শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে ফিরলেন ‘দলনেত্রী’। বৃহস্পতিবার ঘাটালে বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিলেন না তিনি। তবে ‘আমাদের দল’, ‘দলনেত্রী’ শব্দবন্ধগুলি প্রকাশ্য সভায় ফের শোনা গেল তৃণমূলের এই দাপুটে মন্ত্রীর মুখে। নন্দীগ্রামের বিধায়ক মনে করালেন, ‘দলনেত্রী’ই এক সময় তাঁকে সাংগঠনিক দায়িত্ব, ভোটের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
ঘটনাচক্রে এ দিনই মমতা ও তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব মুছে শুভেন্দুকে ফের সক্রিয় ভাবে দলের মূলস্রোতে ফেরানোর বার্তা দাবি ও আবেদন আকারে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ফেসবুক পেজের পাশাপাশি শুভেন্দুর সঙ্গে সংযুক্ত সমাজমাধ্যমেও অনেকেই ‘দ্রুত সংসার জোড়া দেওয়া’র কথা লিখেছেন।
বস্তুত, শুভেন্দুর সঙ্গে দলের দূরত্বের আবহে বুধবারই কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতত্ব। তার পরে এই সব ঘটনাক্রম তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। দু’দিন আগেই নন্দীগ্রাম থেকে সুর চড়িয়ে ‘রাজনৈতিক মঞ্চে লড়াই’য়ের বার্তা দিয়েছিলেন শুভেন্দু। গত মঙ্গলবারের সেই বক্তব্যে একটি বারের জন্যও শুভেন্দুর মুখে দলনেত্রী বা দলের কথা শোনা যায়নি। তবে এ দিন শুভেন্দুর স্বীকারোক্তি, “২০১১ সালে দলনেত্রীর নেতৃত্বে গোটা লড়াইটা হয়েছিল। ঘাটালে তখন দলনেত্রী আমায় দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ঘাটালে আমাদের দলের প্রার্থী মার খেয়েছিলেন। আমি একা ছুটে এসেছি। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলাম।”
আরও পডুন: টেস্ট বাতিলে ক্ষতির আশঙ্কা পড়ুয়াদের
স্মৃতিচারণায় শুভেন্দু বলেন, “২০১০ সালে দল আমাকে ঘাটালের পাঁচটি পুরসভার দায়িত্ব দিয়েছিল। তখন আমাদের প্রার্থী দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। হুডখোলা গাড়ি, এত বৈভব ছিল না। শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম। এক এক করে পুরসভা হাতে এসেছিল।” ঘাটালের আবেগ মাথায় রেখে বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে বীরসিংহের সঙ্গে তাঁর নিরন্তর যোগাযোগও মনে করিয়েছেন শুভেন্দু।
শুভেন্দুর দলহীন জনসংযোগ, সরকারি ও দলীয় অনুষ্ঠান এড়িয়ে যাওয়া, ‘দাদার অনুগামী’দের নানা কর্মকাণ্ড তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা বাড়িয়েছে। নন্দীগ্রামের সভায় শুভেন্দুর গলায় ‘ভারতমাতা জিন্দাবাদ’ তাঁর পদ্ম-শিবিরে যাওয়া নিয়ে চর্চাতেও অক্সিজেন জুগিয়েছিল। এ দিন তেমন ইঙ্গিতপূর্ণ কিছু না বললেও শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা চরৈবেতি চরৈবেতি মন্ত্রে এগোব। অন্যরা দেখবে আর জ্বলবে।” এ প্রসঙ্গে ট্রাকের পিছনে লেখা চেনা দু’লাইনও বলতে শোনা যায় পরিবহণ মন্ত্রীকে।
ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুল মাঠের ওই অনুষ্ঠানে শুভেন্দু মিনিট পনেরো ছিলেন। জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তপন দত্ত, কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি, খড়ারের উপ-পুরপ্রধান অরূপ রায়, গড়বেতা-৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকাশদীপ সিংহের মতো তৃণমূলের বহু নেতাই হাজির ছিলেন। পরে একটি কালীপুজোরও উদ্বোধন করেন শুভেন্দু।
শুভেন্দুর মুখে ‘দল’, ‘দলনেত্রী’র কথা ফিরে আসায় চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, ‘‘যাঁরা সত্যিকারের তৃণমূলের সৈনিক, তৃণমূলকে ভালবাসেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে তাঁরা সবাই নস্টালজিক হয়ে পড়বেন। তাঁর সংগ্রাম ও উন্নয়নের জোয়ার কেউ ভুলতে পারবেন না। সে কথাই শুভেন্দু ব্যক্ত করেছেন। ওঁকে ধন্যবাদ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy