দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে রাশ টানতে মেদিনীপুর শহরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো শুরু হয়েছে। সুরক্ষা বাড়াতে এ বার জেলা পরিষদ চত্বরেও বসবে ক্যামেরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “জেলা পরিষদ চত্বরে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুতই জায়গা চূড়ান্ত হবে।”
কোন কোন জায়গায় ক্যামেরা বসানো হবে, সেই জায়গা দেখার দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে জেলা বাস্তুকারকে। কোথায় কোথায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো যায়, তার একটি প্রস্তাব জেলা সভাধিপতিকে দেবেন তিনি। সব দিক খতিয়ে দেখে সভাধিপতি সেই প্রস্তাব মঞ্জুর করবেন। উত্তরাদেবীর বক্তব্য, “কাজটি দ্রুতই হবে।”
মেদিনীপুরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে জেলা পরিষদ চত্বর একটি। এখানে বেশ কিছু সরকারি দফতর রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা কালেক্টরেটে সিসিটিভি ক্যামেরা বসেছে। জেলা স্বাস্থ্য ভবনেও বসেছে ক্যামেরা।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, আগে এই সব সরকারি অফিস চত্বরে মাঝেমধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটত। সিসিটিভি ক্যামেরা বসার পর চুরির ঘটনায় অনেকাংশে রাশ টানা গিয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। জেলার এক প্রশাসনিক আধিকারিকের কথায়, “একটি অফিস চত্বরে চুরির ঘটনা ঘটেছিল। পরে সিসিটিভি দেখে দুষ্কৃতীকে চিহ্নিতও করা হয়।”
মেদিনীপুরের সবথেকে বড় সভাকক্ষ প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদন রয়েছে জেলা পরিষদ চত্বরেই। রয়েছে পরিকল্পনা ভবন। এই ভবনে এমকেডিএ-সহ একাধিক দফতর রয়েছে। পাশাপাশি, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ, জেলা গ্রামীণ উন্নয়ন নিগম, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরও রয়েছে জেলা পরিষদ চত্বরে। রোজ প্রচুর মানুষ নানা কাজে এখানে আসেন। আগে জেলা পরিষদ চত্বরে চুরির ঘটনা ঘটলেও নজর ক্যামেরা না থাকায় অধিকাংশেরই কিনারা হয়নি।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি জেলা পরিষদের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পর্কিত স্থায়ী সমিতির বৈঠকে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থিত প্রায় সকলেই এ ব্যাপারে একমত হন। মেনে নেন, দুষ্কর্মের মোকাবিলায় জেলা পরিষদ চত্বরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো জরুরি। জেলা পরিষদের এক সদস্যের কথায়, “এখন অনেক জায়গাতেই সিসিটিভি ক্যামেরা বসছে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয়। সরকারি অফিস চত্বরেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। জেলা পরিষদ চত্বর খুব ছোট নয়। সুরক্ষার স্বার্থেই এখানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো উচিত।”
জেলা পরিষদ চত্বরে ঢোকার তিনটি গেট রয়েছে। এই চত্বরেই রয়েছে একাধিক সরকারি দফতর। সেখানে মাত্র চারটি জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত কেন? জেলা পরিষদের এক আধিকারিক বলেন, “এটা পরীক্ষামূলক ভাবে বসানো হচ্ছে। এমন জায়গায় ক্যামেরা বসানো হবে যাতে জেলা পরিষদ চত্বরে কারা ঢুকছেন, তা পরিষ্কার বোঝা যায়। পরে ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হবে।” তাঁর কথায়, “শুধু তো নজর ক্যামেরা বসিয়ে দিলেই হল না। তার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণও জরুরি। এ ক্ষেত্রে খরচের একটা ব্যাপার রয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যত্র বসানো হবে।”
জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, নজর ক্যামেরাগুলোর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি, জেলা পরিষদে নতুন ভাবে দু’টি গেটও নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য খরচ হতে পারে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy