ঠিকাদারির কাজ চেয়ে জিন্দল প্রকল্পের এক কর্তাকে ফোনে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ধৃত ঠিকাদার শেখ নাসিম আখতারের ফের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হল। নাসিম পুলিশ হেফাজতেই ছিলেন। দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ ফুরনোর পর বুধবার ফের তাঁকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে ফের সাতদিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। শুনানির পর ধৃতকে তিনদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সরকারপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব বলেন, “ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য মিলেছে। নতুন নামও মিলেছে।”
রবিবার নাসিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের বাড়ি শালবনির সুন্দ্রায়। উত্তম সরকার নামে জিন্দল প্রকল্পের এক কর্তা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। উত্তমবাবু প্রকল্পের সিনিয়র ম্যানেজার। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। সেই সূত্রেই শালবনির এই ঠিকাদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, ‘দুবাই’ থেকে উত্তমবাবুকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। শালবনি প্রকল্পে কাজের বরাত চাওয়া হয়। বরাত না- মিললে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, হুমকি- ফোনের আগে-পরে একই নম্বর থেকে দুবাই থেকে ফোন এসেছে পেশায় ঠিকাদার নাসিমের কাছে। পুলিশ মনে করছে, নাসিমই ওই হুমকি- ফোন করিয়েছে। দুবাইয়ের কলগুলো সাধারণ কল ছিল না। ছিল নেটকল। এ ক্ষেত্রে সফটওয়্যারের সাহায্য নেওয়া হয়। ধৃত নাসিম তৃণমূল- ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকায় পরিচিত। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন, ধৃতের সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই। পুলিশ মনে করছে, ঘটনার সঙ্গে একটা বড় চক্র যুক্ত রয়েছে।
শালবনিতে এখন জিন্দলদের প্রস্তাবিত সিমেন্ট প্রকল্পের কাজ চলছে। ২০১৭ সালে সিমেন্ট প্রকল্প চালু হওয়ার কথা। ৮০০ কোটি টাকা লগ্নি করে এই সিমেন্ট কারখানা করা হচ্ছে। সিমেন্ট কারখানার পরে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও রং কারখানা গড়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। কারখানা থেকে বছরে ২৪ লক্ষ টন সিমেন্ট উৎপাদিত হওয়ার কথা। প্রকল্পের শিলান্যাসে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, কাজের বরাত দেওয়া নিয়ে জিন্দলদের উপর কোনও চাপ দেওয়া যাবে না। জোরজুলুম করা যাবে না। তারপরও এই ঘটনা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “দুবাই থেকে হুমকি-ফোন করা হয়েছে। এটা বড়সড় অপরাধ। মামলাটি সব দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তদন্ত চলছে। তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy