বদলাচ্ছে কৃষি আবহাওয়া, বদলাচ্ছে চিরাচরিত চাষের ধ্যান-ধারণা। মাটি আর আবহাওয়ার প্রতিকূলতার সঙ্গে চাষিরা কী ভাবে যুঝবেন? এ রাজ্যে পার্বত্য, তরাই, লাল মৃত্তিকা আর উপকূলের মাটিতে সময়োপযোগী ও মানানসই কৃষি ব্যবস্থায় খাদ্য নিরাপত্তার উন্নত পরিবেশ তৈরি করার বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক হলে দু’দিনের আলোচনা সভা বসছে। উদ্বোধক রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পুর্ণেন্দু বসু।
জাতীয় আলোচনা সভা বলে উল্লেখ করা হলেও বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হওয়ায় প্রতিবেশী বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ গবেষকও এই সভায় যোগ দিচ্ছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম বড় বিশ্ববিদ্যালয়। ময়মনসিংহ ও রাজশাহীতে প্রতিকূল মাটিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে এখন বেশ কিছু গবেষক কাজ করছেন। ২০২০ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের কৃষিজমিতে মানাসই কৃষি ব্যবস্থা ও বহুমুখী খামার পরিকল্পনায় চাষিদের অনুপ্রাণিত করতে না পারলে যে খাদ্য নিরাপত্তায় বড়সড় বিপর্যয় আসতে পারে তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। এ রাজ্য-সহ দেশের কম-বেশি সবক’টি রাজ্য থেকেই প্রায় ২০০টি গবেষণাপত্রও জমা পড়েছে এই বিষয়ে।
কেন্দ্রীয় পাট ও তন্তু গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন অধিকর্তা বিকাশ সিংহ মহাপাত্র এখন উত্তরাখন্ডে পন্থনগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ২০১২ সালে পুরুলিয়ার পাথুরে মাটিতে পাট চাষের মতো সাহসী পদক্ষেপের কান্ডারি ছিলেন। তিনিই এই আলোচনা সভার মুখ্য উপস্থাপক। এছাড়াও রাজ্য প্রাণী ও মৎস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পুর্ণেন্দু বিশ্বাস, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অসিত চক্রবর্তী, কেন্দ্রীয় পাট ও তন্তু গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তা প্রাণগোবিন্দ কর্মকার এবং ইকার্ডার (ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইন ড্রাই এরিয়াস) দক্ষিণ এশিয়া এবং চিনের রিজিওন্যাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আশুতোষ সরকার থাকছেন এই আলোচনাসভায়।
আলোচনায় উন্নত শস্য দানা, চাষ পরবর্তী পদক্ষেপ, গাছ বাঁচানোর আধুনিক ও সহজ প্রক্রিয়া, পরিবেশ বান্ধব কৃষি ব্যবস্থা-সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপরে আলোচনা হবে। যে কৃষি গবেষকেরা চাষিদের সঙ্গে মাঠে-ঘাটে ঘুরে ঘুরে তাঁদের গবেষণাপত্র তৈরি করেছেন, তাঁদের কেউ কেউ প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার কথা বলবেন। বিকাশবাবু বলেন, ‘‘যে যে বিষয়গুলি নিয়ে এ রাজ্যে ইতিমধ্যেই কাজ হয়েছে বা পথিকৃৎ হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ সেগুলোর দিকেও আলোকপাত করা হবে। তবে অন্য রাজ্যেও যেখানে এই মানানসই কৃষি ব্যবস্থা ও বহুমুখী খামার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ হচ্ছে সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলিকে রোল মডেল করে অন্যরাও অনুসরণ করতে পারেন। এই আলোচনা সভা তারই পথ দেখাবে।’’