Advertisement
E-Paper

দুর্নীতির নালিশ, প্রধানকে শো কজ করলেন বিডিও

তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ তিন কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন ওই পঞ্চায়েতেরই প্রাক্তন প্রধান। তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দাসপুর-১ ব্লকের বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ চারজনকে শো-কজ করলেন বিডিও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ০০:০০

তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ তিন কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন ওই পঞ্চায়েতেরই প্রাক্তন প্রধান। তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দাসপুর-১ ব্লকের বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ চারজনকে শো-কজ করলেন বিডিও।

চলতি মাসেই বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের প্রধান কোহিনুর খাতুন-সহ তিন কর্মীর বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে লিখিতভাবে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধান কাজল সামন্ত। তদন্তের পর প্রধান কোহিনুর খাতুন, পঞ্চায়েত কর্মী (ভিএলই) রামপদ ভুঁইয়া, নির্বাহী আধিকারিক শান্তিপদ ঘোষ ও নির্মাণ সহায়ক সিদ্ধার্থ মজুমদারকে শো-কজ করা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।

বিডিও ভাস্কর রায় বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে। তাই শো-কজ করা হয়েছে।” বিডিও বলেন, “আজ, বুধবার তাঁদের শুনানিতে ডাকা হয়েছে। শো-কজের উত্তর ও শুনানির রিপোর্ট জেলাশাসককে পাঠিয়ে দেব।” তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ সরব হওয়ায় অস্বস্তিতে শাসকদলের ব্লক নেতৃত্ব। যদিও দলের ব্লক সভাপতি সুকুমার পাত্র বলছেন, “প্রশাসন তদন্ত করছে। এতে দল কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না।”

অভিযোগটি ঠিক কী? ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ২০১৪ সালে বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের চককৃষ্ণবাটি গ্রামে একশো দিনের প্রকল্পে একটি রাস্তা তৈরির জন্য ১ লক্ষ ৭২ হাজার ১৫৭ টাকা বরাদ্দ হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ওই বছরের ১০ জুলাই ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া হয়েছিল। একই প্রকল্পে ফের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ২০১৫ সালের ২৬ জুন ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৪২৪ টাকা দেওয়া হয়। একই কাজের জন্য দু’দফায় ওই ঠিকাদারকে দু’লক্ষ ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

আরও অভিযোগ, চলতি আর্থিক বছরে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের দক্ষ শ্রমিকদের মজুরির টাকা পঞ্চায়েত কর্মী রামপদবাবুর স্ত্রী সাগরিকা ভুঁইয়া, প্রধানের স্বামী সইদুল ইসলাম ও প্রধানের নিজস্ব স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর (সুবজ সাথী) অ্যাকাউন্টে মোট ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা জমা করা হয়েছে।

তৃণমূলের স্থানীয় নেতা তথা প্রাক্তন প্রধান কাজলবাবুর অভিযোগ, “প্রধান-সহ কয়েকজন কর্মীর মদতে সরকারি টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। দলের একটি গোষ্ঠীও এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এর সমস্ত প্রমাণ বিডিওকে দিয়েছি।”

তাঁর আরও প্রশ্ন, “পঞ্চায়েতের সরকারি অডিটে এ সব গরমিল তো ধরা পড়ার কথা। যদিও তা ধরা পড়েনি। বিডিও’র কাছে এ বিষয়ে তদন্ত করার আর্জি জানিয়েছি। জেলাশাসককেও বিষয়টি জানিয়েছি।”

১৯ আসনবিশিষ্ট বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের ১২টি আসন তৃণমূলের দখলে। বাকি সাতটি আসন সিপিএমের। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান সিংহভাগ দলীয় সদস্যদের কথায় গুরুত্ব না দিয়ে নিজের মতো করে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন। এর পিছনে দলেরও কিছু নেতার মদত রয়েছে।

পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের কাশেম আলিও বলছেন, “আমাদের হাতেও বহু তথ্য আছে। বিডিও তদন্ত শুরু করেছেন। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত প্রধান কোহিনুর খাতুন বলছেন, “আমি কোনও অন্যায় করিনি। প্রশাসন তদন্ত করুক।”

Corruption BDO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy