ছবি এঁকে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়াস। নিজস্ব চিত্র।
হাতির সঙ্গে সেলফি তুলছে এক যুবক— কার্টুন! ছবির নীচে লেখা, ‘হাতির সাথে সেলফি নয়, পদে পদে মৃত্যুভয়’।
আবার কয়েকজন হাতিকে লক্ষ করে তির ছুড়ছে— সেটাও কার্টুন। তার নীচে লেখা ‘ওহে বীর, ছুঁড়ো না তির, দণ্ড বড়ই গম্ভীর’। কার্টুন হলেও আদতে এ সবই সত্য ঘটনা। কার্টুনকে হাতিয়ার করে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টামাত্র।
বন দফতর সূত্রের দাবি, লোকালয়ে হাতি এলে কিছু মানুষ নিজেরাই বিপদ ডেকে আনেন। হাতির সঙ্গে নিজস্বী তুলতে গিয়ে, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় হাতির লেজ টেনে ধরে প্রাণ হারানোর নজিরও রয়েছে। বন্যপ্রাণকে উত্যক্ত করা হলে, তারা ছেড়ে কথা বলবে না। কিন্তু পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং লাগিয়ে, মাইকে প্রচার করেও লাভ হয়নি। তাই এ বার কার্টুন আর ছড়া নিয়ে একেবারে স্কুলে স্কুলে হাজির হচ্ছে ঝাড়গ্রাম বন দফতর। ১৪-২০ জুলাই বনমহোৎসবের সপ্তাহ জুড়ে চলবে বুনো হাতির বিপদ সম্পর্কে ছোটদের সচেতন করার কর্মসূচি। বন দফতরের এক কর্তার দাবি, স্কুল-কলেজে, গ্রামেগঞ্জে কার্টুন-ছড়ায় হোর্ডিং-ব্যানার দিয়ে হাতি-সচেতনার এমন উদ্যোগ এই প্রথম।
বন দফতর বারবার অনুরোধ করেছে, লোকালয়ে হাতিরা এলে বাসিন্দাদের যেন সংযত আচরণ করেন। বনকর্মী ও হুলাপার্টির সঙ্গে সহযোগিতা করার আবেদনও জানানো হয়। কিন্তু বাস্তবে তেমন হয় না। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, “বাসিন্দাদের একাংশকে কিছুতেই সচেতন করা যাচ্ছে না। তাই এ বার স্কুল ও কলেজে সেই বার্তা দেওয়া হবে। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের রাস্তায়ও কার্টুন ছবি-ছড়ার হোর্ডিং দেওয়া হবে।”
ঝাড়গ্রামের এডিএফও সমীর মজুমদারের পরিকল্পনায় কার্টুন ছবিগুলি এঁকেছেন ঝাড়গ্রামের দুই চিত্রশিল্পী সৌরভ ধবলদেব ও উপল পাহাড়ি। কার্টুনের পাশে সমীরবাবুর ভাবনায় দু’লাইনের ছড়া।
বন দফতর সূত্রের খবর, গত বছর ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের এলাকায় হাতির হানায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ৮৫ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। এ জন্য বন দফতরকে ১৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে। এ বছর চলতি মরসুমে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের এলাকায় হাতির হানায় এখনও মৃত্যুর ঘটনা নেই। তবে হাতির সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়ে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন কয়েকজন যুবক। তাড়া খেয়ে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন ২ জন। ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) বাসবরাজ হলেইচ্চি জানান, বনমহোৎসবে একটি ট্যাবলো ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় পরিক্রমা করবে। সেখানেও গাছপালা ও বন্যপ্রাণ হাতিদের নিয়ে থাকবে সচেতনতার বার্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy