্যাদা দিতে হবে! এটা আমি বার বার বলছি। পুরনো চাল কিন্তু ভাতে বাড়ে। আর নতুন চাল আগে বাড়ে। দুটো চালকেই আমার দরকার।’’

গত কয়েক দিন ধরেই জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম এবং ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের দ্বন্দ্বে শিল্পাঞ্চলের রাজনীতি উত্তপ্ত। সেই আবহে স্থানীয় স্তরে কোন্দল রুখতেও মমতা কড়া বার্তা দিয়েছেন বৃহস্পতিবারের সভা থেকে। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় স্তরে কোনও নেতা যদি ভাবেন, তিনি বড় হয়ে গিয়েছেন, তা তৃণমূলে করা যাবে না। কোনও ঝগড়া বরদাস্ত করব না। স্থানীয় ঝগড়ার জন্য যে কর্মীরা ঘরে বসে রয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনুন।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘নিজের ভাল করার জন্য তৃণমূল নয়। মানুষের ভাল করার জন্য তৃণমূল। কেউ কেউ নিজেকে কেউকেটা ভাবছেন। দল সব বিষয়ে নজর রাখছে। আমার নজরও রয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, নেতাজি ইন্ডোরের প্রকাশ্যে মমতা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বয়স তাঁর কাছে রাজনীতিতে থাকার ‘মানদণ্ড’ নয়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সৌগতদা (সাংসদ সৌগত রায়) খালি বলেন, বয়স হয়ে যাচ্ছে। আরে বয়স আবার কী! মনের বয়সটাই আসল।’’ তার পর আবার তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘কেউ যদি ভাবেন দেহত্যাগ না করলে পদত্যাগ করবেন না, তা হলে দলটা ক্রমশ সিপিএমের বৃদ্ধতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবে।’’ কুণালের সেই কথার পর দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন করে রাজনীতিতে বয়সবিধির পক্ষে সওয়াল করেন। অভিষেক বলেন, তিনি মনে করেন, অন্য সব পেশার মতো রাজনীতিতেও অবসরের বয়স থাকা উচিত। সেটা ৬৫ বছর হওয়া উচিত। তবে অভিষেক এ-ও বলেছিলেন, রাজনীতিতে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাও প্রয়োজন। তার পরে আবার ওই বয়সবিধি নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে বয়স হলে কর্মক্ষমতা কমে। কিন্তু সেটা চাকরির ক্ষেত্রে। আমরা তো চাকরি করছি না। রাজনীতিকরা হলেন স্বেচ্ছাসেবকদের মতো। আমাদের দলনেত্রী যা বলবেন, আমরা সেটাই করব।’’ তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাই কোর্টে প্রবীণ আইনজীবীদের উদাহরণ দিয়ে জানান, কর্মক্ষমতাই হল আসল। বয়স নয়।

বয়সবিধি নিয়ে মমতা এবং অভিষেকের মতামত তৃণমূলের মধ্যে এমনই মন্থন তৈরি করেছে। সেই আবহেই মমতা বৃহস্পতিবার বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রবীণ নেতাদের যথাযথ মর্যাদা দিতেই হবে। পাশাপাশি রাখতে হবে নবীনদেরও। দলের সর্বময় নেত্রীর এই মন্তব্য তৃণমূলের অভ্যন্তরে এই বিতর্ককে আরও উস্কে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ওই সভা থেকেই উত্তর ২৪ পরগনার দলীয় সংগঠন পরিচালনার জন্য আবার একটি কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছেন মমতা। যার চেয়ারম্যান করা হয়েছে পানিহাটির বিধায়ক তথা বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষকে। কমিটিতে রাখা হয়েছে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, সুজিত বসু, রথীন ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পার্থ ভৌমিক, তাপস রায়, বীণা মণ্ডল, হাজি নুরুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ দাস, নারায়ণ গোস্বামী, সুকুমার মাহাতো, রফিকুল ইসলাম মণ্ডল, রফিকুর রহমান, এটিএম আব্দুল্লাহ, সুরজিৎ বিশ্বাস, প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, তাপস দাশগুপ্ত এবং গোবিন্দ দাসকে।

Mamata Banerjee Jyotipriya Mallick Nirmal Ghosh TMC Leaders Lok Sabha Election 2024
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy