Advertisement
০৭ মে ২০২৪

নমাজ শেষেই গুলিতে ঝাঁঝরা

ইদের সকালে নমাজ শেষে ইদগাহ থেকে বেরোচ্ছিলেন মানুষজন। হঠাৎই গুলির আওয়াজ। হুড়োহুড়ি করে পালাতে থাকেন সকলে। পালানোর চেষ্টা করছিলেন এক প্রৌঢ়ও। কিন্তু আততায়ীদের পর-পর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান তিনি।

গুলিবিদ্ধ শেখ আমিন। মঙ্গলবার বিকাশ মশানের তোলা ছবি।

গুলিবিদ্ধ শেখ আমিন। মঙ্গলবার বিকাশ মশানের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৫
Share: Save:

ইদের সকালে নমাজ শেষে ইদগাহ থেকে বেরোচ্ছিলেন মানুষজন। হঠাৎই গুলির আওয়াজ। হুড়োহুড়ি করে পালাতে থাকেন সকলে। পালানোর চেষ্টা করছিলেন এক প্রৌঢ়ও। কিন্তু আততায়ীদের পর-পর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান তিনি।

মঙ্গলবার সকালে দুর্গাপুরের লাউদোহায় কৈলাসপুর গ্রামে শেখ আমিন (৫২) নামে ওই ব্যক্তিকে খুন করে হেঁটে এলাকা ছাড়ে সাত আততায়ী। গুলিতে জখম হন আমিনের সঙ্গী মোজাহার হোসেন। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) বিমলচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের অন্তর্দ্বন্দ্বেই এই ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। আততায়ীদের খোঁজ চলছে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আমিন এক সময়ে এলাকায় কয়লা-মাফিয়া হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বর্ধমান-বীরভূমের নানা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ২১টি খুনের মামলা ছাড়াও বেআইনি কয়লা কারবার, হামলা-মারধরের নানা অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছেন।

লাউদোহায় কয়লা পাচারকারীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন-জখম নতুন নয়। এক সময়ে এই কারবারের রাশ ছিল শেখ সেলিমের হাতে। আমিন ছিলেন তাঁর সঙ্গী। পরে দু’জনের মধ্যে বিবাদ শুরু হওয়ায় দল ভাগ হয়ে যায়। তার পর থেকে এলাকায় সেলিম ও আমিনের অনুগামীদের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। বছর চারেক আগে গুলিতে খুন হন সেলিম। সেই ঘটনার সময়ে অন্য খুনের মামলায় জেলে ছিলেন আমিন। কিন্তু জামিন পেয়ে বেরোতেই সেলিমকে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ধরা হয় আমিনের শাগরেদ শেখ শাজাহানকেও। বছর দুয়েক আগে দু’জনেই জামিনে মুক্তি পান।

স্থানীয় সূত্রের খবর, জেল থেকে ফেরার পরে এলাকায় কর্তৃত্ব দখল করছিলেন শাজাহান। তাই আমিনের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ে। আমির মোরামের ব্যবসায় নামেন। কিন্তু একই ব্যবসা শুরু করেন শাজাহানের এক অনুগামী। ফলে, পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। পুলিশের ধারণা, এ দিন সকাল থেকে আততায়ীরা আমিনকে চোখে চোখে রেখেছিল। নমাজ শেষে তিনি বেরোতেই তারা ৯ মিলিমিটার পিস্তল গুলি-বৃষ্টি করে। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, আততায়ীরা ঘটনাস্থল লাগোয়া ধান-জমিতে আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল। পুলিশ সে দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখছে।

নিহতের পরিবার পুলিশের কাছে শাজাহান-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছে। আমিনের মেয়ে শামিমা বেগমের অভিযোগ, ‘‘শাজাহানের জামিনের টাকা বাবা দিয়েছিল। ঝামেলা এড়াতে ইদানীং বাবা মোরাম ব্যবসা ছেড়ে চাষবাস করছিলেন। তা সত্ত্বেও ইদের দিন ওঁকে এ ভাবে খুন করল ওরা!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Fire Mosque
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE