Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Application Cancelled in BEd Colleges

মেলেনি অনুমোদন, চিন্তায় বিএড পড়ুয়ারা

জুলাই থেকে বিএড কলেজগুলিতে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। কলেজগুলি আগে অফলাইনে ছাত্র ভর্তি করে। পরে অনলাইনে ভর্তির লিঙ্ক খুললে সেখানে আনুষ্ঠানিক ভাবে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দিগন্ত মান্না
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:২১
Share: Save:

বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশে সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২৮টি বিএড কলেজের ছাত্র ভর্তি করার অনুমোদন বাতিল হয়েছে। এক সঙ্গে এতগুলি কলেজের অনুমোদন বাতিল হওয়ায় শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত জেলার হাজার হাজার হবু শিক্ষক। আপাতত আদালতের রায়ের দিকেই তাকিয়ে পড়ুয়া থেকে শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

জুলাই থেকে বিএড কলেজগুলিতে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। কলেজগুলি আগে অফলাইনে ছাত্র ভর্তি করে। পরে অনলাইনে ভর্তির লিঙ্ক খুললে সেখানে আনুষ্ঠানিক ভাবে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কিন্তু একাধিক অনিয়মের অভিযোগে, গত মাসে রাজ্যের ২৫৩টি বেসরকারি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল করে বিএড বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের ২৮টি বিএড কলেজ রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত ওই কলেজগুলিতে ভর্তির অনলাইন লিঙ্ক ওয়েবসাইটে উপলব্ধ নয়। অথচ কলেজগুলি আগেই অফলাইনে ছাত্র ভর্তি করে নিয়েছিল। এখন ছাত্র ভর্তির অনুমোদন বাতিল হয়ে যাওয়ায় জেলার কয়েক হাজার বিএড পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কোলাঘাটের বাসিন্দা অয়ন্তিকা সর্দার বলেন, ‘‘একটি বিএড কলেজে ২০২৩-২৫ শিক্ষাবর্ষে অফলাইনে ভর্তি হয়েছিলাম। পরে জানলাম ওই কলেজের অনুমোদন বাতিল হয়ে গিয়েছে।জীবন থেকে একটা বছর নষ্ট হয়ে গেল। আগে জানলে ভর্তি হতাম না। জানি নাকী হবে।"

শর্তপূরণ করে চলতি বছরেই যাতে ছাত্র ভর্তির অনুমোদন মিলে, আপাতত সে জন্য কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বেসরকারি বিএড কলেজের মালিকরা। প্রভাকর জানা নামে একটি বিএড কলেজের মালিক বলেন, ‘‘দমকলের ছাড়পত্র না থাকায় অনেক কলেজের অনুমোদন বাতিল হয়ে গিয়েছে। কলেজগুলি সমস্ত শর্ত পূরণ করে তার হার্ডকপি ইতিমধ্যে জমা দিয়েছে। আমরা আশাবাদী বিএড বিশ্ববিদ্যালয় খুব শীঘ্রই ছাত্র ভর্তির অনুমোদনফিরিয়ে দেবে।’’

মূলত কী কী অভিযোগে ওই সমস্ত বিএড কলেজের অনুমোদনবাতিল হল? জানা গিয়েছে, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত, শিক্ষকদের বেতনের নথিতে অসঙ্গতি এবং দমকলের ছাড়পত্র না মেলার মতো অভিযোগ থাকায় বিএড বিশ্ববিদ্যালয় ওই পদক্ষেপ করেছে।এনসিটিই'র নিয়ম অনুযায়ী, একটি বিএড কলেজে ৫০ জন পড়ুয়া পিছু আট জন শিক্ষক রাখতে হবে। একজন বিএড কলেজের শিক্ষকের মাসিক বেতন হবে ২১ হাজার ৬০০ টাকা। আর দমকলের ছাড়পত্র পেতে গেলে প্রতিটি কলেজের ছাদে ন্যূনতম ১০ হাজার লিটারে জলের ট্যাঙ্ক বসাতে হবে। কলেজে রাখতে হবে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প। এছাড়া, কলেজের সামনে একটি জলাধার রাখতেই হবে।

অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরের ৩৫টি বিএড কলেজের মধ্যে ২৮টি বিএড কলেজের অনুমোদন আটকে গিয়েছে দমকলের ছাড়পত্র না থাকায়। ২৮টি কলেজের মধ্যে কিছু কলেজে ছাড় শিক্ষক অনুপাত এবং শিক্ষকদের বেতনের নথি নিয়েও অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ। অনুমোদন বাতিল হয়ে যাওয়ায় বিএড কলেজের শিক্ষকদের চাকরি নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। দেবাশিস পট্টনায়েক নামে এক বিএড শিক্ষক বলেন, ‘‘ছাত্র ভর্তির অনুমোদন না মেলায় আমাদের চাকরিও অনিশ্চয়তার মুখে। ছাত্র না থাকলে কলেজ তো আর আমাদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেবে না। কলেজগুলি সমস্ত শর্ত পূরণ করতে রাজি।বিএড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক এটাই আমাদের অনুরোধ। হাইকোর্টের রায়ের দিকেও তাকিয়ে রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE