সরব: স্কুলের বারান্দায় বিক্ষুব্ধ ছাত্রেরা। নিজস্ব চিত্র
একাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসেছিল কলা বিভাগের ১০০জন। তার মধ্যে ২৭জনই অকৃতকার্য হয়েছে। তাদের পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে শনিবার খড়্গপুরের সিলভার জুবিলি হাইস্কুলে চলল বিক্ষোভ। প্রধান শিক্ষকের অফিসঘরের সামনে একাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখায়। তাদের বক্তব্য, স্কুলের পঠনপাঠন পদ্ধতি যথাযথ নয় বলেই একই বিভাগে এতজন অনুত্তীর্ণ হয়েছে। সকলকে পাশ করিয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ দিতে হবে বলেও দাবি তোলে তারা। স্কুল কর্তৃপক্ষ তা না মানায় প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও পর্যন্ত করা হয়।
এক সময়ে রেলশহরে প্রথম সারির পাঁচটি স্কুলের মধ্যে আসত এই সিলভার জুবিলি হাইস্কুল। কিন্তু ক্রমশ ফল খারাপ হতে শুরু করে। গত কয়েক বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে এই স্কুলের পড়ুয়াদের ফল খুবই খারাপ। একাদশ শ্রেণিতেও বছর বছর অকৃতকার্য ছাত্রের সংখ্যা বাড়ছে। তার উপর এ বার শুধু কলা বিভাগেই ২৭জন অকৃতকার্য হওয়ায় শোরগোল পড়েছে। একাদশ শ্রেণির য়ে সব পড়ুয়া সর্বোচ্চ তিনটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে, স্কুলের শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের দ্বাদশ শ্রেণিতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ২৭জন তিনটিরও বেশি বিষয়ে পাশ নম্বর না পাওয়ায় তাদের দ্বাদশ শ্রেণিতে তোলা যায়নি বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
এরপরই এ দিন সকলকে পাশ করানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ঘণ্টাখানেক অফিসে বন্দি হয়ে থাকতে হয় প্রধান শিক্ষককে। পরে পরিচালন সমিতির সদস্যরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। বিক্ষোভে সামিল চয়ন গিরি বলছিল, “স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কলা বিভাগের পড়ুয়ারা সেই গুরুত্ব পায় না। শিক্ষকদের বেশিরভাগই গৃহশিক্ষকতায় ব্যস্ত। আমাদের পরিবারে সঙ্গতি নেই বলে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। প্রধান শিক্ষককে জানালে ধমক খেতে হয়। বাধ্য হয়েই বিক্ষোভ।”
স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে শিক্ষক সঙ্কটের কথা বলছেন। এখন এই স্কুলে ৭জন শিক্ষকের অভাব রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকের কলা বিভাগে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসের শিক্ষক নেই। হিন্দি মাধ্যমের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা হিন্দিভাষী শিক্ষকও নেই। সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রভাস ভট্টাচার্য বলছিলেন, “শিক্ষকের অভাব, পড়ুয়াদের স্কুলে না আসার প্রবণতা, পড়ুয়াদের স্মার্টফোনে ডুবে থাকা ইত্যাদি কারণে স্কুলের মান নেমে যাচ্ছে।’’ মাধ্যমিকে কম নম্বর পেলেও একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে নিজেদের স্কুলের পড়ুয়াদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নিয়মে সমস্যা বাড়ছে।
তবে এতজন অকৃতকার্য হওয়ার দায় নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ নারাজ। প্রধান শিক্ষক সিতিকন্ঠ দে বলেন, “যারা অকৃতকার্য হয়েছে, তারা একেবারে পড়াশোনা করে না। সারাদিন মোবাইল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। শিক্ষকের অভাব সত্ত্বেও আমরা কিন্তু চেষ্টায় ত্রুটি রাখি না।’’ অকৃতকার্য পড়ুয়াদের কোনও ভাবেই দ্বাদশ শ্রেণিতে তোলা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy