Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

শহিদ-স্মরণ, পুজো দিয়ে মনোনয়ন জমা শুভেন্দুর

সাত বছর আগে নন্দীগ্রামের জমিরক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ‘সাড়া জাগানো’ উত্থান হয়েছিল তাঁর। নন্দীগ্রাম-পর্বকে অন্যতম বিষয় করে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়ে ছিলেন বিপুল ব্যবধানে। ’১৪-র লোকসভা নির্বাচনেও তিনি সরাসরি ফিরলেন সেই নন্দীগ্রামে। জমিরক্ষা আন্দোলনের শহিদ-তর্পনের পর মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।

তমলুকে শোভাযাত্রা করে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী।  ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

তমলুকে শোভাযাত্রা করে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩৮
Share: Save:

সাত বছর আগে নন্দীগ্রামের জমিরক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ‘সাড়া জাগানো’ উত্থান হয়েছিল তাঁর। নন্দীগ্রাম-পর্বকে অন্যতম বিষয় করে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়ে ছিলেন বিপুল ব্যবধানে। ’১৪-র লোকসভা নির্বাচনেও তিনি সরাসরি ফিরলেন সেই নন্দীগ্রামে। জমিরক্ষা আন্দোলনের শহিদ-তর্পনের পর মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।

সোমবার দুপুরে তমলুকে জেলাশাসকের অফিসে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে আসার আগে রবিবার রাতেই নন্দীগ্রামের তাঁরা চাঁদবাড় ও সামসাবাদ গ্রামের দু’টি মাজারে প্রার্থনা করেন শুভেন্দুবাবু। সোমবার সকালে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ার ভাঙাবেড়া সেতুর কাছে জমিরক্ষা আন্দোলনের শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত শহিদবেদী ও শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর সোনাচুড়া গ্রামে সিংহবাহিনী মন্দিরে পুজো দিতে যান। সেখানে স্থানীয় মহিলারা তাঁকে শঙ্খধ্বনি ও ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান। সিংহবাহিনীর মন্দিরে পূজো দেওয়ার পর নন্দীগ্রাম থেকে বেলা ১২টা নাগাদ এসে পৌঁছান তমলুক শহরের মানিকতলায় মানিকপীরের দরগায়। সেখানে প্রার্থনা করার পর তমলুক শহরের রাজ ময়দানে এসে পৌঁছান এই তৃণমূল প্রার্থী।

ততক্ষণে সেখানে জড়ো হয়েছিলেন দলের কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক। ট্যাবলো, রণপা বাহিনী-সহ সুসজ্জিত তৃণমূল কর্মীদের মাঝে একটি হুড খোলা গাড়িতে চেপে শোভাযাত্রায় যোগ দেন শুভেন্দুবাবু। সঙ্গে ছিলেন জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, নন্দীগ্রামের বিধায়ক ফিরোজা বিবি, হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহা, নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে প্রমুখ। তমলুক শহরের রাজ ময়দান থেকে জেলখানা মোড়, পৌরসভা অফিস, স্টিমারঘাট হয়ে বর্গভীমা মন্দিরে পৌঁছান। সেখানে পুস্পাঞ্জলি দিয়ে মন্দির সংলগ্ন শিব মন্দিরে প্রণাম করেন। শহরের ভিতরের মূল রাস্তা দিয়ে শোভাযাত্রা যাওয়ার সময় রাস্তার পাশের বাড়ির লোকজন ফুল ছড়িয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান।

ক্লিক করুন...

শোভাযাত্রা বর্গভীমা মন্দিরের সামনে থাকার সময় নৃত্য পরিবেশন করে শিশুশিল্পীরা। এরপর ফের শোভাযাত্রায় যোগ দিয়ে শহরের বড়বাজার হয়ে বাদামতলা এলাকায় একটি শিবমন্দিরে গিয়ে নিজেই আরতি করেন শুভেন্দুবাবু। এরপর শোভাযাত্রা শহরের রাখাল মেমোরিয়াল ময়দানের গেটে কাছে পৌঁছানোর সময় একটি মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করে শিশুশিল্পীরা। শোভাযাত্রা জেলা হাসপাতালের গেটের কাছে আসলে শুভেন্দুবাবুকে সংবর্ধনাও দেন তৃণমূল সমর্থকরা।

দুপুর দেড়টা নাগাদ জেলাশাসকের অফিসের সামনে পৌঁছোন তমলুকের প্রার্থী। এরপরই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্যের কাছে মনোনয়ন জমা দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন পূর্ব পাঁশকুড়ার বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী, নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে, চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয়কান্তি ভট্টাচার্য।

তবে পুত্রের মনোনয়নের আগেই জেলা প্রশাসনিক অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন পিতা তথা কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী শিশির অধিকারী। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অভিজিৎ মৈত্রের কাছে মনোনয়ন জমা দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন ভগবানপুরের বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি, খেজুরির বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল, উত্তর কাঁথির বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারী প্রমুখ।

ক্লিক করুন...

একই দিনে পিতা-পুত্র, শিশির-শুভেন্দু অধিকারীর মনোনয়ন ঘিরে জমজমাট ছিল তমলুক শহর। মনোনয়ন জমার পর শুভেন্দুবাবু বলেন, “রবিবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নন্দীগ্রামের শহীদদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে সাংসদ হয়েছিলাম। আমার রাজনৈতিক সংগ্রামে যাঁদের সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে সেই নন্দীগ্রামের শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলাম।”

শুভেন্দুবাবু বলেন, “তমলুকের মানুষ বরাবরই জাতীয়বাদী সংগ্রামের শরিক হয়েছেন। নন্দীগ্রামের জমিরক্ষা আন্দোলনকেও সমর্থন করেছেন। সেই এলাকার সাংসদ হিসেবে গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ করেছি। আশাকরি এ বারও মানুষ আমাকেই সমর্থন করবেন।” শিশিরবাবু বলেন, “আমরা যে সব উন্নয়নের কাজ করেছি, তাতেই মানুষ আমাদের সমর্থন করবেন। আমরা চাই আরও উন্নয়ন, শান্তি আসুক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE