Advertisement
E-Paper

বিক্ষোভের জের, ফিরে আসতে হল তৃণমূল নেতাদের

নিকাশি সমস্যা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। গত ২৯ অগস্ট ডেবরার মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গোলমালের জেরে প্রাণ যায় এক ব্যক্তির। ঘটনার এক সপ্তাহ পর মৃতের পরিবারের কাছে সমবেদনা জানাতে গিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়লেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আশিস রায়, স্থানীয় বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি, জেলা পরিষদের সেচ কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৪৪

নিকাশি সমস্যা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। গত ২৯ অগস্ট ডেবরার মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গোলমালের জেরে প্রাণ যায় এক ব্যক্তির। ঘটনার এক সপ্তাহ পর মৃতের পরিবারের কাছে সমবেদনা জানাতে গিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়লেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আশিস রায়, স্থানীয় বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি, জেলা পরিষদের সেচ কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। রবিবার সকালে মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ত্রিলোচনপুরে স্থানীয়দের বিক্ষোভের জেরে ফিরে যেতে বাধ্য হন নেতারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মলিহাটি ও গোলগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উপর দিয়ে গিয়েছে পূর্ত দফতরের রাস্তা। রাস্তার পূর্ব অংশের তুলনায় পশ্চিম অংশ কিছুটা উঁচু। অভিযোগ, রাস্তার পশ্চিম অংশের নিকাশি নালার জল বয়ে যায় পূর্ব অংশের উপর দিয়ে। প্রশাসনকে সমস্যার কথা জানিয়েও কাজ হয়নি বলে স্থানীয়দের একাংশের দাবি। ঘটনা ঘিরে আগেও সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই অংশের বাসিন্দা। কয়েক দিন টানা ভারী বৃষ্টিতে পূর্ত দফতরের রাস্তার গ্রামীণ বাঁধে ফাটল ধরে। ফলে পশ্চিম অংশের জল বয়ে গিয়ে পূর্ব অংশের চাষের ক্ষতি হচ্ছিল। ২৯ অগস্ট নিচু অংশের বাসিন্দারা নিজেরা বাঁধ মেরামতি করতে উদ্যোগী হয়। অভিযোগ, সেই সময় বাঁধ সংস্কারের কাজে বাধা দেয় পশ্চিম দিকের বাসিন্দারা। সেই সময় দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে।

ঘটনায় উভয়পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ১১জনকে গ্রেফতারও করে। নিচু এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোলমালে আশিসবাবুর ইন্ধন ছিল। আশিসবাবুর অনুগামী নিরঞ্জন মণ্ডল, বরুন মান্না-সহ ১০ জন প্রত্যক্ষভাবে এই খুনের ঘটনায় যুক্ত বলে তাদের দাবি। অভিযোগ, নিরঞ্জনবাবুর নামে অভিযোগ দায়ের হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি। অথচ উঁচু এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে নিচু এলাকার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে পুলিশ। বাদ যায়নি মৃতের ভাই নেপাল সিংহের নামও। তাছাড়া ঘটনার পরেও মৃতের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি আশিসবাবু। সেই নিয়ে ত্রিলোচনপুরের স্থানীয়দের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই।

এ দিন সকালে আশিসবাবুকে সঙ্গে নিয়েই গ্রামে যান নির্মলবাবুরা। তাঁরা মৃতের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে বাদল সিংহের বাড়িতেও যান। বাদলের স্ত্রী বিজলিদেবী বাপেরবাড়িতে। এ দিন বাড়িতে ছিলেন তাঁর দুই বোন কাজল সিংহ, বিজল সিংহ ও মা লক্ষ্মী সিংহ। নির্মলবাবু তাঁদের সঙ্গে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এত দিন কেউ তাঁদের বাড়িতে না আসায় নিজেদের ক্ষোভের কথাও নির্মলবাবুদের জানান মৃতের পরিবারের লোকেরা। সেই সময় আশিসবাবু বলে ওঠেন, “বাদল আমার কথা শুনলে এই দিন দেখতে হত না।” এই কথা শুনেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে গ্রামবাসীরা। শুরু হয় বিক্ষোভ। মৃতের খুড়তুতো ভাই মন্টু সিংহ বলেন, “এত দিন আশিস রায় কোথায় ছিলন? এখন এসে উনি আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। আশিস রায়ের উস্কানিতে ওঁর লোকেরা আমার দাদাকে খুন করেছে। কিন্তু পুলিশ তাদের ধরছে না। তাই আমাদের লোকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে।”

স্থানীয় তৃণমূল সমর্থকদেরও একাংশকেও এ দিন বিক্ষোভে দেখা যায়। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ফিরে আসতে হয় নির্মলবাবু-সহ দলীয় নেতাদের। যদিও আশিসবাবু বলেন, ‘‘বাম আমল থেকে এই নিকাশি সমস্যা রয়েছে। আমি বহুবার দু’দিকের লোকের সঙ্গে বসে সমাধানের পথ খুঁজেছি। কিন্তু নিচু এলাকার লোকেদের আরও সহনশীল হওয়া উচিত ছিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ঘটনার দিন ওরা প্রথমে লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে গিয়েছিল। বাদল সেই ঘটনায় বলি হয়। ঘটনায় আমার কোনও ভূমিকা ছিল না।’’ বিক্ষোভে তৃণমূলের একাংশের থাকা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আর এখন তো সবাই তৃণমূল। তাই বিক্ষোভে তৃণমূলের লোক থাকাটা স্বাভাবিক।’’

এ দিন ঘটনার পরে যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি রাধাকান্তবাবু। তবে নির্মলবাবু বলেন, “আমরা বাদল সিংহের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি। কিন্তু ওই দুই এলাকার লোকেদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকায় ওরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। খুনের ঘটনায় পুলিশকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”

Agitation Trinamool leader police Kharagpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy