Advertisement
০৬ মে ২০২৪

অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, তবু চলছে অ্যাম্বুল্যান্স

মুমূর্ষু রোগীকে রেফার করার সময় মানবিক কারণে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে বাধ্য হচ্ছেন সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিনই রেফার করা রোগীদের বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়ার সময় সরকারি হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০১:৫২
Share: Save:

অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়াই চলছে অ্যাম্বুল্যান্স!

মুমূর্ষু রোগীকে রেফার করার সময় মানবিক কারণে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে বাধ্য হচ্ছেন সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিনই রেফার করা রোগীদের বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়ার সময় সরকারি হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল-সহ জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এ ছবি খুবই পরিচিত।

রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মতো ঝাড়গ্রামে রোগী পরিবহণে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সই ভরসা। কিন্তু অভিযোগ, ওই সব অ্যাম্বুল্যান্সে নিজস্ব অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকে না। অথচ স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী যে কোনও অ্যাম্বুল্যান্সে দু’টি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখতে হবে। রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া এবং সিলিন্ডারের মিটার দেখার জন্য চালকের প্রশিক্ষণ থাকা জরুরি। কিন্তু ঝাড়গ্রামের বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সগুলিতে এসবের কোনও বালাই নেই।

সম্প্রতি নয়াগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে গুরুতর অসুস্থ একটি শিশুকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে ঝাড়গ্রামে পাঠানোর সময় মাঝপথে অক্সিজেন শেষ হয়ে গিয়েছিল। অথচ সিলিন্ডার গাড়িতে তোলার সময় চালক বুঝতেই পারেননি তাতে অক্সিজেন বেশি নেই। প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে শিশুটি মারা যায়। প্রতিদিন এ ভাবেই প্রশিক্ষণহীন চালকদের ভরসায় রোগীদের মেদিনীপুর কিংবা কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

ঝাড়গ্রাম জেলা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, ‘‘সঙ্কটজনক রোগীদের মেদিনীপুর বা কলকাতায় রেফার করার সময় মানবিকতার খাতিরেই বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে সিলিন্ডার ফেরত দিতে দেরি করেন সংশ্লিষ্ট অ্যাম্বুল্যান্স-চালক। তাগাদা দিয়ে সিলিন্ডার আদায় করতে হয়। তা ছাড়া অধিকাংশ চালক রোগীকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার পরে সিলিন্ডারের মুখ বন্ধ করেন না। অযথা অক্সিজেনের অপচয় হয়।’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, রোগীদের স্থানান্তরিত করার সময় মানবিক কারণে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে গিয়ে মাঝে মধ্যে হাসপাতালেই সিলিন্ডার সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। ঝাড়গ্রামের একটি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক বলেন, “রোগীদের পরিজন, প্রভাবশালী মহলের চাপে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সগুলিতে সরকারি সিলিন্ডার তুলে দিতে হচ্ছে। তা ছাড়া অক্সিজেন ছাড়া মুমূর্ষু রোগীদের রেফার করাটাও অমানবিক।”

কেন সিলিন্ডার রাখেন না?

এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের উত্তর, “এলাকার বেশিরভাগ রোগী গরিব। তেলের খরচটুকু দিতেই তাঁরা হিমসিম খান। অনেকের পক্ষেই অক্সিজেনের জন্য বাড়তি খরচ দেওয়া সম্ভব হয় না। এ সব কারণেই আমরা নিজস্ব সিলিন্ডার রাখি না।” তবে দু’একটি অ্যাম্বুল্যান্সে নিজস্ব অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকলেও বেশির ভাগেরই ভরসা সরকারি হাসপাতাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE