নজরদারি বাড়াতে শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। যদিও গলিপথ এখনও অরক্ষিতই। পথবাতি না থাকায় সন্ধে হলেই অনেক গলিপথ অন্ধকারে ঢেকে যায়। শহরবাসীর অভিযোগ, সিসি ক্যামেরা থাকায় বড় রাস্তায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনা আগের থেকে কমেছে। রাত হলেই গলিপথগুলি দুষ্কর্মের আখড়ায় পরিণত হয়। পুলিশের টহলও চোখে পড়়ে না। দুষ্কর্মে রাশ টানতে এ বার শহরে ঢোকা ও বেরনোর মূল রাস্তাগুলিতেও সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিল খড়্গপুর পুরসভা।
আগেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। গত ৩ এপ্রিল শহরে এসে মুখ্যমন্ত্রী সিসি ক্যামেরায় নজরদারি ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন। যদিও সিসি ক্যামেরা বসানোর পরেও শহরের অপরাধ প্রবণতা কমানো যায়নি বলে অভিযোগ। অপরাধমূলক কাজ করার পরেও ধরা যাচ্ছে না দুষ্কৃতীদের। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রধান রাস্তাগুলিতে ক্যামেরা থাকায় দুষ্কৃতীরা এই পথ এড়িয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তে গলিপথগুলি ব্যবহার করেই দুষ্কৃতীরা শহর থেকে পালাচ্ছে। গলিপথে ক্যামেরা না থাকায় দুষ্কৃতীদের ধরা যাচ্ছে না। শহরে ঢোকা ও বেরনোর প্রধান রাস্তাগুলিতে ক্যামেরা বসালে সহজেই দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা যাবে বলে পুলিশের একাংশের মত।
গত ৫ মে সকালে খড়্গপুরের মালঞ্চয় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারের ভল্ট কেটে প্রায় ২২ লক্ষ লুঠের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় যুক্ত দুষ্কৃতীদের ধরতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিশ। যদিও দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা যায়নি বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের একাংশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা লুঠপাট চালিয়ে ঘুরপথে শহরের বাইরে পালানোয় তাদের ধরা যায়নি। তাই চৌরঙ্গি, নিমপুরা, সাহাচক, বারবেটিয়া, প্রেমবাজার, হাসপাতালের মতো শহরের প্রবেশপথগুলিতে নজরদারি চালাতে এ বার সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।
খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “বাইরের দুষ্কৃতীরা শহরে এসে দুষ্কর্ম করে চলে যায়। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরেও দেখা গিয়েছে, ক্যামেরা নেই এমন পথ ধরে দুষ্কৃতীরা ঢুকছে। তাই শহরের ছ’টি প্রবেশপথে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। থানা ও পুরসভার কন্ট্রোলরুমে সিসি ক্যামেরাগুলির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে।”
শুধু দুষ্কৃতী ধরতেই নয়, বেপরোয়া যান চলাচলে রাশ টানতেও ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। পুরপ্রধান প্রদীপবাবু বলেন, “এ বার উন্নতমানের সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। পুরনো প্রযুক্তির সিসি ক্যামেরা থেকে অনেক ব্যক্তির মুখ শনাক্ত করা যায় না। উন্নত মানের ক্যামেরা থাকলে সেই সমস্যা দূর হবে।’’ এরপরেও কি শহর নিরাপদ হবে? শহরের বাসিন্দা দীপঙ্কর দাস বলেন, “দুষ্কৃতীরা সব কিছু সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকে। তাই শহরের মূল প্রবেশপথগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসালেও দুষ্কৃতীরা মাঠপাড়া হয়ে জাতীয় সড়ক দিয়ে পালাবে। তাই এই সব রাস্তাতেও ক্যামেরায় নজরদারি চালানো প্রয়োজন।’’ ছ’টি প্রবেশপথ ছাড়া অন্যত্রও পরবর্তী কালে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে বলে
জানান পুরপ্রধান।