Advertisement
১৮ মে ২০২৪

খোঁড়াখুঁড়িতে হতশ্রী রাস্তায় হোঁচট

কোথাও দীর্ঘদিন রাস্তা ভাঙা, আবার কোথাও দায়সারা ভাবে সিমেন্ট লেপেই রাস্তা সারানো হচ্ছে। টেলিফোন লাইনের কাজ, বাড়ির জলের সংযোগ— প্রায়ই নানা কাজে খড়্গপুর শহরে বিভিন্ন রাস্তা ভাঙা হয়। যদিও ভাঙার পর সেই রাস্তা সারাতে দেরি হয় বলে অভিযোগ।

গর্ত সামলেই পথ চলা, ইন্দা-জফলা রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র।

গর্ত সামলেই পথ চলা, ইন্দা-জফলা রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র।

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৬ ০২:৩৯
Share: Save:

কোথাও দীর্ঘদিন রাস্তা ভাঙা, আবার কোথাও দায়সারা ভাবে সিমেন্ট লেপেই রাস্তা সারানো হচ্ছে।

টেলিফোন লাইনের কাজ, বাড়ির জলের সংযোগ— প্রায়ই নানা কাজে খড়্গপুর শহরে বিভিন্ন রাস্তা ভাঙা হয়। যদিও ভাঙার পর সেই রাস্তা সারাতে দেরি হয় বলে অভিযোগ। আর যদি বা সারানো হল, কয়েক দিন যেতে না যেতেই ফের ভাঙতে শুরু করে রাস্তা।

শহরবাসীর বক্তব্য, প্রয়োজনে রাস্তা ভাঙতে হতেই পারে। কিন্তু খোঁড়ার পরে তা আর না সারানোয় বাড়ছে সমস্যা। বর্ষায় জল-কাদায় বেরনোই দায়। সংস্কারের অভাবে বেহাল খরিদা রেলগেট- মন্দিরতলা, বিলাসমোড়-পদ্মপুকুর রাস্তা। ৭, ৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে বিস্তৃত এই রাস্তা শেষ কবে সংস্কার হয়েছিল মনে করতে পারছেন না স্থানীয়রা। রাস্তা সারানোর পরিবর্তে প্রায়ই জলের পাইপ লাইন, কেবল লাইন বসানোর জন্য রাস্তা ভাঙা হয়। ভাঙা অংশে সিমেন্ট ঢেলে দিয়েই দায়সারা কাজ করা হয় বলে অভিযোগ। খরিদার বাসিন্দা সন্দীপ দাস বলেন, “খরিদা রেলগেট থেকে পদ্মপুকুর পর্যন্ত এই রাস্তা দিয়ে বহু মানুষের যাতায়াত। বহুবার পাইপ লাইন বসানোর কাজ হওয়ায় রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘মিলন মন্দিরের কাছে কয়েক মাস ধরে কালভার্ট ভেঙে রয়েছে। চলাই দায়। বিষয়টি পুরসভার দেখা উচিত।”

শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিধানপল্লি এলাকায় পুরপ্রধানের বাড়ি যাওয়ার রাস্তার হালও খারাপ। অভিযোগ, বহুদিন আগে ওই রাস্তায় টাইম কলের পাইপ লাইনের কাজ হয়েছিল। তারপরে কোনও মতে রাস্তা মেরামতি হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই ফের রাস্তা ভেঙে এবড়োখেবড়ো হয়ে গিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জমছে জল। এলাকার বাসিন্দা শুভাশিস রায়চৌধুরী বলেন, “রাস্তাঘাটের সংস্কার হচ্ছে না। খোদ পুরপ্রধানের বাড়ি যাওয়ার রাস্তারও জীর্ণ দশা। পাইপ লাইন বসানোর পর রাস্তা ঠিক মতো না সারানোয় এই অবস্থা।’’

সোনামুখী, তালবাগিচা, বিদ্যাসাগরপুর, ছত্তীসপাড়ার রাস্তা সংস্কারে উদাসীন পুর কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে অভিযোগ। বিদ্যাসাগরপুরের বাসিন্দা সরকারি কর্মী সোমা সেনগুপ্ত বলেন, “ইন্দা মোড় থেকে ওয়ালিপুর যাওয়ার রাস্তা দীর্ঘদিন বেহাল। বারবার জলের পাইপ লাইন, টেলিফোনের লাইন বসানোর জন্য রাস্তা রাস্তা ভাঙা হয়। অথচ নিয়মিত রাস্তা সারানোর বালাই নেই।”

পুরসভা সূত্রে খবর, কাউন্সিলররাই সাধারণত পুরসভার বরাদ্দ অর্থে এই সব রাস্তা সংস্কারের কাজ করে থাকেন। যদিও শহরের অধিকাংশ রাস্তা একাধিক ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে বিস্তৃত। ফলে কোনও একজন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সক্রিয় হলেও বাকিদের উদাসীনতায় কাজ আটকে থাকে।

শহরবাসীর দাবি, পুরসভার নজরদারিতে কেন্দ্রীয় ভাবে রাস্তাগুলি সংস্কার করা হোক। নজর রাখা হোক রাস্তার কাজের মানের দিকেও। এ বিষয়ে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “শহরে নতুন করে দ্বিতীয় জল প্রকল্পের পাইপ বসেছে। অনেক জায়গায় রাস্তা মেরামতি করা হয়েছে। কিছুক্ষেত্রে পাইপ লাইন পরীক্ষার জন্য এখনও মেরামতির কাজ হয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাস্তা মেরামতির কাজ এজেন্সির মাধ্যমে হয়। সেখানে কাউন্সিলরের নজরদারি প্রয়োজন। এর পরে যাতে মেরামতির কাজ ভাল করে হয় ও বেহাল রাস্তার সংস্কার করা হয় সে বিষয়ে কাউন্সিলরদের বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road construction passenger
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE