সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গির রিপোর্ট দেরিতে আসার ট্র্যাডিশন থামছে না। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পরে রোগী মারা যাচ্ছেন। কিন্তু রক্তের রিপোর্ট আসছে তার তিন দিন পরে, এমনটাও ঘটছে।
গত শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় বেবিরাণী বিশ্বাস নামে ৫৬ বছরের এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়। কিন্তু তাকে ডেঙ্গি বলে স্বীকার করেনি স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার রাতে তাঁর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছয়। তাতে দেখা যায়, বেবিরাণীর ডেঙ্গিই হয়েছিল। বুধবার সে কথা ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য ভবন। এই ঘটনা থেকে কি তাঁরা আদৌ কোনও শিক্ষা নিচ্ছেন? স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি। তিনি জানিয়েছেন, এ দিন নতুন করে আরও ১৯০ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। এই নিয়ে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩২০১। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে সতর্ক থাকুন। মানুষকে সচেতন করুন। এলাকায় এলাকায় মানুষের পাশে থাকুন।’’
কিন্তু এ বার যেখানে ডেঙ্গি তিন দিনেই শক সিনড্রোমে পৌঁছচ্ছে, সেখানে সরকারি হাসপাতাল সাত দিনেও রিপোর্ট দিতে পারছে না! পরজীবী বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দেরিতে ডেঙ্গি আরও জটিল হচ্ছে। রিপোর্ট পেতে কেন সাত দিন লাগছে? হাসপাতালগুলি জানাচ্ছে, এক একটি কিট-এ যে হেতু অনেক রোগীর পরীক্ষা হয়, তাই নির্দিষ্ট সংখ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যে দিন রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, সে দিনই পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। পর্যাপ্ত নমুনা সংগ্রহ হলে তার পরে পরীক্ষা হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাতে ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন আরও এক জন। প্রীতম ঘোষ (২২) নামে ডোমজুড়ের ওই বাসিন্দার মৃত্যু হয় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। গত ১৪ তারিখ তিনি জ্বর নিয়ে ভর্তি হন। মহম্মদ ফাহিম নামে টিকিয়াপাড়ার এক জন ২৭ জুলাই মারা যান। শুধু হাওড়াতেই আক্রান্ত ১৫৭ জন। পশ্চিম মেদিনীপুরে আক্রান্ত ৯৯ জন। বেসরকারি হিসেবে আক্রান্ত অন্তত দেড়শো। তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার দাবি, “মাত্র পাঁচ জন হাসপাতালে ভর্তি। বাকিরা সুস্থ। পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগের কিছু হয়নি!’’ বুধবার সকালেও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পূর্ণ মান্না নামে জ্বরে আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, তাঁর মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে। যদিও তাঁর ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্ট আগামী সোমবারের আগে মিলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy