Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আত্মহত্যার চেষ্টা শিক্ষিকার

পোশাকে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা। বুধবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের এই ঘটনায় গুরুতর জখম ওই মহিলাকে প্রথমে চণ্ডীপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চণ্ডীপুর শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০৭
Share: Save:

পোশাকে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা। বুধবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের এই ঘটনায় গুরুতর জখম ওই মহিলাকে প্রথমে চণ্ডীপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই মহিলাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। জেলা হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন অবস্থায় ওই মহিলা জানিয়েছিলেন, বাবা ও জামাইবাবুর মানসিক অত্যচারের জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তবে পরিবারের তরফে এই দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

বছর বত্রিশের ওই স্কুল শিক্ষিকার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ন’বছর ধরে তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তাঁর বাবা রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ পদস্থ আধিকারিক, মা ভূপতিনগরের একটি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা, তাঁর দিদি ও জামাইবাবুও স্কুল শিক্ষক। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই ওই মহিলার জন্য পাত্রের খোঁজ চলছিল। ইতিমধ্যে ওই মহিলার ছোট বোনের বিয়ের ঠিক হয়ে যায়। এই ঘটনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। প্রায়ই বিয়ে না হওয়ার জন্য ওই মহিলা পরিবারের সদস্যদের দায়ী করতেন বলেও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। গত দু’দিন ধরে ওই মহিলাও স্কুলেও যাচ্ছিলেন না।

মেয়েটির পরিবার সূত্রে খবর, এ দিন সকালে ওই মহিলার মা চণ্ডীপুর বাজারে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন মেয়েটির বাবা ও বোন। সেই সময়ই কেরোসিন গায়ে ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই মহিলা। পোড়া গন্ধ পেয়ে বোন ছুটে আসে। বোনের চিত্‌কারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে হাসপাতালে নিয়ে যান ওই মহিলাকে। হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন অবস্থায় ওই মহিলা জানান, “আমি শিক্ষকতা করতে চাইতাম না। আমাকে জোর করে স্কুলে পড়াতে যেতে বাধ্য করা হত। আমার উর্পাজনের টাকাও নিয়ে নেওয়া হত। বিয়ের জন্য বললে গায়ের রঙ কালো বলে খোঁটা দেওয়া হত। পুজোর সময় জামাইবাবু মারধর করে।”

তবে মানসিক অত্যচারের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে মেয়েটির পরিবার। মেয়েটির মা বলেন, “বিয়ের জন্য মেয়ের দাবিমতো কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। অনেকের সঙ্গে কথাও হয়। এর মধ্যে ছোট মেয়ের বিয়ে ঠিক হওয়ায় হয়তো ও কিছুটা ভেঙে পড়েছিল। তবে ওর বাবা-জামাইবাবু অত্যচার করেনি।” এক পড়শির কথায়, “ওর বিয়ের জন্য পরিবারের তরফে চেষ্টা করা হয়েছে। তবে মেয়েটি কিছুটা মানসিক অবসাদে ভুগছিল। আমাদের ধারণা তার জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

suicide attempt primary school teacher chandipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE