Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Contai Municipality

অনড় সুবল, অনাস্থার তোড়জোড়

এমন পরিস্থিতিতে সুবলকে পদ থেকে সরাতে গিয়ে তৃণমূলের বাকি পুর প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি বৈঠক করেন।

পুরসভায় সুবল মান্না।

পুরসভায় সুবল মান্না। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:০৬
Share: Save:

রাজ্য নেতৃত্বের 'হুইপ' জারির পরে কেটে গিয়েছে ৭২ ঘণ্টা। কাঁথির পুরপ্রধান পদ থেকে সুবল মান্নাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।। কিন্তু নিজের কৃতকর্মের জন্য দলের কাছে ক্ষমা চেয়ে পুরপ্রধান পদে অনড় হয়ে বসেছিলেন সুবল।

এ বার তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য দলের পুর প্রতিনিধিদের সবুজ সঙ্কেত দিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। যদিও এ বিষয়ে সুবলের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে একাধিক বার ফোন এবং মেসেজ করা হলেও তিনি জবাব দেননি। শুক্রবার বিকেলে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে, কাঁথির পুরপ্রধান সুবল মান্নার বিরুদ্ধে দলের বাকি পুর প্রতিনিধিরা অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারবেন। সেই মতো প্রশাসনিক প্রস্তুতি শীর্ষ নেতৃত্ব শুরু করতে বলেছেন।

গোটা পরিস্থিতির জন্য শাসক দলকে কটাক্ষ করে শুক্রবার মন্দারমণিতে আয়োজিত এক কর্মী সভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘কাঁথি পুরসভায় ওদের নিজেদের মধ্যে গুঁতোগুঁতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ওরা বলছে পুরপ্রধানকে পদত্যাগ করতে হবে। আর পুরপ্রধান বলছেন, ‘পদত্যাগ করিব না। যা করার আছে করে নাও’।’’

শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযুষ কান্তি পণ্ডার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল নিয়ে ওঁর ভাবার কোনও দরকার নেই। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশক্রমে তৃণমূল পরিবার চলে। সুবল মান্না দলের ভাবাবেগের ক্ষতি করেছে বলে তাঁকে প্রথমে শোকজ এবং তার পর ইস্তফা দিতে বলা হয়েছিল। দু’টোর কোনওটা তিনি না করায় রাজ্য নেতৃত্ব তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, গত ২৩ ডিসেম্বর কাঁথির এক অনুষ্ঠানে বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করে তাঁকে নিজের গুরুদেব বলে সম্বোধন করেন সুবল। তার পরেই জটিলতার সূত্রপাত। প্রথমে জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাঁকে শো-কজ় করা হয়। নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তিনি জবাব দেননি। পরে বুধবার দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সংবাদ মাধ্যমের সামনে বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন, সুবল মান্নাকে কাঁথির পুর প্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত তাঁকে ইস্তফা দিতে হবে। যদিও সেই নির্দেশের পরেও শুক্রবারেও পুর প্রধানের পদ সামলেছেন সুবল।

এমন পরিস্থিতিতে সুবলকে পদ থেকে সরাতে গিয়ে তৃণমূলের বাকি পুর প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি বৈঠক করেন। সেখানে পীযূষকান্তি পণ্ডাও ছিলেন। সমস্ত কাউন্সিলর বর্তমান পুর প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়ে জেলা সভাপতির কাছে লিখিত আবেদন জানান। তারপর জেলা নেতৃত্বে তরফে পুর প্রতিনিধিদের ওই আবেদন পত্র রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর কাছে এ দিন রাতেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে পীযূষকে ডেকে পাঠানো হয় তৃণমূল ভবনে। সেখানে সুবলের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়। আইনি দিক খতিয়ে দেখার পর আগামী সোমবার কাঁথির মহকুমাশাসক শৌভিক ভট্টাচার্য এবং পুরপ্রধান সুবল মান্নার কাছে পুর প্রতিনিধিরা অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেবেন বলে দলীয়সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Contai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE