Advertisement
১১ মে ২০২৪

কালীঘাটে জরুরি বৈঠক ডেকে আচমকা রদবদলে মমতা, বাদ গেলেন দীনেশ

মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার আগে দলীয় সংগঠনে রদবদল শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক করলেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার সব সিনিয়র সদস্য, সাংসদ এবং বেশ কয়েক জন বিধায়ককে নিয়ে।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাচ্ছেন মমতা। গাড়িতে সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাচ্ছেন মমতা। গাড়িতে সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৬ ২০:৫১
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার আগে দলীয় সংগঠনে রদবদল শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক করলেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার সব সিনিয়র সদস্য, সাংসদ এবং বেশ কয়েক জন বিধায়ককে নিয়ে। সেখান থেকেই বেরিয়ে এল একের পর এক রদবদলের খবর। তবে, দলের বিতর্কিত সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে এ দিনের বৈঠকে যোগ দিতে বারণ করে দেওয়া হয়েছিল বলে দলীয় সূত্রের খবর।

সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাচ্ছে নদিয়া জেলা তৃণমূল। নদিয়ার পর্যবেক্ষক ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৈঠকে মমতা এ দিন ঘোষণা করেন, পার্থবাবুকে ওই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বদলে নদিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দলনেত্রীর ঘোষণা, নদিয়ার সাংগঠনিক কাজ দেখভালের বিষয়ে অভিষেক মাঝেমধ্যে মুকুল রায়ের পরামর্শ নেবেন। এখানেই শেষ নয়, রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম এবং রানাঘাট দক্ষিণের দুই ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতিকেও সরিয়ে দিয়েছেন মমতা। ওই দুই কেন্দ্রেই এ বার হেরেছে দল। নদিয়ার ফলাফল নিয়ে মমতার উষ্মা এতই যে শুধু দলীয় স্তরে রদবদল করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। বাড়ির বৈঠক থেকেই জানিয়ে দিয়েছেন ওই জেলার প্রশাসনিক স্তরে রদবদলের সিদ্ধান্তও। জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদ থেকে বাণীকুমার রায়কেও সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন মমতা।

মালদহ নিয়েও এ দিনের বৈঠকে মমতার অসন্তোষ দেখা গিয়েছে‌। ওই জেলায় দলের ফল সবচেয়ে খারাপ। একটিও আসন মেলেনি। মমতা এ দিন মালদহ জেলা তৃণমূলের কোর কমিটি ভেঙে দিয়েছেন। খুব শীঘ্রই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বে রদবদল হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

দার্জিলিং জেলাতেও তৃণমূলের কপালে কোনও আসন জোটেনি। দলনেত্রী জানান, সেখানকার সংগঠন ঢেলে সাজতে হবে। অরূপ বিশ্বাস দার্জিলিংয়ে দলীয় কাজ পর্যবেক্ষণ করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রাজ্যজুড়ে তৃণমূল ঝড়ের মধ্যেও অনেকগুলি আসনে তৃণমূলের অপ্রত্যাশিত হার হয়েছে। হেরেছেন বেশ কয়েক জন মন্ত্রীও। ফলাফল পর্যালোচনা করার পর অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এ দিন মমতা আট সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন। মুকুল রায়, সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাসেরা এই কমিটিতে রয়েছেন। অন্তর্ঘাতের সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে এই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তাপস পাল। ছবি: প্রদীপ আদক।

দীনেশ ত্রিবেদীকে এ দিনের বৈঠকে যোগ দিতে বারণ করে দেওয়া হয়েছিল। ব্যারাকপুরের সাংসদ দীনেশের বিরুদ্ধে দল যে কঠোর অবস্থান নিতে চলেছে, তা এ দিন মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। ধমক শুনতে হয়েছে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকেও। কাকলি-সব্যসাচীর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন উত্তর ২৪ পরগনার সীমানা ছাড়িয়ে গোটা রাজ্যেই চর্চার বিষয়। অবিলম্বে এই কোন্দল বন্ধ না হলে কাকলি এবং সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি বাধ্য হবেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনের বৈঠকে হুঁশিয়ারি দেন।

তৃণমূলর সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই আরও বেশ কিছু রদবদল হতে চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE