কোনও স্কুলে অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা এখনও শুরু হয়নি। কোনও স্কুলে শুরু হলেও শেষ হতে ঢের দেরি। অথচ এ সবের তোয়াক্কা না করেই নবম শ্রেণির সরকারি পাঠ্য বই পৌঁছে গিয়েছে স্কুলে। শুধু তাই নয়, অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের হাতেও পৌঁছে গিয়েছে সেই সব বই। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়ে যাওয়ার পরেও স্কুলে সরকরি বই পৌঁছয়নি এমন উদাহরণ রয়েছে এর আগে। যার ফলে পঠনপাঠন শুরু হলে সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা। সেখানে শিক্ষাবর্ষ শেষ হওয়ার আগেই পড়ুয়াদের কাছে পরবর্তী শ্রেণির সরকারি পাঠ্যবই চলে যাওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরাই।
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, পড়ুয়াদের হাতে সরকারি পাঠ্যপুস্তক সময়ে পৌঁছে দিতে প্রতি বছর ২ জানুয়ারি ‘বুক ডে’ হিসেবে পালন করা হয়। উদ্দেশ্য, ওই দিন সব পড়ুয়ার হাতে বই তুলে দেওয়া। সেই হিসেবে ‘বুক ডে’-র আগে পড়ুয়াদের হাতে সরকারি বই পৌঁছে গেল কী ভাবে, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। আগে থেকে বই দেওয়ায় সমস্যাও দেখা দিতে পারে বলে শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন। অষ্টম শ্রেণিতে কেউ অনুত্তীর্ণ হলে তার কাছে পৌঁছ যাওয়া নবন শ্রেণির বইয়ের পরিণতি কী হবে, উঠছে সেই প্রশ্নও। এত আগে থেকে বই পেয়ে যাওয়ায় পড়ুয়ারা কতটা যত্নে রাখতে পারবে সে প্রশ্নও তুলেছেন অনেক অভিভাবক।
স্কুল কর্তৃপক্ষের অবশ্য যুক্তি, স্কুলের ৩০ শতাংশ পড়ুয়া মেধাবী। সচেতন অভিভাবকেরাই চেয়েছিলেন আগামী শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই পড়ুয়াদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়া হোক। এক অভিভাবক জানান, এর আগে দেখেছি শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর দু-তিন মাস ক্লাস হয়ে যাওয়ার পরেও ছাত্রছাত্রীদের কাছে সরকারি বই পৌঁছয়নি। সেই কারণেই হয়তো অনেক অভিভাবক আগে বই চেয়েছিলেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কণা মণ্ডলের যুক্তি, ‘‘বই পড়ুয়াদের প্রাপ্য। তা ছাড়া অভিভাবকরা চেয়েছিলেন বলেই পড়ুয়াদের স্বার্থ দেখে গুরুত্বপূর্ণ বই দিয়েছি। তা ছাড়া এবার বর্ষাকালে বই পৌঁছনোয় সমস্যা হয়েছিল। অনেক বই জলে ভিজে গিয়েছিল। সে সব কথা ভেবেই কিছু বই আগে দেওয়া হয়েছে। বাকি বই ‘বুক ডে’-তেই দেওয়া হবে।’’ অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের কেউ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে তার কাছে থাকা নবম শ্রেণির বইয়ের কী হবে? এর উত্তরে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে ওই পড়ুয়াকে চিহ্নিত করে তার কাছ থেকে বই ফেরত চাওয়া হবে।’’
সুতাহাটা ব্লকের স্কুল পরিদর্শক অরবিন্দ চাউলিয়া বলেন, ‘‘পর্যায়ক্রমে বই আর খাতা আসায় আমরা তা ধাপে ধাপে সব স্কুলে পাঠিয়েছি। কিন্তু, কেন ‘বুক ডে’-র আগে ওই স্কুলে পড়ুয়াদের সরকারি বই দেওয়া হল, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য মধুরিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতরের নির্দিষ্ট ‘বুক ডে’-তেই বই দেওয়ার নিয়ম। তবে, ঠিক কী ঘটেছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
শিক্ষক মহলের অভিযোগ, শিক্ষা দফতর এত আগে বই পাঠিয়ে দেওয়ায় স্কুলে সমস্যা হচ্ছে। কেন না, এত বই গুছিয়ে রাখার মতো উপযুক্ত জায়গা এবং পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। ফলে, বই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy