Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Jhargram

Arrest: দুই মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা, গ্রেফতার

ঘটনাচক্রে, ২৪ ঘণ্টা আগেই মন্ত্রিসভার রদবদলে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের যে দু’জনের নাম বিশেষ চর্চায় রয়েছে তাঁরা হলেন— মানস ও বিরবাহা।

ধৃত যুবককে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

ধৃত যুবককে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

রঞ্জন পাল
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২২ ০৮:১২
Share: Save:

পুলিশে চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক যুবক। অভিযোগ, ধৃত নিজেকে কখনও মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার নিরাপত্তা কর্মী, আবার কখনও প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিত। কখনও আবার বলত সে সিআইএসএফ জওয়ান।

ঘটনাচক্রে, ২৪ ঘণ্টা আগেই মন্ত্রিসভার রদবদলে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের যে দু’জনের নাম বিশেষ চর্চায় রয়েছে তাঁরা হলেন— মানস ও বিরবাহা। এ বার তাঁদের নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়েছে। মানস অবশ্য বলছেন, অভিযোগকারী তাঁকে ফোনে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তারপরে তিনি বিরবাহা ও পুলিশের উচ্চ মহলে সবটা জানান। মানস ও বিরবাহা দু’জনেরই দাবি, ধৃতের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ নেই।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম নাম তপন মাহাতো। তবে বছর ছাব্বিশের ওই যুবক কখনও নিজেকে রাজুকুমার, কখনও রাজকুমার নামে পরিচয় দিত। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ি থানার পাঠানমারি গ্রামের ওই বাসিন্দার থেকে সিআইএসএফের ভুয়ো নথিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গত ২৫ জুন লালগড় থানার বাঁধগোড়া গ্রামের বাসিন্দা দেবু মাহাতো ঝাড়গ্রাম থানায় তপনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। তারপরে মামলা রুজু করে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ। চাকরি প্রার্থীর ‘টোপ’ দিয়ে বুধবার ঝাড়গ্রাম শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার ধৃতকে ঝাড়গ্রামের সিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক তার ছয় দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডল আদালতে জানান, এই চক্রের সঙ্গে কারা কারা জড়িত তা জানার জন্য ধৃতকে জেরা করা প্রয়োজন। ঝাড়গ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ সরকার বলেন, ‘‘তদন্তে জানতে পেরেছি, ওই যুবক সিআইএসএফের কর্মী নয়। সে আরও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও শুনেছি। ধৃত কোনও বড় চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী দেবু বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। তিনি চাকরির চেষ্টা করছিলেন। এরমধ্যেই একজনের মারফত অভিযুক্তের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। এদিন ফোনে তিনি বলেন, ‘‘পাশের গ্রামের এক যুবকের মারফত সাত-আট মাস ফোনে পরিচয় হয়েছিল তপনের সঙ্গে। সে নিজেকে মানস ভুঁইয়ার নিরাপত্তা রক্ষী বলে পরিচয় দিয়েছিল। কখনও বলত নবান্নে আছে। কখনও বলত দিল্লি যাচ্ছে কাজের জন্য। মানস ভুঁইয়ার নাম করে বলায় বিশ্বাস করেছিলাম।’’ তিনি জানান, প্রথমে তাঁকে স্পেশাল হোমগার্ড ও পরে কনস্টেবলে চাকরি করে দেবে বলেছিল। তার জন্য সাড়ে তিন লক্ষ টাকা চেয়েছিল। গত ৭ ফ্রেবুয়ারি এক লক্ষ টাকা দেন তিনি। তখন তপন জানায় বাকি টাকা দিলে তবেই চাকরি হবে। এরপরে সন্দেহ হওয়ায় মন্ত্রী মানসকে সরাসরি ফোন করেন দেবু।

মানস বলছেন, ‘‘লালগড়ের ছেলেটি আমাকে ফোনে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তারপর বিরবাহা ও পুলিশ সুপারকে জানিয়েছিলাম। আমার নিরাপত্তা রক্ষী ভাঙিয়ে পরিচয় দিয়েছে। বিকৃত মস্তিকের কিছু লোক ও ছেলে এরকম মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছে। পুলিশ সুপার দেড়-দুমাস ধরে তদন্ত করে ধরতে পেরেছেন। ছেলেটার কাছে সিআইএসএফের কার্ড ও পোশাক ছিল।’’ মানসের দাবি, ‘‘আমায় ভাঙিয়ে খাচ্ছে। এ সব মিথ্যা ঘটনা। আমার সঙ্গে ছেলেটির কোনও পরিচয় নেই। এরকম কোনও প্ররোচনার ফাঁদে কেউ যেন না পড়েন।’’

বিরবাহার কথায়, ‘‘মানস জেঠু বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কয়েকদিন আগে জানতে পারলাম ওই যুবক আরও কয়েক জনের থেকেও টাকা নিয়েছে। আমরা কখনই টাকার লেনদেন করে চাকরির পক্ষপাতিত্ব করি না। বার বার সতর্ক করার পরেও যাঁরা টাকা দিয়েছেন, তাঁদের সতর্ক হতে বলব।’’ কিছু লোকজন বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলে সেটাকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণা করছে বলেও জানিয়েছেন বিরবাহা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram Fraud arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE