রাজ্যে যে পাঁচটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ গড়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছে ঝাড়গ্রামও। কিন্তু কলেজ গড়ার জন্য জমি দেখা হয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে অনেকটা দূরে। অথচ এই হাসপাতালই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তরিত হবে। ফলে, প্রশ্ন থাকছেই।
প্রশাসন সূত্রের খবর, কলেজের জন্য শহরে উপযুক্ত জমি মিলছে না। কারণ, ঝাড়গ্রাম নতুন জেলা ঘোষণা হওয়ার পরে বিভিন্ন দফতর, সরকারি ভবন ও সরকারি প্রকল্পের জন্য জমি বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। চিকিত্সক মহলের বক্তব্য, মেডিক্যাল কলেজ আর হাসপাতাল কাছাকাছি থাকা প্রয়োজন। কারণ, এমবিবিএস এবং এমএস বা এমডি পড়ার প্র্যাকটিক্যাল পাঠের মূল কেন্দ্র হল হাসপাতাল। মেডিক্যাল পড়ুয়াদের ‘বেড সাইড ক্লিনিক’ শিক্ষণ ব্যবস্থায় হাসপাতাল কাছাকাছি না থাকলে খুবই সমস্যা হয়। ইন্টার্নশিপের সময়ও যখন তখন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের ডাক পড়ে। দূরে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হলে রাতবিরেতে পড়ুয়া ও শিক্ষানবিশ চিকিত্সকদের হাসপাতালে পৌঁছতে সমস্যা হতে পারে। যদিও ঝাড়গ্রামের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝির যুক্তি, “হাসপাতালের কাছে জমি মিলছে না। হাসপাতাল থেকে সাত-আট কিমির মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ হলে খুব সমস্যার
কথা নয়।”
কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতি তিনটি সংসদ এলাকা মিলে একটি করে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করা হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা কেন্দ্রের ঘোষণা। মেডিক্যাল কলেজের জন্য আমাদের কাছ থেকে জায়গার নাম জানতে চাওয়া হয়েছিল। মেদিনীপুর যে হেতু বড় জেলা, তাই তমলুক ও ঝাড়গ্রাম দু’টি জায়গার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।’’
নিয়ম অনুযায়ী ২০ একর জায়গায় মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরি হয়। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালটি রয়েছে প্রায় সাড়ে ৯ একর জায়গা জুড়ে। মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসটি গড়ার জন্য আরও প্রায় এগারো একর জমি প্রয়োজন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত সচিব শুভাঞ্জন দাস এক চিঠিতে জেলাশাসককে দ্রুত জমি চিহ্নিত করে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই চিঠির প্রেক্ষিতে চারটি জমি দেখে স্বাস্থ্য দফতরে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন জেলাশাসক।
গত বুধবার ওই চিঠি আসার পরেই জমি দেখা শুরু হয়। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুন, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও ব্লক ভূমি আধিকারিক মনতোষ মণ্ডলরা চারটি জমি দেখেন। ভূমি দফতরের হেফাজতে থাকা ওই জমির মধ্যে একটি জমি ঝাড়গ্রাম হাসপাতাল থেকে ৯ কিমি দূরে বাঁশতলা স্টেশনের কাছে। আর একটি জমি শহর থেকে ৬ কিমি দূরে কাশিয়া এলাকায়। অন্য একটি জমি শহর থেকে ৭ কিমি দূরে জারালাটা গ্রামের কাছে। শহরের মধ্যে একটি জমি অবশ্য দেখা হয়েছে, সেটি আকাশমণি মাঠের কাছে। জেলাশাসক আর অর্জুন বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল যৌথ পরিদর্শনের পরে মেডিক্যাল কলেজের জন্য চূড়ান্ত জায়গা ঠিক করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy