চলতি মরসুমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে রেকর্ড পরিমাণে বোরো চাষ হয়েছিল। এবার ফলনের পরিমাণ বিগত বছরগুলিকে ছাপিয়ে গেল। এবছর ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি ৫৪ কুইন্টাল, যা বোরো চাষের ক্ষেত্রে খুবই উল্লেখযোগ্য। জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, অন্যান্য বছর সেচের কারণে বোরো চাষে ব্যাপক ক্ষতি সম্মুখীন হতেন চাষিরা। জলের অভাবে বীজতলা বা চারা লাগানোর পর খেতে ধানগাছ শুকিয়ে যেত। আর যে সব এলাকায় সেচ ব্যবস্থা ভাল, সেখানেও পোকামাকড়ের উপদ্রবে উৎপাদন ব্যাহত হত। কিন্তু গত বছর প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় এবছর সেচের কোনও সমস্যা হয়নি। অগভীর নলকূপ বা স্যালো থেকেও সহজেই জল উঠছিল। ফলে গোটা জেলাতে কোথাও চাষিরা এবার সেচের সমস্যায় পড়েননি। উল্টে পোকামাকড়ের উপদ্রবও কম হয়েছিল। ফলে ফলন হয়েছে ভালো।
গত বছর পরপর বন্যায় আমন ধানে জেলার বেশিরভাগ চাষিই কোনও ফসল পায়নি। একাধিকবার ধানের চারা লাগিয়েও ধানখেত ডুবে যাওয়ায় সব পচে গিয়েছিল। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার চাষিরা বোরো চাষে মন দিয়েছিলেন। মোট ১ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। জেলায় গত বছর সর্বাধিক বৃষ্টিও হয়েছিল (১৯২০ মিলিমিটার যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৪০০ মিলিমিটারের বেশি)। পুকুর, ডোবা, একাধিক খাল ও নদীতে বাঁধ দিয়ে সেই জল ধরে রাখা হয়েছিল। তাই এবার কালবৈশাখীর বৃষ্টি স্বাভাবিক না হলেও সেচের কোনও সমস্যা হয়নি।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে বোরো চাষ হয়েছিল ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ২১০ হেক্টর। ফলন হয়েছিল প্রতি হেক্টরে ৪৬.৫৭ ক্যুইন্টাল। ২০১১-’১২-তে ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে ফলন হয়েছিল হেক্টর প্রতি ৫২ ক্যুইন্টাল। ২০১০-’১১ আর্থিক বছরে চাষ হয়েছিল ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৯০ হেক্টর। ফলন হয়েছিল প্রতি হেক্টরে ৫৩ ক্যুইন্টাল। উল্লেখ্য,২০১০-’১১ ফলন ভালো হলেও মোট চাষের তুলনায় চলতি মরসুমের চেয়ে তা ছিল অনেক কম। আর ২০০৯-’১০ আর্থিক বছরে ১ লক্ষ ৪২ হাজার ৬১১ হেক্টর চাষে ফলন হয়েছিল প্রতি হেক্টরে ৪৬.৭৩ ক্যুইন্টাল। শুধু বোরো চাষই নয়, তিল চাষেও অনান্য বছরের তুলনায় এবার গোটা জেলায় ভালো ফলন হয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের সহ-আধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস অধিকারী বলেন,“এ বছর বোরো চাষে প্রতি হেক্টরে ৫৪ ক্যুইন্টাল ফলন হয়েছে। সম্প্রতি ঝড় জলে কিছু এলাকায় ধান নষ্ট হয়েছিল। না হলে আরও বেশি হতো।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy