রাস্তায় নৌকা। ঘাটালের আড়গোড়াতে কৌশিক সাঁতরার তোলা ছবি।
বৃষ্টি ও জলাধারগুলি থেকে জল ছাড়ায় ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। ঘাটাল শহরের ১২টি ওয়ার্ডও জল থইথই। ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পাঁচটিও জলের তলায়। বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে স্থানীয়রা। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকিরঞ্জন প্রধান বলেন, “ঘাটাল শহর-সহ ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েত এলাকা জলমগ্ন। চন্দ্রকোনা-১ ও ২ ব্লকের পরিস্থিতিও একই। জল ক্রমে বেড়েই চলছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। নৌকো ও শুকনো খাবার বিলি করা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরাও সতর্ক রয়েছেন।”
মহকুমাশাসক বলেন, “সব সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পযার্প্ত ত্রাণ, নৌকো, উদ্ধারকারী দল, ফ্লাড শেল্টারের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘চন্দ্রকোনায় দু’টি ফ্লাড শেল্টার খোলা হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, একাধিক কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের নম্বর, ০৩২২৫-২৫৫১৪৫, ০৪৫, ০৯৬। মহকুমা সেচ আধিকারিক উত্তম হাজরা বলেন, “দুর্বল নদী বাঁধগুলির অবস্থার দিকে নজর রাখা হয়েছে। বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। আমরা সতর্ক রয়েছি।”
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “বৃষ্টি কমেছে। তবে ডিভিসি, মুকুটমণিপুর-সহ বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ায় আমরা উদ্বিগ্ন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জলাধারগুলি থেকে জল ছাড়লে ও বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় বৃষ্টি হলে ঘাটাল জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এখন শিলাবতী, ঝুমি, কংসাবতী-সহ অন্যান্য নদীর জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, সোমবার গভীর রাত থেকেই ঘাটাল শহরের আড়গোড়া, শুকচন্দ্রপুর, গম্ভীরনগর, চাউলি, রামচন্দ্রপুর, দুধেরবাঁধ, সিংহপুর-সহ ১২টি ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জলে ডুবেছে শহরের বিভিন্ন রাস্তাও। যাতায়াতের জন্য এখন নৌকোই ভরসা। পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষ বলেন, “যাত্রী পরিবহণের জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে শহরে মোট ২০টি নৌকো দেওয়া হয়েছে। ত্রিপলও বিলি করা হয়েছে।” ক্ষীরপাই পুরসভার ২ নম্বর-সহ চারটি ওয়ার্ডেও জল ঢুকেছে। মঙ্গলবার এলাকা পরিদর্শন করেন আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। ক্ষীরপাই পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকও করেন সাংসদ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল ব্লকের দেওয়ানচক, আজবনগর, মনসুকা-১ ও ২, ইড়পালা, সুলতানপুর পঞ্চায়েত এলাকার বহু এলাকা জলের তলায়। চন্দ্রকোনা-১ ও ২ ব্লকের পাঁচটি অঞ্চলের প্রায় তিরিশটি গ্রাম জলমগ্ন। চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বসনছড়া অঞ্চলের যদুপুরে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভাঙায় আরও ২০টি গ্রামে জল ঢুকেছে। সোমবার বিকেল থেকেই ক্ষীরপাই সংলগ্ন কেঠিয়া চাতাল জলে ডুবে। জলের স্রোত বাড়তে থাকায় ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কে সোমবার গভীর রাত থেকে যান চলাচল বন্ধ। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কের দু’নম্বর চাতালে উড়ালপুল চালু হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিকই রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy